আগরতলার সভামঞ্চে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। টুইটার থেকে নেওয়া।
‘‘বিপ্লব দেব মুখ্যমন্ত্রী তো দূর, আপনার একটা ক্লাবের সম্পাদক হওয়ারও যোগ্যতা নেই। আপনি আইন-আদালত মানেন না। আপনি বিন তুঘলকের মতো আচরণ করছেন। কোটি কোটি চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে একটাও চাকরি দিতে পারেননি। বিপ্লব দেব এখন ‘বিগ-ফ্লপ-দেব’।’’ বললেন অভিষেক।
বিপ্লব দেব সরকার চাকরি দেবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কেউ চাকরি পেয়েছেন কি? বরং চাকরি হারিয়েছেন ১০ হাজারের বেশি তরুণ। আমি আপনাদের সামনে কথা দিচ্ছি, আমরা ক্ষমতায় এলে এক জনেরও চাকরি যাবে না। বরং যাঁদের চাকরি গিয়েছে, তাঁরা কাজ ফিরে পাবেন। সে জন্য আইনি পথে যা যা করার, সব করবে তৃণমূল।
ত্রিপুরায় ডবল ইঞ্জিন সরকার কিন্তু কিছুই উন্নয়ন হয়নি। বিপ্লব দেব কত স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন। কিন্তু কাজের কাজ কি কিছু হয়েছে? সভা থেকে বললেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘আজ খুঁটিপুজো করলাম, ২০২৩ সালে বিসর্জন দেব বিজেপি-কে। কারণ বিজেপি-কে না হারালে ত্রিপুরা আফগানিস্তান হয়ে যাবে।’’
Against all odds & so many restrictions this meeting has been possible today at Agartala. @abhishekaitc has shown his determination to be here. @AITCofficial @AITC4Tripura won’t let the people of Tripura down. #AbhishekBanerjeeInTripura pic.twitter.com/hiUxezIhdx
— Sushmita Dev সুস্মিতা দেব (@SushmitaDevAITC) October 31, 2021
গোয়ায় তিন মাসের মধ্যে তৃণমূল সরকার তৈরি হবে। আর ত্রিপুরায় মানুষের সমর্থন আমাদের দিকে। মানুষের ভালবাসাকে পাথেয় করে, মমতার ছবি মাথায় নিয়ে ত্রিপুরায় ২৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে সরকার প্রতিষ্ঠা করবে তৃণমূল। কাল কোর্টে জিতেছি, এর পর ভোটে জিতব। একমাত্র মমতাই পারেন এদের শিক্ষা দিতে। করোনার থেকেও বিপজ্জনক বিজেপি। বিজেপি-র টিকা একটাই, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ডবল ডোজ দিতে হবে। পুর ভোটে প্রথম ডোজ, তার পর ১৩ মাস পরে বিধানসভা ভোটের সময় দ্বিতীয় ডোজ। বললেন অভিষেক।
আমার সঙ্গে সবার যোগাযোগ আছে। একটা সুইচ টিপলেই বিজেপি ভেঙে ১৫ জন বিধায়ক চলে আসবেন আমাদের দিকে। কিন্তু আমরা সেটা চাই না। ২০২৩ সালে বিজেপিকে উপড়ে ফেলাই লক্ষ্য। সেই লক্ষ্যে আমরা সফল হবই। মনে রাখবেন, ত্রিপুরার মানুষ যে দিন নিজের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবেন, সে দিনই বিজেপি খতম। বললেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
.@BjpBiplab is now BIG FLOP DEB!
— AITC Tripura (@AITC4Tripura) October 31, 2021
He has toyed with the sentiments of the people of Tripura and has proven himself to be a complete FAILURE when it comes to governance.#AbhishekBanerjeeInTripura pic.twitter.com/CjY8YmYybN
বাংলায় যে সমস্ত জনকল্যাণমুখী প্রকল্প আছে, ত্রিপুরায় তার সবক’টি চালু করবে তৃণমূলের সরকার। ডিসেম্বরে বিবেকানন্দ মাঠে সভা করবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০২৩ সালে আমরা বিজেপি-কে উপড়ে ফেলব। বিপ্লব দেবের ‘দুয়ারে গুন্ডা’ প্রকল্প চিরকালের জন্য বন্ধ করবে তৃণমূল। এখানে চালু হবে ‘দুয়ারে সরকার’, বললেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
আমাকে এত ভয় কেন বিপ্লববাবু? আমি তো আপনার চেয়ে বয়সে অনেকটাই ছোট। আমাকে শাস্তি দিতে গোটা রাজ্যে ১৪৪ ধারা জারি করছেন। কেন মানুষকে সমস্যার মধ্যে ফেলছেন? সভায় বললেন অভিষেক।
