প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের স্মৃতিসৌধ তৈরি নিয়ে কংগ্রেস-বিজেপি সংঘাত। —ফাইল চিত্র।
প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের স্মৃতিসৌধ তৈরির জায়গা নিয়ে কংগ্রেস-বিজেপি বিবাদের মধ্যেই বিবৃতি দিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। তারা জানিয়েছে, মনমোহনের স্মৃতিসৌধ তৈরির জন্য জায়গা দেওয়া হবে। কিন্তু সেই প্রক্রিয়ায় কিছুটা সময় লাগবে। তার আগে মনমোহনের শেষকৃত্য এবং অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হোক, এমনটাই মত কেন্দ্রের।
মনমোহনের শেষকৃত্যের স্থলেই তাঁর স্মৃতিসৌধ তৈরি করতে চায় কংগ্রেস। সেই অনুযায়ী শুক্রবার কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ফোন করে দলের ইচ্ছার কথা জানিয়েছিলেন। চিঠিও লিখেছিলেন। কিন্তু সকাল থেকে এ বিষয়ে কেন্দ্রের সাড়া মেলেনি বলে অভিযোগ। পরে বেলার দিকে কেন্দ্র জানায়, শনিবার বেলা পৌনে ১২টায় দিল্লির লালকেল্লার পিছন দিকে নিগমবোধ ঘাটে মনমোহনের শেষকৃত্য হবে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এই সিদ্ধান্তের পরেই ক্ষোভ তৈরি হয় কংগ্রেসের অন্দরে। সিদ্ধান্তকে ‘দুর্ভাগ্যজনক’ আখ্যাও দেওয়া হয়।
বিতর্কের মাঝে শুক্রবার বেশি রাতে একটি বিবৃতি দিয়েছে অমিত শাহের মন্ত্রক। সেখানে তারা জানিয়েছে, কংগ্রেস সভাপতির কাছ থেকে মনমোহনের স্মৃতিসৌধ তৈরির জন্য জায়গার অনুমতি চাওয়া হয়েছে। সেই আবেদন গ্রহণ করেছে সরকার। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ বিষয়ে মনমোহনের পরিবার এবং খড়্গের সঙ্গে কথাও বলেছেন। তাঁদের জানানো হয়েছে, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর স্মৃতিসৌধের জন্য জায়গা বরাদ্দ করা হবে। তবে তার আগে ওঁর শেষকৃত্য এবং অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হোক। কারণ, এ ব্যাপারে একটি ট্রাস্ট তৈরি করা দরকার। সেই ট্রাস্টকে জায়গা বরাদ্দ করবে কেন্দ্র।
নিগমবোধ ঘাট শ্মশানে মনমোহনে শেষকৃত্যের সিদ্ধান্তে শুরু থেকেই আপত্তি জানাচ্ছে কংগ্রেস। তাদের প্রশ্ন, এর আগে দেশের কোনও প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর শেষকৃত্য এই শ্মশানে হয়েছে কি? কংগ্রেস চায় যমুনার তীরে রাজঘাটের আশপাশের কোনও জমিতে মনমোহনের শেষকৃত্য হোক, যেখানে ইন্দিরা গান্ধী, রাজীব গান্ধী, অটলবিহারী বাজপেয়ীদের স্মৃতিসৌধ রয়েছে। নিগমবোধ ঘাটে শেষকৃত্য হলেও ওই স্থান স্মৃতিসৌধ নির্মাণের উপযুক্ত নয়, দাবি কংগ্রেসের। তারা চায় এমন কোনও জায়গায় শেষকৃত্য হোক, যেখানে স্মৃতিসৌধ তৈরি করা যাবে। এ ক্ষেত্রে সরকারি সূত্রে পাল্টা দাবি, রাজঘাটে সকল রাষ্ট্রনেতার জন্য একটি স্মৃতিস্থল তৈরির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। ইউপিএ সরকারের আমলেই ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। রাতে কেন্দ্রের বিবৃতির পরেও এ নিয়ে বিতর্ক এবং রাজনৈতিক তরজা চলছে।