ছবি: শাটারস্টক।
ভাল থাকার জন্য সবার আগে পেটের স্বাস্থ্য ভাল রাখা জরুরি। তার কারণ, শরীরের যাবতীয় ক্রিয়া নিয়ন্ত্রিত হয় পেট থেকেই। শরীরকে চালানোর জন্য যে হৃৎপিণ্ড, মস্তিষ্ক এবং স্নায়ুতন্ত্র কাজ করে চলেছে, শরীর পুষ্টি না পেলে তার কোনওটিই নিজের কাজ যথাযথ ভাবে করতে পারবে না। আর শরীরকে পুষ্টি জোগানোর গুরুদায়িত্ব পেটের নানা প্রত্যঙ্গের। পাকস্থলী থেকে শুরু করে লিভার, অগ্ন্যাশয়, অন্ত্র— সেই দায়িত্ব পালন করে। তাই এদের স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখা দরকারি। পেটের স্বাস্থ্য ভাল রাখার জন্য প্রোবায়োটিক খাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা। অনেকেই প্রোবায়োটিক খাবারের সেরা উৎস ভাবেন দইকে। কিন্তু যাঁরা দই খেতে পারেন না, তাঁরা প্রাকৃতিক উপায়ে প্রোবায়োটিক পাবেন কী ভাবে? পুষ্টিবিদেরা বলছেন, এমন অনেক খাবার রয়েছে, যার প্রোবায়োটিক উপাদান দইয়ের থেকেও বেশি।
কেফির
ছবি: সংগৃহীত।
মজিয়ে নেওয়া দুধ। যা রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে, কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে এবং হজমের স্বাস্থ্য ভাল রাখতে সাহায্য করে। রাশিয়ায় এই পানীয় খাওয়ার ইতিহাস অন্তত ২০০০ বছরের পুরনো। তবে ইতিহাস বলছে ব্রোঞ্জ যুগের সময়েও কেফির খাওয়ার প্রচলন ছিল। পশ্চিম এশিয়া এবং ইউরোপের কিছু দেশে কয়েকশো বছর ধরে কেফির খাওয়ার রীতি আছে।
কিমচি
ছবি: সংগৃহীত।
কিমচি স্যালাডের কথা শুনে ফেলেছেন অনেকেই। কোরিয়ান এই নিরামিষ খাবার হয়তো চেখেও দেখেছেন কেউ কেউ। চেনা নানা সব্জিকে ল্যাকটোব্যাসিলাস ব্যাক্টেরিয়ায় জারিয়ে নিলে তা থেকে তৈরি হয় কিমচি। যা এক ধরনের স্যালাড। কিমচি হজমে সহায়ক তো বটেই, পাশপাশি পেটের জন্য উপকারী নতুন ধরনের মাইক্রোবিয়োম তৈরি করতেও সাহায্য করে। রোগ প্রতিরোধের ক্ষেত্রেও উপকারী কিমচি।
সাওয়রক্রউট
ছবি: সংগৃহীত।
বাঁধাকপিকে খুব সরু করে কেটে তাকে ল্যাকটিক অ্যাসিড ব্যাক্টেরিয়া এবং চিনি দিয়ে মজিয়ে তৈরি করা হয় সাওয়রক্রউট। স্বাদ কিছুটা টক। রোমে এই ধরনের বাঁধাকপি খাওয়ার চল ছিল বলে জানা যায় ইতিহাসে। তবে জার্মানি-সহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে, এমনকি, রাশিয়ার নানা দেশেও এই খাবার খাওয়ার চল রয়েছে।
মিসো
ছবি: সংগৃহীত।
সয়াবিনকে বেটে তাকে জারিয়ে নেওয়ার পরে তৈরি হয় মিসো। এটি জাপানি খাবার। সয়াবিনকে জারিয়ে নেওয়ার জন্য তারা ব্যবহার করে অ্যাসপারগিলাস ওরিজ়ে এবং বিভিন্ন ধরনের ব্যাক্টেরিয়া।
কম্বুচা
ছবি: সংগৃহীত।
এক ধরনের চা। তবে সেই চা বানানো হয় চা পাতা এবং চিনিকে একসঙ্গে একটি পাত্রে রেখে মজিয়ে। সেই প্রক্রিয়ায় উপকারী ব্যাক্টিরেয়া এবং ইস্ট ব্যবহার করা হয়।
টেম্পে
ছবি: সংগৃহীত।
দেখতে অনেকটা কেকের মতো। তৈরি করা হয় রান্নাকরা সয়াবিনকে মজিয়ে। ইন্দোনেশিয়ার এই খাবার বানানোর জন্য ব্যবহার করা হয় এক বিশষ ধরনের ছত্রাক। জারণ প্রক্রিয়ায় সয়াবিনের প্রোটিনের পরিমাণ যেমন বাড়ে, তেমনই বাড়ে ফাইবারের পরিমাণ এবং নানা রকমের ভিটামিনও। পৃথিবীর সর্বত্রই প্যাকেটজাত টেম্পে পাওয়া যায়। টেম্পে হজম করাও সহজ বলে জানাচ্ছেন পুষ্টিবিদেরা।
সল কাঢ়ি
ছবি: সংগৃহীত।
গোয়া-সহ ভারতের কোঙ্কন উপকূলে সর্বত্রই এই পানীয় খাওয়া হয়। এ ছাড়া মহারাষ্ট্রে, মেঙ্গালুরুতেও ওই পানীয় খাওয়া হয়। নারকেলের জলকে স্থানীয় কোকুম ফলের খোসা দিয়ে মজিয়ে বানানো হয়। হালকা বেগনিটে গোলাপি রঙের ওই পানীয় দেখতে যেমন ভাল, গুণেও উপকারী।