Supreme Court

কেউ অসুস্থ, কারও ছেলের বিয়ে! জেলে ফিরতে সময় চেয়ে সুপ্রিম কোর্টে আর্জি গুজরাতের সেই দোষীদের

গত ৮ জানুয়ারি সুপ্রিম কোর্ট জানায়, ১১ জন ধর্ষককে মুক্তির যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল গুজরাত সরকার, তা এক্তিয়ার-বহির্ভূত। ১১ জনকেই দু’সপ্তাহের মধ্যে জেলে ফেরার নির্দেশ দেয় শীর্ষ আদালত।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০২৪ ১১:৪৪
Three Convicts of Bilkis Bano case move Supreme Court to seeking extension time of surrender

খুন এবং গণধর্ষণে দোষী সাব্যস্ত ১১ জন। —ফাইল চিত্র।

কেউ ‘অসুস্থ’। কারও আবার ‘ছেলের বিয়ে’। আর এক জনের বক্তব্য, ‘শীতের ফসল কাটতে যাবেন’! এই সব যুক্তি সাজিয়েই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হলেন গুজরাত হিংসায় খুন এবং গণধর্ষণে দোষী সাব্যস্ত হওয়া ১১ জনের মধ্যে তিন জন। তিন জনেরই আর্জি তাঁদের জেলে ফিরতে আরও একটু সময় দেওয়া হোক। বৃহস্পতিবার মামলাটি নথিবদ্ধ হওয়ার পর শুক্রবার বিষয়টি শুনতে রাজি হয়েছে সর্বোচ্চ আদালত।

Advertisement

গত ৮ জানুয়ারি সুপ্রিম কোর্ট জানায়, ওই ১১ জন ধর্ষককে মুক্তির যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল গুজরাত সরকার, তা এক্তিয়ার-বহির্ভূত। বিচারপতি বিভি নাগরত্ন এবং বিচারপতি উজ্জ্বল ভুয়ানের পর্যবেক্ষণ ছিল, জালিয়াতি করে ধর্ষকদের মুক্তি দেওয়া হয়েছিল। কারণ ধর্ষকদের মুক্তি দেওয়া সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার এক্তিয়ারই ছিল না গুজরাত সরকারের। একই সঙ্গে শীর্ষ আদালত নির্দেশ দেয় যে, খুন এবং ধর্ষণে দোষী সাব্যস্ত হওয়া ১১ জনকেই দু’সপ্তাহের মধ্যে জেলে ফিরে যেতে হবে। করতে হবে আত্মসমর্পণ।

প্রথমে ১১ জনের মধ্যে গোবিন্দভাই নাই সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়ে আর্জি জানান যে, তাঁকে আত্মসমর্পণ করতে চার সপ্তাহ সময় দেওয়া হোক। যুক্তি হিসাবে তিনি জানান, তিনি নিজে শারীরিক ভাবে অসুস্থ। তাঁর একটি অস্ত্রোপচার হয়েছে। আর একটি নাকি হওয়ার কথা। তা ছাড়া গোবিন্দভাই দাবি করেন যে, তাঁর বাবা শয্যাশায়ী হওয়ায় বাড়ির সব কাজ করতে হয় তাঁকে।

দোষী সাব্যস্ত হওয়া ১১ জনের মধ্যে আর এক জন, রমেশ রূপাভাই চন্দনা জেলে ফেরত যাওয়ার জন্য আরও ছ’সপ্তাহ সময় চান। এ ক্ষেত্রে তাঁর যুক্তি, ছেলের বিয়ে। বিয়ের কাজে ব্যস্ত থাকায় তিনি এখনই আত্মসমর্পণ করতে পারছেন না বলে জানান রমেশ। রমেশের মতোই আর এক দোষী মিতেশ চিমনলাল আত্মসমর্পণ করার সময়সীমা ছ’সপ্তাহের জন্য বাড়িয়ে দেওয়ার আর্জি জানান। তাঁর আবার যুক্তি, শীতের ফসল কাটার কাজে ব্যস্ত তিনি। তাই সে কাজ মেটার পর জেলে ফেরত যেতে চান বলে জানান তিনি।

২০২২ সালের ১৫ অগস্ট ৭৬তম স্বাধীনতা দিবসে খুন এবং গণধর্ষণের মামলায় সাজাপ্রাপ্ত ১১ জনকে জেলে ‘ভাল আচরণ’ করার যুক্তি দিয়ে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় গুজরাত সরকার। তার আগে, মুক্তির জন্য আদালতে আবেদন জানিয়েছিলেন ধর্ষণের মামলায় সাজাপ্রাপ্ত ওই অপরাধীরা। সেই আবেদনের ভিত্তিতে গুজরাত সরকারকে সিদ্ধান্ত নিতে বলেছিল আদালত। বিজেপি শাসিত গুজরাত সরকার ১১ অপরাধীর মুক্তির পক্ষে সওয়াল করে। এর পরই ১১ জনকে ছাড়ার সিদ্ধান্তের কথা জানায় আদালত। সুপ্রিম কোর্টের ছাড়পত্রও মেলে। মুক্তির পর স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব ওই অপরাধীদের সংবর্ধনা দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ। ১১ জনের মুক্তির পরেই বিষয়টি নিয়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছিল দেশ জুড়ে। কেন মেয়াদ শেষের আগে ১১ জন ধর্ষক এবং খুনিকে ছাড়া হল, এ নিয়ে বিতর্ক বাধে।

Advertisement
আরও পড়ুন