আদালতের পথে মার্চেন্ট নেভি অফিসার খুনে ধৃত স্ত্রী মুস্কান রস্তোগী এবং তাঁর প্রেমিক সাহিল শুক্ল (বাঁ দিকে)। ছবি: পিটিআই।
মার্চেন্ট নেভি অভিসার সৌরভ রাজপুতের খুনের ঘটনায় প্রকাশ্যে এল আরও কিছু নতুন তথ্য। কয়েকটি সূত্রে দাবি, মূল অভিযুক্ত সৌরভের স্ত্রী মুস্কান রস্তোগীর মৃত্যুদণ্ড চেয়েছেন যে মহিলা, তিনি আদৌ তাঁর নিজের মা নন। তিনি মুস্কানের সৎমা। মুস্কানের ভাই জানিয়েছেন, তাঁর দিদি ছোটবেলা থেকে নায়িকা হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন। সেই কারণে ঘর ছেড়ে বেরিয়েও গিয়েছিলেন। তাঁকে নিয়ে সংসারে নানা অশান্তি হত বলেও দাবি করেছেন ভাই।
প্রেমিক সাহিল শুক্লের সাহায্য নিয়ে সৌরভকে খুন করেন স্ত্রী মুস্কান। পুলিশি জেরার মুখে সে কথা তিনি স্বীকার করে নিয়েছেন। তাঁকে এবং সাহিলকে আপাতত জেল হেফাজতে রাখা হয়েছে। অভিযোগ, সৌরভকে কুপিয়ে খুন করে তাঁর দেহ টুকরো টুকরো করে কাটেন দু’জন। তার পর দেহাংশ ড্রামে ভরে ভিতরে সিমেন্ট ঢেলে দেন। প্রায় দু’সপ্তাহ পরে ড্রাম কেটে দেহাংশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর মুস্কানের মা এবং বাবা জানান, তাঁদের মেয়ে বেঁচে থাকার অধিকার হারিয়েছে। জামাই সর্বস্ব দিয়ে মুস্কানকে ভালবেসেছিলেন, কিন্তু মেয়ে তার দাম দিতে পারেনি, জানান তরুণীর বাবা-মা। তাঁরা মুস্কানের সর্বোচ্চ শাস্তি অর্থাৎ মৃত্যুদণ্ডের দাবি জানিয়েছেন। কিন্তু সম্প্রতি কয়েকটি রিপোর্টে দাবি করা হচ্ছে, যে মহিলা তাঁর মৃত্যুদণ্ডের দাবি করেছেন, তিনি সৎমা। নিউজ়১৮ পুলিশ সূত্র উল্লেখ করে এই তথ্য জানিয়েছে।
৪ মার্চ সৌরভকে হত্যার পর মুস্কান এবং সাহিল শিমলায় বেড়াতে গিয়েছিলেন। ছ’বছরের কন্যাকে বাপের বাড়িতে রেখে যান মুস্কান। সৌরভের বাবা-মা তাঁদেরও নিশানা করেছেন। সৌরভের মা রেণু দেবীর অভিযোগ, তাঁদের ছেলে যে খুন হয়েছেন, তা আগে থেকেই জানতেন মুস্কানের বাবা-মা। এমনকি, ছ’বছরের কন্যাও খুনের কথা জানত বলে তিনি দাবি করেছেন। পুলিশ অবশ্য সেই সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়েছে। মুস্কানেরা শিমলা থেকে ফেরার পরেই বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। তাঁর বাপের বাড়ি থেকেই পুলিশকে খবর দেওয়া হয়।
২০১৬ সালে মুস্কানের সঙ্গে সৌরভের বিয়ে হয়েছিল। স্ত্রীর সঙ্গে থাকতে নিজের বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে এসেছিলেন সৌরভ। থাকতেন ভাড়াবাড়িতে। চাকরিও ছেড়ে দিয়েছিলেন। পরে তাঁদের কন্যাসন্তান জন্মানোর পর সৌরভ চাকরি নিয়ে লন্ডনে চলে যান। স্ত্রী এবং কন্যার জন্মদিন পালন করতে সম্প্রতি ফিরেছিলেন। তখনই তাঁকে খুন করা হয় বলে অভিযোগ। মুস্কান তাঁর খাবারের সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে দিয়েছিলেন। পরে বুকে ধারালো অস্ত্রের কোপ মেরে খুন করা হয়। তাঁকে এবং সাহিলকে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আদালত।