Supreme Court on Sedition Law

ঘুরপথে রাষ্ট্রদ্রোহ আইন কার্যকর করছে কেন্দ্র? সুপ্রিম কোর্ট অভিযোগ পাঠাল সাংবিধানিক বেঞ্চে

ভারতীয় দণ্ডবিধিতে রাষ্ট্রদ্রোহ বিষয়ে একাধিক ধারার মধ্যে ১২৪(এ) নিয়েই সবচেয়ে বেশি বিতর্ক হয়েছে। অভিযোগ, ব্রিটিশ আমলের এই আইন ভারতীয় সংবিধানের বাক-স্বাধীনতার অধিকারের বিরোধী।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৬:১৯
Supreme Court refers pleas challenging validity of sedition law to bench of at least five judges

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে স্থগিত হয়ে থাকা ব্রিটিশ জমানার রাষ্ট্রদ্রোহ আইন খোলনলচে বদলে আবার চালু করতে সক্রিয় হয়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। গত মে মাসে শীর্ষ আদালতে কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়েছিল, ঔপনিবেশিক আইনের রাষ্ট্রদ্রোহ আইনের ধারা এবং সাজার বিধানগুলি পুনর্বিবেচনা করা হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে বিষয়টি বিবেচনার জন্য সংবিধান বেঞ্চে পাঠাল শীর্ষ আদালত। কেন্দ্রের তরফে এ বিষয়ে শুনানি পিছিয়ে দেওয়ার আবেদন জানানো হলেও প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির বেঞ্চ তা খারিজ করে দিয়েছে। জানিয়েছে, অন্তত পাঁচ বিচারপতিকে নিয়ে গঠিত সংবিধান বেঞ্চ বিষয়টির সাংবিধানিক বৈধতা যাচাই করবে।

Advertisement

এই মামলায় কেন্দ্রের তরফে অ্যাটর্নি জেনারেল আর ভেঙ্কটরমানি আগের শুনানিতে শীর্ষ আদালতকে জানিয়েছিলেন, ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২৪ ধারা-সহ রাষ্ট্রদ্রোহ আইনের আওতায় থাকা বিভিন্ন ধারাগুলি পরীক্ষা করার কাজ শুরু করেছে কেন্দ্র। সেই প্রক্রিয়া এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। ঔপনিবেশিক জমানার বিধানগুলির প্রয়োজনীয় বদল করা হতে পারে বলেও জানান তিনি।

এর পরে গত ১১ অগস্ট বাদল অধিবেশনের শেষ দিনে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ লোকসভায় তিনটি বিল পেশ করে জানান, ১৮৬০ সালে তৈরি ‘ইন্ডিয়ান পেনাল কোড’ (ভারতীয় দণ্ডবিধি) প্রতিস্থাপিত হবে ‘ভারতীয় ন্যয় সংহিতা’ দিয়ে। ১৮৯৮ সালের ‘ক্রিমিনাল প্রসিডিওর অ্যাক্ট’ (ফৌজদারি দণ্ডবিধি) প্রতিস্থাপিত হবে ‘ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা’ দ্বারা এবং ১৮৭২ সালের ‘ইন্ডিয়ান এভিডেন্স অ্যাক্ট’ (ভারতীয় সাক্ষপ্রমাণ আইন) প্রতিস্থাপিত হবে ‘ভারতীয় সাক্ষ্য বিল’-এ। তার পরেই বিল তিনটি সংসদীয় স্ট্যান্ডিং কমিটির কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

সেই সঙ্গে প্রস্তাবিত নয়া আইনে দেশদ্রোহ বা রাষ্ট্রদ্রোহের চিরাচরিত আইনটি আর থাকছে না বলেও শাহ জানিয়ে দিয়েছেন। ইন্ডিয়ান পেনাল কোডের ১২৪এ ধারায় রাষ্ট্রদ্রোহের ধারা ছিল, তা বাতিল করা হচ্ছে। যদিও নতুন বিলে উল্লেখ রয়েছে, ভারতের সার্বভৌমত্ব, একতা এবং অখণ্ডতাকে বিপন্ন করে এমন কাজ করলে যথোচিত শাস্তি হবে। বিলে সেকশন ১৫০-য় সেই সংস্থান রাখা হয়েছে। সেই বিল কার্যক্ষেত্রে ঔপনিবেশিক জমানার রাষ্ট্রদ্রোহ আইনের তুলনায় বেশি ‘আগ্রাসী’ বলে অভিযোগ উঠেছে ইতিমধ্যেই। আবেদনকারী পক্ষের অভিযোগ, ২১৪(এ)-র মতোই প্রস্তাবিত নয়া আইনও সংবিধানের ১৯(১)(এ), ১৪ এবং ২১ নম্বর অনুচ্ছেদের পরিপন্থী। ১৯৬২ সালে শীর্ষ আদালত জানিয়েছিল ২১৪(এ) ধারাটি সংবিধানের ১৯(১)(এ) অনুচ্ছেদ লঙ্ঘন করছে না। প্রধান বিচারপতির বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, নয়া পরিস্থিতিতে পুরো বিষয়টিতে নতুন ভাবে পর্যালোচনা করা প্রয়োজন। পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ সেই বিচার করবে।

আরও পড়ুন
Advertisement