২০১৬ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর এখানেই সভা করে গিয়েছিলাম, আমার মনে আছে। কিন্তু দুই সভার মধ্যে পার্থক্য কী বলুন তো? গত বার বহু মানুষ এসেছিলেন, কিন্তু এ বার মাত্র ৫০০ লোক। ৫০০ মানুষ হয়তো সশরীরে, কিন্তু আমি জানি, ২০ লক্ষ মানুষ বাড়িতে বসে সভা শুনছেন। ছুটির দিনেই বিপ্লববাবুর ছুটি হয়ে গেল! বললেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
অভিষেক আসছে, বিপ্লব দেব কাঁপছে। আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে দিন ত্রিপুরায় প্রথম পা রাখবেন, সে দিনই ত্রিপুরায় বিজেপি-র উচ্ছেদ সম্পূর্ণ হবে, বললেন আজই তৃণমূলে ফেরা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়।
বিধানসভা ভোটের আগে যখন ডবল ইঞ্জিনের কথা বলতাম, আমাকে ত্রিপুরার আত্মীয়রা ফোন করে বলেছিলেন, ‘ভাই বড় ভুল করছ। ত্রিপুরায় আমরা অভিজ্ঞতা দিয়ে বুঝেছি ডবল ইঞ্জিনের যন্ত্রণা।’ আগরতলার সভায় বললেন রাজীব। পাশাপাশি তাঁর বক্তব্য, আমার মতো ভুল যেন দেশে আর কেউ না করে।
আমি কৃতজ্ঞতা জানাই নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। একটা অভিমানে, জেদের বশে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। আমি ভুল করেছিলাম। আমাকে ভুল বোঝানো হয়েছিল। নানা রকম স্বপ্ন দেখানো হয়েছিল। আমি লজ্জিত, অনুতপ্ত। তৃণমূলে ফিরে বললেন বিজেপি-র জাতীয় কর্মসমিতির অন্যতম সদস্য রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। একই সঙ্গে তৃণমূলে যোগ দিলেন ত্রিপুরার বিজেপি বিধায়ক আশিস দাস।
Electrifying energy in #Tripura! What an extraordinary, heart-warming welcome!#AbhishekBanerjeeInTripura pic.twitter.com/wvuPa3z7NE
— AITC Tripura (@AITC4Tripura) October 31, 2021
আগরতলার রবীন্দ্র ভবনের কাছে তৃণমূলের সভামঞ্চে পৌঁছে গেলেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর সঙ্গেই সভাস্থলে বিজেপি নেতা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। আজই আনুষ্ঠানিক ভাবে তৃণমূলে ফিরতে পারেন রাজীব।
আগামী দিনে ৫০ হাজার মানুষ নিয়ে জনসভা করবেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। আমি দেখতে চাই বিপ্লব দেব কী ভাবে আমাদের আটকান। আজ আদালতের নির্দেশ মেনে মাত্র ৪৫০টি চেয়ার রাখা হয়েছে। কিন্তু বহু দূর পর্যন্ত মানুষ অধীর অপেক্ষায় আছেন, অভিষেক কী বার্তা দেন। তাঁদের আটকানোর ক্ষমতা বিপ্লব দেবের সরকারের নেই। লড়াই শুরু হয়ে গিয়েছে।
ত্রিপুরার মানুষ অনেক বঞ্চনার শিকার হয়েছেন। প্রথমে সিপিএম, তার পর বিজেপি। এ বার সময় এসেছে বদলে ফেলার। তৃণমূল বিজেপি-র চোখে চোখ রেখে লড়াই করছে। এবং আমরা নিশ্চিত, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে আমরা ত্রিপুরাতেও তৃণমূল সরকার গঠন করব। ২৫ নভেম্বর পুর ভোট থেকে সেই লড়াই শুরু হবে।
রবিবারই তৃণমূলে যোগ দিতে পারেন ত্রিপুরায় বিজেপি বিধায়ক আশিস দাস। তিনি কিছু দিন আগেই বিজেপি ত্যাগ করেন। তৃণমূল সূত্রের খবর, রবিবারের সভায় অভিষেকের হাত থেকেই তৃণমূলের পতাকা তুলে নিতে পারেন আশিস।
সভার প্রস্তুতির জন্য ত্রিপুরায় রয়েছেন রাজ্যসভার সাংসদ সুস্মিতা দেব ও তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। ত্রিপুরায় তৃণমূল নেতাকর্মীদের উপর ধারাবাহিক আক্রমণের প্রতিবাদে আগরতলায় রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবন সংলগ্ন রাস্তায় জনসভা অভিষেকের। এই উপলক্ষে গোটা এলাকা মমতা ও অভিষেকের পোস্টারে ঢেকে ফেলা হয়েছে।
সভার প্রস্তুতির মধ্যেই আগরতলায় হাজির হয়েছেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলার প্রাক্তন মন্ত্রী বিজেপি-তে থেকেও নিষ্ক্রিয়। ভোটে পরাজয়ের পর আর তাঁকে দেখা যায়নি গেরুয়া শিবিরের কোনও কর্মসূচিতে। জল্পনা, এই সভায় অভিষেকের হাত ধরে তৃণমূলে ফিরতে পারেন তিনি।
বেলা ১টা নাগাদ আগরতলায় অভিষেকের জনসভা। সেই জনসভা ঘিরে সাজ সাজ রব ত্রিপুরা তৃণমূলের কর্মিমহলে।