Salad Recipes

স্যালাডে স্বাস্থ্যরক্ষা: কী ভাবে বানাবেন সেই পুষ্টিকর খাবার

বাঙালির চির পরিচিত কাঁচা সবুজ স্যালাড খেলে হবে না। প্রচুর ক্যালোরিতে ভরা ড্রেসিং মেশানো কায়দার স্যালাড তো আরওই নয়। তবে কী ভাবে বানাবেন পুষ্টিকর স্যালাড?

Advertisement
সুজাতা মুখোপাধ্যায়
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১৭:০৩
এক রঙের চেয়ে নানা রঙের স্যালাডে আছে বেশি গুণ।

এক রঙের চেয়ে নানা রঙের স্যালাডে আছে বেশি গুণ। ছবি: সংগৃহীত

ঋতু পরিবর্তনের সময়ে খাওয়াদাওয়ার দিকে বিশেষ যত্ন নেওয়া প্রয়োজন। কোভিড থাকুক বা না-থাকুক, সে কথা খেয়াল রাখাই ভাল। কিন্তু কী খাবেন? স্যালাড?

মরসুমি ফল-আনাজের স্যালাড খাওয়া সব সময়েই ভাল। তাতে শরীর যেমন পুষ্টি পায়, তেমন নানা রঙে ভরা সেই খাদ্য মনও ভাল করে। তাই বলে বাঙালির চির পরিচিত কাঁচা সবুজ স্যালাড খেলে হবে না। প্রচুর ক্যালোরিতে ভরা ড্রেসিং মেশানো কায়দার স্যালাড তো আরওই নয়। খেয়াল রাখা ভাল, বাজার চলতি ড্রেসিং যত মেশাবেন, স্যালাডের উপকারিতা ততই কমবে।

Advertisement

তবে কী খাবেন?

খেতে হবে ঘরে বানানো, হাল্কা ভাপানো স্যালাড। তাতে আনাজের উপকারিতা বজায় থাকবে। আবার হাল্কা গরমে পড়ে কেটে যাবে কীটনাশক, কৃত্রিম রঙের বিপদও৷ সিদ্ধ করার কিছু ক্ষণ আগে সেই শাক-আনাজ ভাল ভাবে ধুয়ে নিয়ে জলে ভিজিয়ে রাখলে আরও ভাল।

কী উপকার হবে স্যালাড খেলে?

শাক-সব্জি-ফলে রয়েছে নানা উপকারি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। যা পুষ্টি জুগিয়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়৷ ঋতু পরিবর্তনের সময়ে যে হাঁচি-কাশি হওয়ার প্রবণতা দেখা দেয়, তা নিয়ন্ত্রণে থাকে এর সাহায্যে। এখন অতিমারির সময়ে প্রতিরোধ ক্ষমতা আরওই প্রয়োজন। পাশাপাশি, কর্মক্ষমতাও বাড়ায় এই খাদ্য। সার্বিক পুষ্টি বাড়িয়ে পেট, ত্বক ও চোখের স্বাস্থ্য ভাল রাখে৷ চিকিৎসক সুকুমার মুখোপাধ্যায় বলছেন, “স্যালাড খাওয়ার অভ্যাস থাকলে ওজন বশে থাকে৷ কারণ, স্যালাড থেকে যেমন শরীরে কম ক্যালোরি ঢোকে, তেমন প্রচুর ফাইবার থাকায় বহুক্ষণ পেট ভর্তি রাখে এই খাদ্য৷’’

স্যালাড ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।

স্যালাড ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। ছবি: সংগৃহীত

কী ভাবে বানাবেন স্যালাড?

যে কোনও শাক-সব্জি-ফল ব্যবহার করতে পারেন। ব্রকোলি, বেলপেপার, মটরশুঁটি, বিনস্‌, টোম্যাটো, বিট, গাজর, পালং শাক, ভুট্টা — এই মরসুমে যা যা পাওয়া যায়, সবই রাখুন ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে৷ আনাজগুলি ছোট করে কেটে, ভাপিয়ে নিন৷ জল বেশি দেবে না। এমন ভাবে দিন, যাতে তা আনাজে শুষে নেয়৷ না হলে পুষ্টিগুণের অনেকটাই জলের সঙ্গে বেড়িয়ে যাবে৷

এ বার এক চামচ অলিভ অয়েলে অল্প আদা কুচি, কয়েক কোয়া রসুন নাড়াচাড়া করে নিন। সেই তেলেই সিদ্ধ করা আনাজ ফেলে অল্প নাড়াচাড়া করুন। মাঝেমধ্যে স্বাদ বদলাতে আদা-রসুনের সঙ্গে একটু পেঁয়াজ কুচিও দিতে পারেন। রোজ তেল খেতে না ইচ্ছে হলে ভাপানো আনাজে একটা গোটা পাতি লেবুর রস মেশান ভাল ভাবে। ব্যবহার করতে পারেন তেঁতুল জল কিংবা কমলা লেবুর রসও। স্বাদ মতো গোলমরিচ আর নুন ছড়িয়ে নিন।

কখনও ড্রেসিং ব্যবহারের ইচ্ছে হলে টক দই রাখুন বাড়িতে। মিশিয়ে নেবেন ভাপানো আনাজের সঙ্গে। অ্যাভোক্যাডো পাওয়া যায় এখন অনেক বাজারেই। তা ভাল ভাবে চটকে, অল্প সরষে মিশিয়ে নিতে পারেন। বেশ সুস্বাদু ড্রেসিং হবে তাতেও। স্যালাডে স্বাদ বদলের জন্য আনাজের উপর দিয়ে কাঠ বাদাম, সূর্যমুখীর বীজ, সিদ্ধ করা মুরগির মাংসের কুচি, রাজমা, ছোলা, কিংবা ডিম মেশান ইচ্ছেমতো৷ সুকুমারবাবু জানাচ্ছেন, সিদ্ধ রাজমা-ছোলা-বিনস্‌-মটরশুঁটি-ডিম-মুরগির মাংস বা সূর্যমুখীর বীজ খাবারে প্রোটিন ও উপকারি ফ্যাট জোগায়। খাবারে প্রোটিন বেশি থাকলে শরীরের ক্যালোরি খরচের হার বেড়ে যায়৷ সবে মিলে ওজন বশে থাকে৷

কোন সময়ে খাবেন?

স্যালাড কি শুধু সকালেই খাবেন? পুষ্টিবিদ বিজয়া আগরওয়াল জানিয়েছেন, যে কোনও সময়েই স্যালাড খাওয়া যায়৷ তবে দিনের প্রথম খাবারের উপরে সবচেয়ে জোর দেওয়া প্রয়োজন৷ পুষ্টিকর খাবার খাওয়া ভাল সেই সময়ে। তা হলে কাজ করার ক্ষমতা বাড়ে। তিনি বলছেন, ‘‘ইচ্ছে হলে একাধিক বারও স্যালাড খেতে পারেন৷ তাতে উপকারের পাল্লা আরও ভারী হয়।’’

আরও পড়ুন
Advertisement