বস্ আপনার উপর খুশি নন, বুঝবেন কী করে? ছবি: সংগৃহীত।
কর্মজীবনের উদ্বেগ, দুশ্চিন্তা থেকে রেহাই পাওয়া যায় না সহজে। যতই ব্যক্তিগত জীবন আর পেশার জগৎকে আলাদা রাখার চেষ্টা করুন না কেন, কর্মক্ষেত্রের উৎকণ্ঠার ছাপ ব্যক্তিগত ও সংসারিক জীবনে পড়বেই। সে দশটা-পাঁচটা অফিস হোক বা কর্পোরেট সেক্টরের টানা ন’-দশ ঘণ্টার শিফ্টে অফিসের কাজের পরিবেশ যদি শান্তিপূর্ণ না থাকে, তা হলে মানসিক চাপ বাড়তে বাধ্য। বিশেষ করে সহকর্মী ও বসের সঙ্গে সম্পর্কে যদি অবনতি হয়, তা হলে কাজের উৎসাহই হারিয়ে যেতে বসে। আপনার কাজে বস্ খুশি কি না অথবা তিনি কোনও কারণে অসন্তুষ্ট হয়েছেন কি না, তা বোঝার কিছু উপায় আছে। হয়তো কিছু দিন থেকেই লক্ষ্য করছেন আপনার প্রতি আপনার বসের ব্যবহারে অনেক বদল এসেছে। সেগুলি কতটা গভীর প্রভাব ফেলতে পারে তা বুঝে নিয়ে সেইমতো কাজ করা উচিত।
বসের ব্যবহারে কোন কোন বদল দেখে বুঝবেন তিনি বেজায় রেগে গিয়েছেন আপনার উপর—
১) আপনাকে কোনও গুরুত্বপূর্ণ কাজ বা অ্যাসাইনমেন্ট দিচ্ছেন না? আগে যে কাজগুলি করতে তিনি উৎসাহ দিতেন, এখন সেগুলিই করতে বারণ করে দিচ্ছেন।
২) অফিস মিটিং বা জরুরি আলোচনায় আপনাকে ডাকছেন না। আপনাকে বাদ দিয়েই মিটিং হচ্ছে।
৩) আপনি যে কাজে পারদর্শী সেই কাজটি আপনারই সহকর্মীকে দিয়ে দিচ্ছেন। আপনার ভাগের জরুরি কাজও পেয়ে যাচ্ছেন আপনারই সহকর্মীরা।
৪) ছোট ছোট ব্যাপারে আপনাকে দোষারোপ করছেন। সব কাজে খুঁত বার করার চেষ্টা করছেন। কখনও মেজাজ হারিয়ে আপনাকে দু’-চার কথা শুনিয়েও দিচ্ছেন।
৫) আপনি ভাল কাজ করলেও তিনি প্রশংসা করছেন না। দিনরাত পরিশ্রম করে আপনি কাজ করছেন, অতিরিক্ত সময়ও দিচ্ছেন, অথচ কিছুই তাঁর নজরে আসছে না। এক বারও আপনার কাজের জন্য বাহবা দিচ্ছেন না।
৬) কোনও কাজের কথা বললেই এড়িয়ে যাচ্ছেন। কাজ বিষয়ে আপনি কোনও মতামত দিতে গেলেও শুনছেন না।
৭) সকলের সামনে আপনার কাজ নিয়ে সমালোচনা করছেন। আপনার কাজের ধরন ও পদ্ধতি যে তাঁর পছন্দ নয়, তা বার বার বিভিন্ন কথায় বুঝিয়ে দিচ্ছেন। আপনার দক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন।
এইসব লক্ষণ দেখলে বুঝে যাবেন, যে আপনার প্রতি বিশ্বাস ও ভরসার জায়গা হারিয়ে ফেলেছেন বস্। সেই জায়গা ফিরে পাওয়ার চেষ্টা করতে হবে আপনাকেই। সরাসরি কথা বলুন তাঁর সঙ্গে। আপনার কাজের কোন কোন দিকগুলি তাঁর অপছন্দ, সে নিয়ে আলোচনা করুন। অফিসে আপনার আচরণ ও ব্যবহারে তিনি অসন্তুষ্ট হয়েছেন কি না, তা-ও জানার চেষ্টা করুন। তিনি যেমন কাজ পছন্দ করতেন, তেমন কিছু করে নিয়ে গিয়ে তাঁকে দেখান ও মতামত জানতে চান। আপনি যে চেষ্টা করছেন তা-ও বলুন। অনেক সময়ে কথোপকথনের অভাবেও ভুল বোঝাবুঝি তৈরি হতে পারে। তাই কথা বলেই বিষয়টি মিটিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করুন।