কানে চাপ থেকেই মনে চাপ। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
বেশি হট্টগোল বা জোর শব্দ থেকে যাঁরা যত দূরে থাকেন, তাঁদের মন তত ভাল থাকে। এমনটাই বলছেন চিকিৎসকরা। জোর শব্দের কারণে মস্তিষ্কের অন্তঃক্ষরা গ্রন্থির উপর চাপ পড়ে। তাতে অবসাদ বাড়তে থাকে। অর্থাৎ কানে শব্দের চাপ কম পড়লেই অবসাদ জাতীয় সমস্যা অনেকটাই কমে যায়।
কাজের সূত্রে যাঁদের দীর্ঘ ক্ষণ রাস্তায় বা অতিরিক্ত শব্দের মধ্যে কাটাতে, তাঁদের অনেকেই এই পেশায় বেশ কয়েক বছর কাটিয়ে ফেলার আর ভাল করে শুনতে পান না। অটোচালক, বাসের চালক বা কনডাকটর, ট্রাফিক পুলিশের অনেকেই এই সমস্যায় ভোগেন। পরিসংখ্যান বলছে, সারা বিশ্বের ২০ জনের মধ্যে ১ জন কম শোনেন। তার সবচেয়ে বড় কারণ শব্দদূষণ। শব্দদূষণ নিয়ে এখনই সচেতন না হলে ২০৫০ সালের মধ্যে উন্নয়নশীল দেশগুলিতে বধিরের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াবে ৯০০ মিলিয়নেরও বেশি।
পুজোর মরসুমে পটকার শব্দ, গাড়ির তীব্র আওয়াজ, নাগাড়ে ইয়ার ফোনে গান শুনলে শোনার ক্ষমতা তো কমেই, শরীরের অন্য সমস্যাও বাড়ে। শরীরের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যায়। এমনটাই বলছেন নাক কান গলা বিশেষজ্ঞ দ্বৈপায়ন মুখোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, কানের গভীরে অর্ধচন্দ্রাকার একটা ছোট্ট অংশ আছে। যা আমাদের শরীরের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। তাই কানের অসুখ হলে মাথা ঘুরে পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।
৬০ থেকে ৭০ ডেসিবেলের বেশি শব্দ শুনলে কানের ক্ষতি অবধারিত। ‘‘নাগাড়ে জোর শব্দ মস্তিষ্কের ভারসাম্য ওলটপালট করে দেয়। নাড়ির গতি অস্বাভাবিক হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা বাড়ে। এর সঙ্গে অন্তঃক্ষরা গ্রন্থির ওপর প্রভাব পড়ে। ফলস্বরূপ হরমোনের তারতম্য দেখা যায়। ঘুম, খিদে কমে গিয়ে মেজাজ বিগড়ে যায় ও মনোসংযোগ কমে যায়’’, বলছেন দ্বৈপায়ন। এতে অবসাদ বাড়তে থাকে। খিটখিটে মেজাজ হয়ে যায়। তাই শোনার ক্ষমতা ঠিক রাখতে নিজেদের মধ্যেও ধীর স্বরে কথা বলা উচিত।