ভিড় সামাল দিতে তৎপর পুলিশ-প্রশাসন। ছবি: পিটিআই।
ত্রিবেণী সঙ্গমের দিকে না গিয়ে কাছাকাছি ঘাটেই স্নান করুন। মাইকে ক্রমাগত এই বার্তাই দিচ্ছে প্রশাসন। আকাশে ঘুরছে হেলিকপ্টার। সেখান থেকেই মেলাপ্রাঙ্গণ এবং ঘাটগুলির উপর নজরদারি চালানো হচ্ছে। মহাকুম্ভে পদপিষ্টের ঘটনার পর পরই উত্তরপ্রদেশ সরকারের তরফে একাধিক পদক্ষেপ করা হয়েছে।
বুধবার মৌনী অমাবস্যা উপলক্ষে বহু মানুষের ভিড় হয়েছিল প্রয়াগরাজে। গঙ্গা, যমুনা এবং অন্তঃসলিলা সরস্বতী— তিন নদীর সঙ্গমে ‘শাহি স্নান’ করতে পুণ্যার্থীরা এসেছেন বিভিন্ন প্রান্ত থেকে। তবে স্নানের মধ্যেই ঘটে বিপত্তি। ভিড়ের চাপে ব্যারিকেড ভেঙে যায়। একে অপরের উপরে পড়ে যান। পদপিষ্টের ঘটনায় অনেকের মৃত্যুর আশঙ্কা করছে স্থানীয় প্রশাসন। তবে সরকারি ভাবে মৃতের সংখ্যা জানানো হয়নি এখনও। বহু মানুষ আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
ঘটনার পরই তৎপর প্রশাসন। রাজ্য এবং জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী উদ্ধারকাজ শুরু করে। স্থানীয় পুলিশ তো বটেই, পরিস্থিতি সামাল দিতে নামানো হয় র্যাফ। মেলাপ্রাঙ্গণে মোতায়েন করা হয়েছে এনএসজি, আধাসেনাও। গুজবে কান না দিয়ে প্রশাসনের নির্দেশ মেনে চলার জন্য প্রচার করা হচ্ছে মেলাপ্রাঙ্গণের সর্বত্র। কোথাও যাতে নতুন করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না হয়, সে দিকে নজর রেখেছে প্রশাসন।
পদপিষ্টের ঘটনায় অনেকেই স্বজনহারা হয়েছেন। হাসপাতালগুলির বাইরে ভিড় বাড়ছে পুণ্যার্থীদের। খুঁজছেন আত্মীয়দের। কেউ কেউ আবার মর্গের বাইরেও ভিড় করছেন। ভিড়ের মধ্যে বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে, এমন পরিবারের সংখ্যাও নেহাত কম নয়। নিরাপত্তাকর্মী, উদ্ধারকারী দলের সদস্যদের কাছে শুধুই হারিয়ে যাওয়া পরিজনদের ফিরিয়ে দেওয়ার আর্জি জানাচ্ছেন। মাইকে নাম ধরে ধরে, বর্ণনা দিয়ে ‘নিখোঁজ’ ব্যক্তিদের সম্পর্কে প্রচার করা হচ্ছে মেলাপ্রাঙ্গণে। সহায়তা কেন্দ্রগুলিতে উপচে পড়া ভিড়। সকলের চোখেমুখেই আতঙ্ক এবং অসহায়তার ছবি স্পষ্ট।
পদপিষ্টের ঘটনার পরই সব রকম সাহায্যের আশ্বাস দিয়ে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথকে ফোন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মোদীর পাশাপাশি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহও যোগীকে ফোন করে পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন বলে খবর। কার গাফিলতিতে ঘটল এমন বিশৃঙ্খলা? যোগী ইতিমধ্যেই নিজের বাসভবনে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করছেন। সূত্রের খবর, পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে ঘটনার তদন্তেরও নির্দেশ দিতে পারেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী।