Enforcement Directorate

ইডি ডিরেক্টর সঞ্জয়ের মেয়াদ বাড়ানোর আর্জি আবার মেনে নিল সুপ্রিম কোর্ট, কারণ ‘জনস্বার্থ’

ইন্ডিয়ান রেভিনিউ সার্ভিস (আইআরএস)-এর অফিসার সঞ্জয়কুমার মিশ্রকে ২০১৮ সালে প্রথম বার ইডির ডিরেক্টর পদে নিয়োগ করা হয়েছিল। সে বার দু’বছরের জন্য তাঁকে ওই দায়িত্ব দিয়েছিল কেন্দ্র।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২৩ ১৭:৩২
Supreme Court extends ED Director Sanjay Kumar Mishra’s term till 15 September 2023

এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-এর প্রধান সঞ্জয়কুমার মিশ্র। ফাইল চিত্র।

এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)র ডিরেক্টর পদে সঞ্জয়কুমার মিশ্রের মেয়াদবৃদ্ধির জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের আর্জি মেনে নিল সুপ্রিম কোর্ট। বিচারপতি আরএস গাভাইয়ের নেতৃত্বাধীন শীর্ষ আদালতের বেঞ্চ, বৃহস্পতিবার কেন্দ্রের কৌঁসুলি, সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতার আবেদনে সাড়া দিয়ে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাটির শীর্ষ পদে সঞ্জয়ের মেয়াদ আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বৃদ্ধির প্রস্তাবে সায় দিয়েছে। নির্দেশে বলা হয়েছে জনস্বার্থেই এই পদক্ষেপ।

এই নিয়ে চতুর্থ বার ইডির ডিরেক্টর পদে মেয়াদ বাড়ল সঞ্জয়ের। যদিও গত ১১ জুলাই তৃতীয় বার মেয়াদ বৃদ্ধি করা নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশকে অবৈধ বলে রায় দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। এ ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্টের ২০২১ সালের নির্দেশকে অমান্য করা হয়েছে বলে পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছিল। সেই সঙ্গে শীর্ষ আদালত জানিয়েছিল, ইডির ডিরেক্টর হিসাবে চলতি মাসের শেষ দিন অর্থাৎ ৩১ জুলাই পর্যন্ত বহাল থাকতে পারবেন সঞ্জয়। কিন্তু আবার তাঁর মেয়াদ বৃদ্ধির প্রস্তাব মেনে নিল সুপ্রিম কোর্ট। বুধবার কেন্দ্রের পক্ষে সলিসিটর জেনারেল মেহতা বিচারপতি গাভাইয়ের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে ওই আবেদন জানিয়েছিলেন। ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই মঞ্জুর হল ‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ঘনিষ্ঠ’ বলে পরিচিত ওই বিতর্কিত আধিকারিকের মেয়াদ বৃদ্ধির আবেদন।

Advertisement

ইন্ডিয়ান রেভিনিউ সার্ভিসের অফিসার সঞ্জয়কুমার মিশ্রকে ২০১৮ সালে প্রথম বার এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-এর ডিরেক্টর পদে নিয়োগ করা হয়েছিল। সে বার দু’বছরের জন্য তাঁকে ওই দায়িত্ব দিয়েছিল কেন্দ্র। এর পর ২০২০ সালে তাঁর মেয়াদ আরও এক বছর বৃদ্ধি করা হয়। এর পর সেই নির্দেশ কার্যকর করার জন্য ২০১৮ সালের নিয়োগের পুরনো নির্দেশিকা সংশোধন করে ওই দু’বছরের নিয়োগকে বাড়িয়ে তিন বছর করা হয়েছিল।

ইডির ডিরেক্টর হিসাবে পর পর তিন বার সঞ্জয়ের মেয়াদ বৃদ্ধি নিয়ে কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে একাধিক আবেদন জমা পড়েছিল। যদিও শীর্ষ আদালতের শুনানির সময় কেন্দ্রীয় সরকারের যুক্তি ছিল আর্থিক দুর্নীতির বহু গুরুত্বপূর্ণ মামলার তদন্তে জড়িত রয়েছে ইডি। ফলে সে সব তদন্তের স্বার্থেই ডিরেক্টর হিসাবে সঞ্জয়ের কার্যকালের মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়েছে। তবে ২০২১ সালে সেপ্টেম্বরে মামলাগুলির শুনানিতে শীর্ষ আদালত জানিয়েছিল, ওই তদন্তগুলির স্বার্থে অবসরের পরেও সঞ্জয়ের কার্যকালের মেয়াদ কিছু সময়ের জন্য বৃদ্ধি করা যেতে পারে। তবে তার পর মেয়াদ বৃদ্ধি করা যাবে না।

ঘটনাচক্রে, ২০২১ সালের নভেম্বরে সেন্ট্রাল ভিজিল্যান্স কমিশন আইন এবং দিল্লি স্পেশাল পুলিশ এস্টাবলিশমেন্ট আইনে সংশোধন করে কেন্দ্রীয় সরকার। সংশোধিত বিধিতে বলা হয়েছিল, সরকার চাইলে সিবিআই প্রধান এবং ইডি ডিরেক্টরের কার্যকালের মেয়াদ তিন বছরের জন্য বৃদ্ধি করতে পারে। সংশোধিত বিধির বিরোধিতা করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন কংগ্রেস নেতা রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা, তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র-সহ কয়েক জন বিরোধী নেতা-নেত্রী।

এ বিষয়ে সলিসিটর জেনারেলের যুক্তি ছিল, ‘‘ওই আধিকারিক (সঞ্জয়কুমার মিশ্র) কোনও রাজ্যের ডিজিপি নন। ইনি এমন এক আধিকারিক, যিনি রাষ্ট্রপুঞ্জের মতো একটি সংস্থার প্রতিনিধিত্ব করছেন। এতে আদালতের হস্তক্ষেপ করা উচিত নয়।’’ সেই সঙ্গে শীর্ষ আদলতে তিনি বলেন, ‘‘আর্থিক তছরুপের বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ মামলার তদন্তের দায়িত্বে রয়েছেন সঞ্জয়। রাষ্ট্রের স্বার্থেই তাঁকে প্রয়োজন। তবে ২০২৩ সালের নভেম্বরের পর থেকে তিনি ওই পদে থাকবেন না।’’ কিন্তু তিন বছরের মেয়াদ বৃদ্ধিতে সে সময় সায় দেয়নি শীর্ষ আদালত। বৃহস্পতিবার বিচারপতি গাভাই বলেন, ‘‘কোনও অবস্থাতেই ১৫ সেপ্টেম্বরের পরে সঞ্জয়কুমার মিশ্রকে ইডির ডিরেক্টর পদে রাখা যাবে না।’’

আরও পড়ুন
Advertisement