Election Commission of India

গাফিলতি, নিরপেক্ষতার অভাব বরদাস্ত নয়, রেহাই নেই দলদাস হলে, ভোট নিয়ে কড়া বার্তা কমিশনের

ভোট-বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য অনুযায়ী, এ বারই প্রথম ওই অফিসারদের দফায় দফায় দিল্লিতে ডেকে পাঠিয়ে তাঁদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে কমিশন। তার মধ্যে এক দিন সাধারণ প্রশিক্ষণ।

Advertisement
চন্দ্রপ্রভ ভট্টাচার্য
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৫:৩৭
ECI

জাতীয় নির্বাচন কমিশন। —ফাইল চিত্র।

কড়া পদক্ষেপের হুঁশিয়ারি এবং পরীক্ষা— লোকসভা ভোটের আগে এ ভাবেই দেশের জেলাশাসক (ডিএম) এবং নির্বাচনী কাজের দায়িত্বপ্রাপ্ত অতিরিক্ত জেলাশাসকদের (এডিএম) প্রশিক্ষণ এবং করণীয় স্থির করে দিল জাতীয় নির্বাচন কমিশন। সূত্রের দাবি, ভোটে হিংসা ঠেকাতে নিরাপত্তার কৌশল আগের থেকে যে আরও কড়া এবং আঁটোসাঁটো হবে, সে ব্যাপারে স্পষ্ট ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, ভোট পরিচালনার প্রশ্নে নিরপেক্ষতার অভাব বা গাফিলতি যে বরদাস্ত করা হবে না, সেই মনোভাবও কমিশন স্পষ্ট করেছে।

Advertisement

ভোট-বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য অনুযায়ী, এ বারই প্রথম ওই অফিসারদের দফায় দফায় দিল্লিতে ডেকে পাঠিয়ে তাঁদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে কমিশন। তার মধ্যে এক দিন সাধারণ প্রশিক্ষণ। আর এক দিন থাকছে পরীক্ষা এবং মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের নির্দেশ-বার্তা। সূত্রের দাবি, পরীক্ষায় বাস্তব সমস্যা প্রশ্ন আকারে তুলে ধরা হচ্ছে। লিখতে হচ্ছে সমাধান। এই পরীক্ষায় ১০০ নম্বরের মধ্যে ৭৫ নম্বরকে ‘পাশ-মার্ক’ হিসেবে ধরা হয়েছে। যদিও পাশ না করলে কী হবে তা স্পষ্ট নয়। বস্তুত, ভোটার তালিকা সংশোধন থেকে গোটা ভোট পরিচালনা, পুরো বিষয়টি এই অফিসারেরা সামলান।

সূত্রের দাবি, দেশের প্রধান নির্বাচন কমিশনার যে বার্তা দিয়েছেন তাতে এটা স্পষ্ট যে, ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজ থেকেই সংশ্লিষ্ট অফিসারেরা তাঁদের নজরে আছেন। সেই কাজে কোনও ইচ্ছাকৃত খামতি বা গাফিলতি ধরা পড়লে, কড়া পদক্ষেপ থেকে কমিশন যে পিছপা হবে না, তা-ও কার্যত বুঝিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এক আধিকারিকের কথায়, “মৃত ভোটার, ‘ভুয়ো’ ভোটার, একই নামে একাধিক ব্যক্তির অস্তিত্ব বা একাধিক জায়গায় ভোটার তালিকায় থাকা কোনও ভোটারের নাম বাদ দিতে শুরু থেকে বলেছে কমিশন। নিয়মিত এ নিয়ে তথ্য চাইছে নির্বাচন সদন।’’

প্রশাসনিক পর্যবেক্ষকদের অনেকেই জানাচ্ছেন, ভোটার তালিকা নিয়ে বিরোধীরা বরাবরই সরব। তা ছাড়া ভোট পরিচালনার প্রশ্নে আধিকারিকদের একাংশের ভূমিকা এবং নিরপেক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তাঁরা। এ ক্ষেত্রে বিগত কয়েকটি নির্বাচনের অভিজ্ঞতাকে যেমন সামনে রাখা হয়, তেমনই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মতামতকেও গুরুত্ব দেন কমিশন-কর্তারা। আবার পঞ্চায়েত ভোট তাঁদের পরিচালনাধীন না হলেও (তা রাজ্য নির্বাচন কমিশনের এক্তিয়ারভুক্ত), তাতে আধিকারিকদের নিরপেক্ষতানিয়ে ওঠা প্রশ্ন এড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা নেই।

প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত আধিকারিকদের একাংশের অভিজ্ঞতা, আইনশৃঙ্খলা নিয়েও কমিশনের অবস্থান আগের থেকে বেশ কড়া। বিগত কয়েকটি বিধানসভা এবং লোকসভা ভোটের হিংসা-তথ্য যেমন নির্বাচন সদনের হাতে রয়েছে, তেমনই বিগত পঞ্চায়েত ভোটের হিংসার ঘটনাগুলিও কমিশনের পরিকল্পনা তৈরির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। আবার ভোটের সময় বাহিনী মোতায়েন নিয়েও রাজনৈতিক দল এবং ভোটারদের বক্তব্যকে গুরুত্ব দিচ্ছে কমিশন। গত বিধানসভা ভোটে প্রায় ১১০০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী ব্যবহার করেছিল কমিশন। আসন্ন লোকসভা ভোটে তার থেকেও বেশি বাহিনী এ রাজ্যে ব্যবহার করা হতে পারে বলে অনেকের অনুমান।

আরও পড়ুন
Advertisement