(বাঁ দিকে) মার্চেন্ট নেভি অফিসার সৌরভ রাজপুত। প্রেমিক সাহিল শুক্লর সঙ্গে মুস্কান রস্তোগী (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
মেরঠের মার্চেন্ট নেভি অফিসার সৌরভ রাজপুতের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট প্রকাশ্যে এল। পুলিশ সূত্র উল্লেখ করে সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, তাঁর হৃৎপিণ্ডের ঠিক মাঝখানে তিন বার ছুরি দিয়ে কোপ মারা হয়েছে। ফালাফালা হয়ে গিয়েছে হৃৎপিণ্ড। এ ছাড়াও শরীরের একাধিক অংশে কোপ মারা হয়েছিল। সৌরভের পেটের উপর বসে ছুরি দিয়ে তাঁকে কুপিয়েছেন স্ত্রী মুস্কান রস্তোগীই, জানিয়েছে পুলিশ। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হৃৎপিণ্ডের তিনটি ক্ষতের তথ্য নিশ্চিত করেছে।
পিটিআই জানিয়েছে, মুস্কানের প্রেমিক সাহিল শুক্ল সৌরভকে খুনের জন্য তাঁকে ইন্ধন জুগিয়েছিলেন। সাহিল বলেছিলেন, মুস্কান ছাড়া আর কেউ সৌরভকে খুন করতে পারবেন না। মুস্কানের হাতে খুন হলেই একমাত্র সাহিলের সঙ্গে তিনি সুখী হবেন। এর পর অচৈতন্য সৌরভের পেটের উপর উঠে বসেছিলেন মুস্কান। তাঁর হাতে ছুরি তুলে দেন সাহিল। ঠিক হৃৎপিণ্ডে তিন বার কোপ মারতে বলেন। কিন্তু মুস্কান চট করে এই কাজ করতে পারেননি, জিজ্ঞাসাবাদে তেমনটাই জানতে পেরেছেন তদন্তকারীরা। স্বামীর বুকে ছুরি চালাতে ইতস্তত করছিলেন তিনি। তখন সাহিল তাঁর হাত ধরেন এবং সৌরভের বুকে পর পর তিন বার ছুরি বসিয়ে দেন।
গত বুধবার সৌরভের দেহের ময়নাতদন্ত করা হয়। হৃৎপিণ্ডে ছুরির আঘাতেই সৌরভের মৃত্যু হয়েছে, বলছে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট। এর পর ছুরি দিয়ে কেটে তাঁর ঘাড় বিচ্ছিন্ন করা হয়। সৌরভের পা দু’টি পিছন দিকে বেঁকে ছিল। মৃত্যুর পর ওই অবস্থাতেই তা শক্ত হয়ে যায়। চেষ্টা করেও পা সোজা করতে পারেননি মুস্কানেরা। কব্জি থেকে কেটে ফেলা হয় দুই হাত। পুলিশ জানতে পেরেছে, সৌরভের মাথা এবং হাতের অংশ সাহিলের বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন মুস্কান। দেহের বাকি অংশ নিজেদের বিছানার বাক্সে ঢুকিয়ে রেখেছিলেন। সেই বিছানাতেই রাতে ঘুমোন। পরের দিন দেহাংশ ড্রামে ভরে সিমেন্ট ঢেলে দেন।
ময়নাতদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী, সিমেন্টের ফলে দেহাংশগুলির যথেষ্ট ক্ষতি হয়েছে। ময়নাতদন্তের অন্তত দু’সপ্তাহ আগে সৌরভের মৃত্যু হয়। স্বাভাবিক ভাবেই তাঁর দেহাংশে পচন ধরেছিল। ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসকেরা সকলেই জানিয়েছেন, এই ধরনের নৃশংস হত্যা আগে তাঁরা দেখেননি।