গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
প্রতি ঘণ্টায় গড়ে ১৮টি। গড়ে রোজ সওয়া চারশো। পরিসংখ্যান বলছে, গত অর্ধদশক ধরে ভারতে প্রতি বছর পথ দুর্ঘটনায় দেড় লক্ষের বেশি মানুষ মারা যান। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিতিন গডকড়ীর বক্তব্যেও এ বার উঠে এল সেই প্রসঙ্গ।
বণিকসভা ফিকি আয়োজিত ‘রোড সেফটি অ্যাওয়ার্ডস অ্যান্ড কনক্লেভস ২০২৪’ অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘‘সীমান্তে পাকিস্তান বা চিন সেনার হামলা, জঙ্গিহানা, মাওবাদী সন্ত্রাস, গোষ্ঠীহিংসায় প্রতি বছর মোট যত মানুষের মৃত্যু হয় তার চেয়ে অনেক বেশি মানুষ প্রাণ হারান পথ দুর্ঘটনায়।’’ হতাহতদের প্রায় ৬৫ শতাংশ মহিলা এবং যুবক জানিয়ে গডকড়ীর দাবি, এর ফলে বার্ষিক ৩ শতাংশ জিডিপির ক্ষতি হয়।
তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে গডকড়ী দাবি করেছেন, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সড়ক নির্মাণের পরিকল্পনায় ত্রুটির কারণে দুর্ঘটনা ঘটে! বিস্তারিত পরিকল্পনা (ডিটেলড প্রজেক্ট রিপোর্ট বা ‘ডিপিআর’)-য় গলদের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘‘ডিপিআর গুগলে তৈরি করা হয় এবং সর্বনিম্ন দরদাতা প্রকল্পের বরাত পায়। এই ডিপিআরগুলো খুবই নিম্নমানের। ইঞ্জিনিয়ারদের নির্মাণ পরীক্ষা করার কথা থাকলেও অনেক সময় তাঁরা তা করেন না। তাঁরা শুধুমাত্র দরপত্র বিশেষজ্ঞ। আমরা এখন কিছু নীতি পরিবর্তন করেছি। দরপত্রের জন্য যোগ্যতা অর্জনকারী মাত্র কয়েকটি সংস্থা রয়েছে। আমি জানি তারা গুগলে ডিপিআর তৈরি করে।’’
সর্বনিম্ন দরপত্র দাতাকে প্রকল্পের বরাত দেওয়ার যে প্রথা দীর্ঘ দিন ধরে প্রচলিত রয়েছে, তা বদলানোর প্রয়োজন রয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি। জাতীয় সড়ক উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ কয়েক বছর ধরে দুর্ঘটনাপ্রবণ অঞ্চলগুলিকে ‘ব্ল্যাক স্পট’ হিসাবে চিহ্নিত করার কাজ চালাচ্ছে। গডকড়ী জানান, প্রাথমিক ভাবে এমন ব্ল্যাক স্পটের সংখ্যা ছিল ছ’হাজার। এখন তা দ্বিগুণ হয়ে গিয়েছে। আগামী দিনে আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। প্রসঙ্গত, অতিমারি পরবর্তী পরিস্থিতিতে মোটরবাইকের ব্যবহার বাড়ায় পথ দুর্ঘটনার প্রবণতা বেড়েছে বলেও সাম্প্রতিক একাধিক পরিসংখ্যানে দেখা গিয়েছে। মোটরবাইকের মতো ব্যক্তিগত পরিবহণের থেকে বাসের মতো গণ পরিবহণ নিরাপদ। দেখানো হয়েছে, দুর্ঘটনায় মোট যত জনের মৃত্যু হয়েছে, তাঁদের মধ্যে প্রায় ৪৫ শতাংশ দু’চাকার সওয়ারি ছিলেন।