(বাঁ দিকে) মহাকুম্ভে পদপিষ্টের ঘটনা। তরুণী মেঘা (ডান দিকে)। ছবি: সংগৃহীত।
গত ২৯ জানুয়ারি (বুধবার) ছিল মৌনী অমাবস্যা। আর এই তিথি উপলক্ষে কয়েক কোটি পুণ্যার্থী হাজির হয়েছিলেন প্রায়গরাজের মহাকুম্ভে। মঙ্গলবার থেকেই কাতারে কাতারে পুণ্যার্থী সঙ্গমস্থলের কাছাকাছি এসে হাজির হন। সেই ভিড়েরই ছবি এবং ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে সরাসরি তুলে ধরছিলেন কর্নাটকের বেলাগাভির তরুণী মেঘা দীপক হাতারওয়াত। কী বিপুল জনস্রোত কুম্ভমেলায় তার বর্ণনা দিচ্ছিলেন তিনি। তার সঙ্গে সেই সময় সেখানকার পরিস্থিতিও তুলে ধরছিলেন।
সমাজমাধ্যমে লাইভ করার সময় তিনি পুণ্যার্থীদের উদ্দেশে সতর্কবার্তাও দেন। মেঘা বলেন, ‘‘আমি এখন কুম্ভমেলায়। লাখ লাখ পুণ্যার্থী সঙ্গমস্থলের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিপুল জনস্রোতে এগিয়ে যাওয়া মুশকিল হচ্ছে। আপনার যদি আসার কথা ভাবেন, তা হলে এই মুহূর্তে না আসাই ভাল। আর যদি আসেনও, তা হলে পরিবারের সদস্যেরা কেউ কারও হাত ছাড়বেন না।’’ তার ঠিক কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই হুড়োহুড়ি, ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়ে যায়। আর সেই ভিড়ের মাঝে পড়ে মৃত্যু হয় মেঘার।
কুম্ভে ‘শাহি স্নান’-এর জন্য কর্নাটক থেকে এসেছিলেন মেঘা। সঙ্গে মাকেও নিয়ে এসেছিলেন। মেঘার আত্মীয়েরা জানাচ্ছেন, প্রয়াগরাজে পৌঁছে তাঁদের সেখান থেকে ভিডিয়ো কল করে দেখান। খুব খুশি দেখাচ্ছিল তাঁকে। মাকে সঙ্গে নিয়ে হাঁটতে হাঁটতে সঙ্গমস্থলের দিকে যাচ্ছিলেন। রাতের দিকে সমঙ্গস্থলের কাছাকাছি পৌঁছেছিলেন। আগে থেকেই সেখানে বিপুলসংখ্যক পুণ্যার্থী হাজির হয়েছিলেন। সঙ্গমস্থলের ৫০০ মিটারের মধ্যে ১০ লক্ষ পুণ্যার্থী হাজির হয়েছিলেন মঙ্গলবার রাতে। অনেকেই সকাল সকাল স্নানের জন্য আগেভাগে সেখানে পৌঁছে বিছানা পেতে মাটিতে শুয়ে ছিলেন। ভিড় ক্রমশ বাড়তে থাকে। রাত ১০টা থেকেই ছবিটা বদলে যায়। ১২টার সময় বিশাল জনস্রোত ওই ৫০০ মিটারের মধ্যে ঢুকে পড়ে। ফলে ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়ে যায়। মাটিতে যাঁরা শুয়ে ছিলেন সেই জনস্রোত তাঁদের উপর দিয়ে চলে যায়। ফলে পদপিষ্ট হয়ে ৩০ জনের মৃত্যু হয়। সেই মৃতের তালিকায় রয়েছেন মেঘা এবং তাঁর মা।