Parliament Of India

স্পিকার কে, চর্চা তুঙ্গে রাজধানীতে

রাজনৈতিক শিবিরের হাওয়ায় ওম বিড়লার নামটি ভাসছিলই। মন্ত্রিসভার ক্ষেত্রে নরেন্দ্র মোদী যে ধারাবাহিকতার নীতি নিয়েছেন, অষ্টাদশ লোকসভার স্পিকারের পদে সেই ধারাবাহিকতার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না বলে মনে করছে বিরোধী শিবিরও।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৫ জুন ২০২৪ ০৭:৪১
বুধবার অষ্টাদশ লোকসভার স্পিকার নির্বাচন।

বুধবার অষ্টাদশ লোকসভার স্পিকার নির্বাচন। —ফাইল চিত্র।

বুধবার অষ্টাদশ লোকসভার স্পিকার নির্বাচন। মঙ্গলবার ১২টার মধ্যে স্পিকারের পদের জন্য মনোনয়ন জমা দিতে হবে। বিজেপি সূত্রের খবর, আগামিকাল বিজেপি-র পক্ষ থেকে স্পিকার পদের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করা হবে। রাজধানীতে জোর জল্পনা, কে হতে চলেছেন আগামী পাঁচ বছরের জন্য লোকসভার স্পিকার? বিরোধী মঞ্চ ‘ইন্ডিয়া’র পক্ষ থেকে কেই-বা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন ওই পদে?

Advertisement

এই পরিপ্রেক্ষিতেই আজ একটি তাৎপর্যপূর্ণ পদক্ষেপ করতে দেখা যায় কংগ্রেসের চণ্ডীগড়ের সাংসদ মণীশ তিওয়ারিকে। তিনি শপথ নেওয়ার পরে নেমে নিজের আসনের দিকে যাওয়ার পথে ট্রেজ়ারি বেঞ্চে বসা পূর্বতন স্পিকার ওম বিড়লার সামনে থেমে যান। দেখা যায়, হাত নাড়িয়ে স্পিকারের চেয়ারের দিকে ইঙ্গিত করে কিছু বলছেন তিনি। জবাবে হাস্যবদনে বিড়লাও মাথা নাড়েন।

রাজনৈতিক শিবিরের হাওয়ায় ওম বিড়লার নামটি ভাসছিলই। মন্ত্রিসভার ক্ষেত্রে নরেন্দ্র মোদী যে ধারাবাহিকতার নীতি নিয়েছেন, অষ্টাদশ লোকসভার স্পিকারের পদে সেই ধারাবাহিকতার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না বলে মনে করছে বিরোধী শিবিরও। বিড়লা নিজেও রাজস্থানের কোটা লোকসভা কেন্দ্র থেকে জেতার পরে সেখানকার সরকারি কর্তাদের সঙ্গে ঘরোয়া ভাবে বৈঠক করেছেন। তাঁদের জানিয়েছেন, যোজনাগুলির কাজ এগিয়ে নিয়ে যেতে, টাকা পাওয়া নিয়ে কোনও চিন্তা তাঁদের করতে হবে না। সংসদ অধিবেশন শুরু হলে তিনি সংশ্লিষ্ট সমস্ত মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে কোটার উন্নয়নের জন্য যা প্রয়োজন তার ব্যবস্থা করবেন। তাঁর এই আত্মবিশ্বাসী ভূমিকার পাশাপাশি আজ মণীশ তিওয়ারির স্পিকারের চেয়ারের দিকে অঙ্গুলি নির্দেশের ঘটনায় জল্পনা আরও বেড়েছে। তবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী শেষ মুহূর্তে চমকে বিশ্বাসী। ফলে স্পিকার পদে অন্য কাউকে দেখা গেলেও অবাক হওয়ার কিছু নেই বলেই মনে করছে রাজনৈতিক শিবির। বিজেপি-র প্রবীণ নেতা ও প্রাক্তন মন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদের নামও উঠে এসেছে স্পিকার পদে। বিজেপি শিবিরের একাংশের ধারণা প্রাক্তন এই আইনমন্ত্রী কড়া হাতে লোকসভা সামলাতে পারবেন।

অন্য দিকে ‘ইন্ডিয়া’ শিবিরের একটি বড় অংশের মতে, স্পিকার পদে প্রার্থী না দেওয়াই সমুচিত, কারণ জয়ের কোনও সম্ভাবনা নেই। লোকসভা নির্বাচনে ‘চারশো পারের’ স্লোগানের পরে মোদীর মুখ পুড়েছে। তৈরি হয়েছে বিরোধীদের ইতিবাচক রণংদেহি ভাবমূর্তি। এমতাবস্থায় হারা ম্যাচ লড়ে বিরোধী মনোবলে ধাক্কা লাগুক এমনটা চায় না ইন্ডিয়ার অন্যতম শরিক দল তৃণমূল। তবে সূত্রের খবর, এ ব্যাপারে চিন্তাভাবনা চলছে, কংগ্রেসই শেষ কথা বলবে। তবে আরএসপি সাংসদ এন কে প্রেমচন্দ্রন আজ বলেন, ‘‘সরকার স্পিকার পদে সর্বসম্মত প্রার্থী দেওয়ার চেষ্টা না করলে বিরোধীরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।’’

অন্য দিকে, অষ্টাদশ লোকসভার প্রথম দিন থেকেই বিরোধিতার পথে হাঁটার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিরোধী মঞ্চ ইন্ডিয়া। এনডিএ জোট বিজেপি সাংসদ ভর্তৃহরি মহতাবকে প্রোটেম স্পিকার করার সিদ্ধান্তে অনড় থাকায় পাল্টা পদক্ষেপে প্রোটেম স্পিকারের প্যানেলে নাম থাকা তিন বিরোধী সাংসদ নিজেদের দায়িত্ব পালন না করার সিদ্ধান্ত নেন। আজ লোকসভায় উপস্থিত সাংসদদের মধ্যে সবার আগে নাম ডাকা হয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর। তার পরে স্পিকারের প্যানেলে নাম থাকা তিন বিরোধী সাংসদ কংগ্রেসের কে সুরেশ, ডিএমকে-র টি আর বালু ও তৃণমূলের সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম শপথ গ্রহণের জন্য ডাকা হয়। দেখা যায় ওই তিন সাংসদই লোকসভায় সে সময়ে অনুপস্থিত রয়েছেন। পরে সুরেশ প্রোটেম স্পিকারের দফতরে চিঠি দিয়ে জানান, যে সাংসদ সবচেয়ে বেশি বার জিতে এসেছেন তাঁকেই সাধারণত প্রোটেম স্পিকারের পদ দেওয়া হয়ে থাকে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে শাসক শিবির সেই প্রথা ভেঙেছে। তাই প্রোটেম স্পিকারের প্যানেল সদস্য হিসেবে তাঁরা সহযোগিতা না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। আজ অধিবেশন শুরুর আগে, কে সুরেশকে প্রোটেম স্পিকার করার দাবি জানিয়ে কেন্দ্রীয় সংসদীয় মন্ত্রী কিরেণ রিজিজুর সঙ্গে সমাজমাধ্যমে এক প্রস্থ বাগবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়েন কংগ্রেসের মুখপাত্র জয়রাম রমেশ।

আরও পড়ুন
Advertisement