Prayagraj Murder Case

প্রয়াগরাজকাণ্ডে নয়া মোড়! বিধায়ক হত্যার সাক্ষী খুনের অভিযুক্তের সঙ্গে অখিলেশের ছবি

২০০৫ সালে উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজের বিএসপি বিধায়ক রাজু পাল খুন হয়েছিলেন। সেই মামলার সাক্ষী উমেশ পালকে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রকাশ্য রাস্তায় গুলিতে ঝাঁঝরা করে দেওয়া হয়!

Advertisement
সংবাদ সংস্থা
ইলাহাবাদ (প্রয়াগরাজ) শেষ আপডেট: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৫:৪৯
Umesh Pal murder case: Samajwadi Party chief Akhilesh Yadav responds about his pic pith accused Sadaqat Khan

উমেশ পাল খুনের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে ‘অখিলেশ ঘনিষ্ঠ’ সাদাকত খানকে গ্রেফতার করল পুলিশ।

উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজের বিএসপি বিধায়ক রাজু পাল হত্যাকাণ্ডের মূল সাক্ষী উমেশ পালকে খুনের ঘটনার অন্যতম অভিযুক্ত সাদাকত খানের সঙ্গে রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদবের ছবি ঘিরে তৈরি হল রাজনৈতিক বিতর্ক। শাসকদল বিজেপির পাশাপাশি, বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে সে রাজ্যের আর এক বিরোধী দল কংগ্রেস।

মঙ্গলবার উত্তরপ্রদেশ বিধানসভার অধিবেশনে যোগ দিতে গিয়ে বিরোধী দলনেতা অখিলেশ বলেন, ‘‘ওই ছবি তুলে ধরে যাঁরা আমাকে নিশানা করছেন, তাঁরা অর্ধসত্য বলছেন।’’ যদিও স্থানীয় সূত্রের খবর, সাদাকত সক্রিয় ভাবে সমাজবাদী পার্টির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। প্রসঙ্গত, সোমবার গোরক্ষপুর থেকে সাদাকতকে গ্রেফতার করা হয়। তিনি নেপালে পালানোর চেষ্টা করছিলেন বলে পুলিশের দাবি। পুলিশ সূত্রে খবর, সাদাকত ইলাহাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের মুসলিম বোর্ডিং হস্টেলের ৩৬ নম্বর ঘরে বেআইনি ভাবে থাকছিলেন। আর ওই ঘরেই উমেশ হত্যাকাণ্ডের শুটাররা জড়ো হয়েছিল।

Advertisement

প্রয়াগরাজ পুলিশের একটি সূত্র জানাচ্ছে, একটি ভিডিয়ো ফুটেজ থেকে উমেশ হত্যাকাণ্ডে প্রাক্তন সমাজবাদী সাংসদ আতিক আহমেদের ছেলে আসাদ-সহ মোট পাঁচ জনের জড়িত থাকার তথ্য মিলেছে।সোমবার প্রয়াগরাজেরই (ইলাহাবাদ) ধুমনগঞ্জ এলাকার নেহরু পার্কে পুলিশের গুলিতে আরবাজ নামে উমেশ হত্যাকাণ্ডের এক অভিযুক্ত নিহত হন বলে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের প্রশাসন জানিয়েছে।

প্রয়াগরাজ পুলিশের দাবি, আরবাজের গুলিতে রাজেশ মৌর্য নামে এক পুলিশ ইনস্পেক্টর জখম হন। উত্তরপ্রদেশ পুলিশের এডিজি প্রশান্ত কুমার বলেন, ‘‘শুক্রবার উমেশের খুনে জড়িত ছিলেন আরবাজ। সূত্র মারফত খবর পেয়ে তাঁকে গ্রেফতারের জন্য অভিযান চালানো হয়। সে সময় আরবাজ গুলি চালালে পাল্টা গুলি চালাতে পুলিশ বাধ্য হয়। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় আরবাজকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা ‘মৃত’ ঘোষণা করেন।

উত্তরপ্রদেশ পুলিশের দাবি, উমেশকে খুন করার পরিকল্পনা হয়েছিল বরেলী জেলে। সেই জেলে বন্দি এই খুনে অভিযুক্ত তথা সমাজবাদী পার্টির প্রাক্তন সাংসদ আতিকের ভাই আশরফ। অন্য দিকে, আতিক বন্দি গুজরাতের সাবরমতী জেলে। পুলিশ সূত্রে খবর, উমেশকে হত্যার আগে দুই ভাইয়ের মধ্যে কথা হয়। তার পরই খুনের প্রস্তুতি শুরু হয়।

প্রসঙ্গত, ২০০৫ সালে বহুজন সমাজ পার্টির (বিএসপি) বিধায়ক রাজু পাল খুন হয়েছিলেন। অভিযোগ উঠেছিল কুখ্যাত দুষ্কৃতী তথা প্রাক্তন সাংসদ আতিকের বিরুদ্ধে। সেই মামলার সাক্ষী ছিলেন রাজুর বন্ধু উমেশ পাল। গত কয়েক বছরে একাধিক বার আক্রান্ত হয়েছিলেন উমেশ। জীবনহানির আশঙ্কায় প্রশাসন দু’জন পুলিশকর্মীকে উমেশের দেহরক্ষী হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছিল।

কিন্তু শেষ পর্যন্ত দেহরক্ষীর উপস্থিতিতেই আরবাজ এবং তাঁর সঙ্গীরা শুক্রবার প্রয়াগরাজের রাস্তায় প্রকাশ্যে উমেশকে খুন করেন বলে অভিযোগ। পুলিশ সূত্রের খবর, শুক্রবার একটি সাদা রঙের এসইউভিতে বাড়ির সামনে এসে দাঁড়ান উমেশ। রাস্তার ভিড়ের মধ্যে মিশে ছিল হামলাকারীরা। উমেশ গাড়ি থেকে নামতেই এক দুষ্কৃতী পিছন থেকে এসে গুলি চালায়। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় দৌড়ে একটি গলির মধ্যে ঢুকে যান উমেশ। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। দুই দেহরক্ষীর উপর গুলি চালিয়ে উমেশকে পর পর গুলি করে খুন করা হয় বলে অভিযোগ। তার পই বোমা ছুড়তে ছুড়তে এলাকা ছাড়েন দুষ্কৃতীরা। পরে হাসপাতালে উমেশের এক দেহরক্ষীরও মৃত্যু হয়।

আরও পড়ুন
Advertisement