সুপ্রিম কোর্ট। ফাইল চিত্র।
জরুরি নির্দেশিকা জারি করে দেশের যাবতীয় সমাজমাধ্যম থেকে বিবিসির ‘বিতর্কিত’ তথ্যচিত্র সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার। কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেন আইনজীবী এমএল শর্মা। দেশের শীর্ষ আদালতকে এ বিষয়ে পদক্ষেপ করার আর্জি জানিয়ে তিনি বলেন তথ্যচিত্রটিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করার এই সিদ্ধান্ত ‘স্বেচ্ছাচারপ্রসূত’ এবং ‘অসাংবিধানিক’।
একই বিষয়ে আর একটি মামলা দায়ের করেন সাংবাদিক এন রাম এবং আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ। মামলাটির দ্রুত নিষ্পত্তি করার জন্য এটিকে দ্রুত শুনানির জন্য নির্দিষ্ট মামলার তালিকায় নথিবদ্ধ করার দাবি জানান আইনজীবী শর্মা। সুপ্রিম কোর্ট সূত্রের খবর, আগামী সোমবার মামলাটি শুনবে তিন বিচারপতির বেঞ্চ। এই বেঞ্চে থাকবেন প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়, বিচারপতি পিএস নরসীমহা এবং বিচারপতি জেবি পরদিওয়ালা।
আইনজীবী সিইউ সিংহ এই বিষয়ে আদালতে অভিযোগ জানিয়ে বলেন, “তথ্যপ্রযুক্তি আইনের জরুরি ক্ষমতা প্রয়োগ করে সমস্ত সমাজমাধ্যম থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে বিবিসির তথ্যচিত্রটি। দেশের বহু বিশিষ্ট মানুষ তথ্যচিত্রটি সমাজমাধ্যমে শেয়ার করার পর সেগুলো তুলে নেওয়া হয়। তথ্যচিত্রটি দেখাতে গিয়ে বাধার মুখে পড়েন দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারাও।”
কিছু দিন আগেই কেন্দ্রের তরফে বিবিসি-র তথ্যচিত্রের লিঙ্ক সমাজমাধ্যম থেকে তুলে নেওয়ার জন্য নির্দেশ জারি করা হয়েছিল। পাশাপাশি, আইটি রুলস ২০২১-এর জরুরি ক্ষমতা প্রয়োগ করে ৫০টির মতো টুইট তুলে নেওয়ার জন্যও কেন্দ্রীয় তথ্য ও প্রযুক্তি মন্ত্রকের তরফে নির্দেশ দেওয়া হয়। দু’দশক আগে গুজরাতের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জমানায় গোধরা-কাণ্ড এবং তার পরবর্তী সাম্প্রদায়িক হিংসার কথা তুলে ধরা হয়েছে এক ঘণ্টার ওই তথ্যচিত্রে। ‘ইন্ডিয়া-দি মোদী কোয়েশ্চেন’ তথ্যচিত্রটি নিয়ে শুরু থেকেই আপত্তি জানিয়ে আসছিল কেন্দ্রীয় সরকার। একে ‘অপপ্রচার’ আখ্যা দিয়ে দাবি করা হয়েছিল, ঔপনিবেশিক মানসিকতা থেকে তথ্যচিত্রটি তৈরি। যদিও বিবিসি দাবি করেছে, যথেষ্ট গবেষণা করে তথ্যচিত্রটি তৈরি করা হয়েছে। মোদী সরকারের ওই পদক্ষেপকে বিরোধী দলের নেতারা ‘সেন্সরশিপ’ আখ্যা দিয়েছেন।