ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লবকুমার দেব। ফাইল ছবি।
বেফাঁস মন্তব্য করে ফের নতুন বিতর্কের জন্ম দিলেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লবকুমার দেব। দেশের মধ্যে বিজেপির প্রভাব বাড়ার কথা বলতে গিয়ে শনিবার রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনে বিপ্লব বলেন শুধু ভারতেই নয়, শ্রীলঙ্কা, নেপালেও সরকার গড়ার পরিকল্পনা রয়েছে অমিত শাহের। এই পরিকল্পনার কথা খোদ অমিতই তাঁকে জানিয়েছিলেন বলে দাবি বিপ্লবের।
বিপ্লবের দাবি, অমিত শাহ তখন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি হিসাবে ত্রিপুরা সফরে এসেছিলেন। সে সময় রাজ্যের নেতাদের সঙ্গে এক চা-চক্রে এ কথা অমিত তাঁকে এ কথা জানিয়েছিলেন। বিপ্লবের কথায়, ‘‘রাজ্যের অতিথি নিবাসে আমরা বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা বলছিলাম। তখন বিজেপির উত্তর-পূর্বের আঞ্চলিক সম্পাদক অজয় জামওয়াল বলেন, ভারতের প্রায় সব রাজ্যেই সরকার গড়েছে বিজেপি। এই কথার জবাবে শাহ বলেছিলেন এখনও শ্রীলঙ্কা এবং নেপাল বাকি। ওই দুই দেশে আমাদের দলকে ছড়িয়ে দিতে হবে। জিতে সরকার গ়ড়তে হবে।’’
বিজেপির বিকাশে অমিত শাহের ভূমিকার কথাও উল্লেখ করেন ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘কমিউনিস্টরা দাবি করতেন তাঁরা বিশ্বের সবথেকে বড় দল। এই রেকর্ড অমিত শাহ ভেঙেছেন। বিজেপিকে বিশ্বের সবথেকে বড় দল বানিয়েছেন।’’ বিজেপিকে দীনদয়াল উপাধ্যায়ের দল, শ্যামাপ্রসাদের দল বলেও অভিহিত করেছেন বিপ্লব। দেশের বিভিন্ন রাজ্যে বিজেপি ক্ষমতায় আনা নিয়েও মন্তব্য করেছেন তিনি। যেমন, বিজেপি এলে কেরলে প্রতি ৫ বছরে সরকার বদলানোর ধরন শেষ হবে বলে দাবি বিপ্লবের। পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতা থেকে মমতা বন্দোপাধ্যায় সরে যাবেন বলেও মত তাঁর। তামিলনাড়ুতে পদ্ম ফোটানোর স্বপ্নও দেখছেন বিজেপির এই মুখ্যমন্ত্রী।
বিপ্লবের এই মন্তব্য নিয়ে সমালোচনা করেছে সিপিএম এবং কংগ্রেস। রাজ্যের দুই বিরোধী দলের দাবি, অনেক দিন ধরেই নেপাল, ভুটান, শ্রীলঙ্কাকে যুক্ত করে হিন্দুরাষ্ট্র গঠনের পরিকল্পনা রয়েছে আরএসএসের। সিপিএম নেতা বাদল চৌধুরীর মতে, ‘‘সেই গোপন কর্মসূচির কথাই বিপ্লববাবুর মুখ দিয়ে বেরিয়ে পড়েছে। এতে প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’’ কংগ্রেসের সহ-সভাপতি তাপস দে বলেন, ‘‘প্রতিবেশীদের সঙ্গে এমনিতেই ভারতের সম্পর্ক ভাল নেই। তার উপরে এমন মন্তব্য ভারতকে বিশ্বের দরবারে আগ্রাসী রাষ্ট্র হিসেবে তুলে ধরবে।’’
বিগত বছরগুলিতে একের পর এক দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য করেছেন বিপ্লব। মহাভারতের যুগেও ইন্টারনেট ছিল বলে দাবি করেছিলেন তিনি। রবীন্দ্রনাথ নোবেল ফিরিয়ে দিয়েছিলেন, পঞ্জাবি এবং জাঠদের বুদ্ধি কম— এ ধরনের প্রচুর কথা অতীতে বলেছেন তিনি। সেই তালিকায় যোগ হল আরও এক বিতর্ক।