প্রাক্তন প্রতিরক্ষামন্ত্রী এ কে অ্যান্টনি। ফাইল ছবি।
প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা থেকে চিনা সেনার পিছিয়ে যাওয়া নিয়ে দেশপ্রেমের আবেগ তৈরি করতে দেখা যাচ্ছে নরেন্দ্র মোদী সরকারকে। এই সময়েই কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে ছিনিমিনি খেলার অভিযোগ আনলেন কংগ্রেস নেতা তথা প্রাক্তন প্রতিরক্ষামন্ত্রী এ কে অ্যান্টনি।
সাংবাদিক বৈঠকে অ্যান্টনি আজ বলেন, “আমাদের দেশ এই প্রথম দু’দিক থেকে যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে রয়েছে। পাকিস্তানের পক্ষ থেকে জঙ্গি হামলার বিষয়টি রয়েছেই। তার উপর ক্রমশ আগ্রাসী হচ্ছে চিন। কিন্তু দুঃখের বিষয়, সেনা বাহিনীর পাশে দাঁড়াচ্ছে না সরকার।’’ প্রাক্তন প্রতিরক্ষামন্ত্রীর মতে, এই আপৎকালীন পরিস্থিতিতে প্রতিরক্ষা বাজেটে বড় মাপের বৃদ্ধি আশা করা হয়েছিল। চিনের সঙ্গে পাল্লা দেওয়ার জন্য সীমান্ত পরিকাঠামো, যুদ্ধ সরঞ্জাম সব কিছুতেই উন্নয়নের প্রয়োজন ছিল। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, মোদী সরকার মুখে বীরত্ব দেখাচ্ছে ঠিকই, কিন্তু টাকা বরাদ্দের ক্ষেত্রে কোনও পদক্ষেপই করছে না। প্রতিরক্ষা বাজেটে গত বছরের তুলনায় মাত্র ১.৪৮ শতাংশ বৃদ্ধি করা নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অ্যান্টনি। তাঁর কথায়, “এটা দেশকে ঠকানো।’’
এর আগেই প্যাংগং লেক থেকে সেনা প্রত্যাহার নিয়ে প্রধানমন্ত্রী মোদীকে নিশানা করেছিলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গাঁধী। তাঁর অভিযোগ ছিল, ‘ভীরুতা’ দেখিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভারতের জমি চিনকে ছেড়ে দিচ্ছেন। ঘটনা হল, ২০২০-র এপ্রিল পর্যন্ত প্যাংগং লেকের ফিঙ্গার ফোর বা চার নম্বর গিরিশৃঙ্গে ভারতীয় সেনার চৌকি ছিল। প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহ সংসদে বলেছেন, এ বার থেকে ফিঙ্গার-থ্রি-তে সেনাচৌকি থাকবে। শুধু তা-ই নয়, এর আগে ভারত ফিঙ্গার এইট পর্যন্ত টহলদারি করতে পারত। নতুন ব্যবস্থায় ফিঙ্গার ফোর থেকে এইট হয়ে গেল বাফার জ়োন। অর্থাৎ, সেখানে টহল দেওয়ার অনুমতি থাকল না ভারতীয় সেনার (এবং চিনা সেনারও)।
সেই প্রসঙ্গ তুলে অ্যান্টনি আজ বলেন, “এটা অত্যন্ত খারাপ উদাহরণ তৈরি হল। এর পরে অরুণাচল প্রদেশ ও সিকিমেও একই ভাবে আত্মসমর্পণ করতে হবে। মোদী কেন ফিঙ্গার ফোর থেকে থ্রি-এ পিছিয়ে এলেন— তার জবাব চাইছি আমরা। গত বছর এপ্রিলের আগের স্থিতাবস্থা আমরা কবে ফেরত পাব?” পাশাপাশি, প্যাংগং-এর দক্ষিণে কৈলাস গিরিশৃঙ্গ দখল করে রণকৌশলগত যে সুবিধা ভারতীয় সেনা পেয়েছিল, তা-ও বিসর্জন দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ এনেছেন প্রাক্তন প্রতিরক্ষামন্ত্রী। শুধু প্যাংগং-ই নয়, গালওয়ান উপত্যকার ১৪ নম্বর ভারতীয় পোস্ট থেকেও সেনাকে পিছিয়ে নিয়ে আসা এক অর্থে আত্মসমর্পণ বলেই মনে করেন কংগ্রেস নেতা।