উত্তরাখণ্ডের অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু হলে একত্রবাসের জন্যও ‘রেজিস্ট্রেশন’ করাতে হবে যুগলকে! —প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
এ বার থেকে উত্তরাখণ্ডে কোনও যুগলের একত্রবাসের জন্যও প্রয়োজন হতে পারে বিয়ের মতো কোনও রেজিস্ট্রেশনের। এ বছরের সাধারণতন্ত্র দিবস থেকেই উত্তরাখণ্ডে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালু করতে চাইছে পুষ্কর সিংহ ধামীর সরকার। দেশের প্রথম রাজ্য হিসাবে উত্তরাখণ্ডে চালু হবে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি। ‘ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’-এর প্রতিবেদন অনুসারে, তাতে যুগলের একত্রবাসের জন্য প্রয়োজন হবে রেজিস্ট্রেশনের। বিয়ের মতো এ ক্ষেত্রেও সাক্ষীর প্রয়োজন হবে। ভবিষ্যতের নথি হিসাবে ওই ভিডিয়ো রেকর্ড করে রাখা হবে। এ ছাড়া রেজিস্ট্রেশনের জন্য প্রয়োজন হবে ছবি এবং আধার কার্ডের তথ্যও।
অভিন্ন দেওয়ানি বিধির পোর্টাল কী ভাবে কাজ করবে, সে বিষয়ে সোমবার থেকে সরকারি আধিকারিকদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার কাজ শুরু করেছে উত্তরাখণ্ড সরকার। ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে এই প্রশিক্ষণ পর্ব। ওই পোর্টালের মাধ্যমে বিভিন্ন পরিষেবা পাওয়া যাবে। তালিকায় রয়েছে বিয়ের রেজিস্ট্রেশন, বিবাহবিচ্ছেদ, একত্রবাসের রেজিস্ট্রেশন, একত্রবাস বন্ধ, আইনি উত্তরাধিকার-সহ অন্য বিষয়গুলি। যাঁরা আগে থেকেই একত্রবাসে রয়েছেন বা নতুন করে একত্রবাসের পথে এগোচ্ছেন, সব যুগলকে এই রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। একত্রবাসের সঙ্গীর নাম, বয়স, নাগরিকত্ব, ধর্ম, পূর্বে কোনও সম্পর্ক ছিল কি না, ফোন নম্বর— পোর্টালে সব নথিভুক্ত করতে হবে আবেদনকারীকে।
একত্রবাসের রেজিস্ট্রেশনকে দু’টি ভাগে ভাগ করা হচ্ছে। সঙ্গী উত্তরাখণ্ডের বাসিন্দা হলে এক ধরনের রেজিস্ট্রেশন এবং অন্য কোনও রাজ্যের বাসিন্দা হলে পৃথক একটি রেজিস্ট্রেশন থাকবে। যুগলের ছবি এবং একটি ঘোষণাপত্রও আপলোড করতে হবে রেজিস্ট্রেশনের পোর্টালে। একত্রবাসে থাকা যুগল সন্তানের জন্ম দিলে, জন্ম শংসাপত্র পাওয়ার সাত দিনের মধ্যে একত্রবাসের রেজিস্ট্রেশন সেরে ফেলতে হবে।
উত্তরাখণ্ডে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি কার্যকর করার আইনি প্রক্রিয়া খতিয়ে দেখতে সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি রঞ্জনাপ্রকাশ দেশাইয়ের নেতৃত্বে কমিটি গড়ে সে রাজ্যের সরকার। সেই কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতেই তৈরি হয়েছিল বিলের খসড়া। সূত্রের খবর, ‘রেজিস্ট্রি বিবাহ’ বাধ্যতামূলকের কথা বলা হয়েছে এই বিধিতে। কোনও যুগল ‘লিভ-ইন’ করতে চাইলে প্রথমেই তাঁদের নাম পুলিশের কাছে নথিভুক্ত করতে হবে। ‘লিভ-ইন’ সম্পর্কের ঘোষণাপত্র সঙ্গে রাখতে হবে যুগলকে। ‘লিভ-ইন’ সম্পর্কে থাকা যুগলের যদি সন্তান হয়, তবে শিশুরা আইনি স্বীকৃতি পাবে।