Project Cheetah

চিকিৎসকদের অভিজ্ঞতার অভাবে মরছে চিতা, আফ্রিকার বিশেষজ্ঞদের চিঠি সুপ্রিম কোর্টকে

গত সাড়ে চার মাসে কুনোর অরণ্যে মারা গিয়েছে ন’টি চিতা। তাদের মধ্যে দক্ষিণ আফ্রিকা এবং নামিবিয়া থেকে আনা পূর্ণবয়স্কদের পাশাপাশি রয়েছে, ভারতে জন্মানো তিনটি সদ্যোজাতও!

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৩ অগস্ট ২০২৩ ২২:৩৫
Wildlife experts from South Africa and Namibia sent letter to Supreme Court on cheetah deaths

কুনোয় আনা আফ্রিকার চিতা। — ফাইল চিত্র।

রেডিয়ো কলার থেকে সংক্রমণ কিংবা আবহাওয়ার পরিবর্তন নয়, মধ্যপ্রদেশের কুনো পালপুর জাতীয় উদ্যানে আফ্রিকা থেকে আনা চিতারা মারা পড়ছে মূলত পশু চিকিৎসকদের অনভিজ্ঞতার কারণে। সুপ্রিম কোর্টে পাঠানো দু’টি পৃথক রিপোর্টে এমনটাই জানিয়েছেন দক্ষিণ আফ্রিকা এবং নামিবিয়ার চিতা বিশেষজ্ঞেরা। চিতাদের পর পর মৃত্যুর কারণে স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে পাঠানো চিঠিতে উদ্বেগও প্রকাশ করা হয়েছে তাঁদের তরফে।

Advertisement

গত সাড়ে চার মাসে কুনোর অরণ্যে মারা গিয়েছে ন’টি চিতা। তাদের মধ্যে দক্ষিণ আফ্রিকা এবং নামিবিয়া থেকে আনা পূর্ণবয়স্কদের পাশাপাশি রয়েছে, ভারতে জন্মানো তিন সদ্যোজাত শাবকও। এই পরিস্থিতিতে বিষয়টিকে আত্ম অহঙ্কারের জায়গা থেকে না দেখে, চিতাদের মৃত্যুর কারণ খুঁজতেও বলেছে সুপ্রিম কোর্ট। এই আবহে, দক্ষিণ আফ্রিকার প্রিটোরিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পশুচিকিৎসা ও বন্যপ্রাণী বিভাগের বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক অ্যাড্রিয়ান টর্ডিফ এবং নামিবিয়ার চিতা সংরক্ষণ তহবিলের কার্যনির্বাহী প্রধান ল্যারি মার্ক জানিয়েছেন, নরেন্দ্র মোদী সরকারের চিতা সংরক্ষণ পদ্ধতিতে ত্রুটি রয়েছে। ওই রিপোর্ট দু’টিতে আরও কয়েক জন বন্যপ্রাণ বিশেষজ্ঞের সই রয়েছে।

প্রসঙ্গত, বুধবার সকালে জঙ্গলের ভিতর থেকে ধাত্রী নামের মহিলা চিতাটির দেহ উদ্ধার করা হয়। নামিবিয়া থেকে আনা চিতাটির মৃত্যুর কারণ এখনও সরকারি ভাবে জানানো হয়নি। প্রসঙ্গত, মধ্যপ্রদেশের কুনো পালপুর জাতীয় উদ্যানে পর পর চিতা-মৃত্যু নিয়ে দায়ের করা মামলার শুনানিতে গত ২০ জুলাই উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল বিচারপতি বিআর গাভাইয়ের নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির বেঞ্চ। অন্য কোনও অভয়ারণ্যের বদলে কেন আফ্রিকা থেকে আনা চিতাদের এক জায়গায় রাখা হয়েছে, সে প্রশ্নও তোলেন বিচারপতি গাভাই।

প্রসঙ্গত, আবেদনকারী পক্ষের অভিযোগ, রাজনৈতিক কারণেই বিজেপি শাসিত মধ্যপ্রদেশ থেকে কংগ্রেস শাসিত রাজস্থানে চিতা পাঠাতে চাইছে না মোদী সরকার। এ প্রসঙ্গে, বন্যপ্রাণ বিজ্ঞানী তথা মোদী সরকারের ‘ন্যাশনাল চিতা অ্যাকশন প্ল্যান’ (জাতীয় চিতা পুনঃস্থাপন কর্মসূচি)-এর সদ্য অপসারিত প্রধান যাদবেন্দ্রনাথ ঝালার সাম্প্রতিক মন্তব্যের কথাও শীর্ষ আদালতের সামনে তুলে ধরা হয়। বিজ্ঞানী ঝালা সম্প্রতি বলেছিলেন, ‘‘কুনো জাতীয় উদ্যানের যা পরিসর, সেখানে ৫০টি দূরের কথা ২০টি চিতার স্বচ্ছন্দ বসবাসেরও সুযোগ নেই। তা ছাড়া ওখানে চিতাদের শিকার করে খাওয়ার মতো হরিণ বা বনশুয়োরের অভাব রয়েছে।’’ সেই সঙ্গে তিনি বলেছিলেন, ‘‘কুনো জাতীয় উদ্যানের লাগোয়া রাজস্থানের মুকুন্দারা অভয়ারণ্যের কিছুটা অংশও চিতা পুনঃস্থাপন কেন্দ্রের অন্তর্গত করা প্রয়োজন।’’ কিন্তু মোদী সরকারের কংগ্রেস শাসিত রাজস্থানে চিতা পাঠানোর ইচ্ছা নেই বলেও জানিয়েছিলেন তিনি।

আরও পড়ুন
Advertisement