অরবিন্দ কেজরীওয়াল এবং জগদীপ ধনখড়। —ফাইল চিত্র।
দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়ালের গ্রেফতারি নিয়ে প্রতিক্রিয়া আসছে বিদেশ থেকে। জার্মানি, আমেরিকার পর আম আদমি পার্টির (আপ) প্রধানের গ্রেফতারি নিয়ে মন্তব্য করেছে রাষ্ট্রপুঞ্জও। ওই প্রেক্ষিতে মুখ খুললেন উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়। ভারতে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা অনন্য বলে মন্তব্য করে ধনখড় জানান, অন্য কারও থেকে আইনি বিষয় নিয়ে দেশের কোনও শিক্ষার প্রয়োজন নেই। শুক্রবার একটি অনুষ্ঠানে ধনখড় বলেন, ‘‘ভারতের গণতন্ত্র একটি শক্তিশালী বিচার ব্যবস্থা নিয়ে তৈরি। কোনও ব্যক্তি বা কোনও গোষ্ঠীর দ্বারা একে প্রভাবিত করা যায় না। আইনের শাসনের বিষয়ে কারও কাছ থেকে পাঠ পড়ার প্রয়োজন নেই ভারতের।’’ উপরাষ্ট্রপতি দাবি করেছেন, আইনের চোখে যে সবাই সমান, এ বিষয়ে নতুন দৃষ্টান্ত তৈরি করেছে ভারত। এমনকি, কেজরীওয়ালের গ্রেফতারির প্রতিবাদে ‘ইন্ডিয়া’র নেতাদের প্রতিবাদেরও সমালোচনা করেছেন ধনখড়। তিনি এ-ও বলেন, ‘‘দুর্নীতি কোনও সুযোগ, কর্মসংস্থান বা চুক্তির পথ নয়।’’ লোকসভা ভোটের আগে কেজরীর গ্রেফতারি নিয়ে সমালোচনায় মুখর বিরোধীরা। উপরাষ্ট্রপতির মন্তব্য, ‘‘আপনি কি কোনও নৈতিক ভিত্তিতে বলতে পারেন যে, দুর্নীতিবাজদের মোকাবিলা করা উচিত নয়। কারণ, সেটা কোনও উৎসবের মরসুম বা কৃষিকাজের সময়।’’ উপরাষ্ট্রপতির প্রশ্ন, ‘‘যাঁরা অপরাধী, তাদের বাঁচানোর জন্য কোনও ঋতু কী ভাবে কোনও বিষয় হতে হতে পারে?’’
বস্তুত, কেজরীওয়ালের গ্রেফতারির পাশাপাশি, কংগ্রেসের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ‘ফ্রিজ়’ হওয়ার কারণে ভারতের ‘রাজনৈতিক অস্থিরতা’ নিয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জ বলেছে, ‘‘আমরা আশা করব, প্রত্যেক ভারতীয়ের রাজনৈতিক এবং নাগরিক অধিকার যেন অক্ষুণ্ণ থাকে।’’
গত ২১ মার্চ আবগারি মামলায় ইডির হাতে গ্রেফতার হন কেজরীওয়াল। তার পর এ নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিয়েছে জার্মানি এবং আমেরিকা। যার প্রতিক্রিয়া দিয়েছে ভারতও। কেজরীওয়াল যেন ন্যায্য, স্বচ্ছ এবং সময়োপযোগী বিচার পান, তা নিশ্চিত করার পক্ষে সওয়াল করে জো বাইডেন সরকার। যার জেরে গত বুধবার ভারতে অবস্থিত আমেরিকার দূতাবাসের কার্যকরী সহকারী প্রধান গ্লোরিয়া বারবেনাকে তলব করা হয়েছিল। বিদেশ মন্ত্রকের তরফে একটি বিবৃতি দিয়ে ভারতের আইনি প্রক্রিয়া নিয়ে আমেরিকার বিদেশ দফতরের মুখপাত্রের করা মন্তব্যের নিন্দাও করা হয়। ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, “কূটনীতিতে আশা করা হয় যে, দেশগুলি অন্য দেশের সার্বভৌমত্ব এবং অভ্যন্তরীণ অখণ্ডতার বিষয়ে শ্রদ্ধাশীল হবে। অন্যথায় খারাপ দৃষ্টান্ত তৈরি হবে।” জার্মানির তরফ কেজরীর গ্রেফতারি নিয়ে বলা হয়, তারা আশা করে ‘বিচার বিভাগের স্বাধীনতা’ এবং ‘মৌলিক গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ’ দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর বিচার প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রেও প্রযুক্ত হবে। এই মন্তব্যের জেরে ভারতের জার্মান দূতাবাসের উচ্চপদস্থ কূটনীতিক জর্জ এনজ়ওয়েলারকে তলব করে ভারতের বিদেশ মন্ত্রক।