One Nation One Election

‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ কার্যকরে আরও এক ধাপ এগোল কেন্দ্র! মোদীর মন্ত্রিসভা দিল অনুমোদন

বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় সবুজ সঙ্কেত দেওয়া হয়েছে এই নীতিতে। সূত্রের খবর, সংসদের চলতি শীতকালীন অধিবেশনেই এই বিষয়ে বিল পেশ করতে পারে কেন্দ্র।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
শেষ আপডেট: ১২ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৪:৫৯
‘এক দেশ, এক ভোট’ নীতি বাস্তবায়নের জন্য আরও এক ধাপ এগোল কেন্দ্র।

‘এক দেশ, এক ভোট’ নীতি বাস্তবায়নের জন্য আরও এক ধাপ এগোল কেন্দ্র। — ফাইল চিত্র।

‘এক দেশ, এক ভোট’ নীতি কার্যকর করার পথে আরও এক ধাপ এগোল কেন্দ্র। বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় সবুজ সঙ্কেত দেওয়া হয়েছে এই নীতিতে। সূত্রের খবর, সংসদের চলতি শীতকালীন অধিবেশনেই এই বিষয়ে বিল পেশ করতে পারে কেন্দ্র। ‘এক দেশ, এক ভোট’ চালু করার জন্য বুধবারও জোরদার সওয়াল করেছেন কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহান। ঘন ঘন নির্বাচন হওয়ার কারণে দেশের উন্নয়নে বাধা সৃষ্টি হচ্ছে বলে মনে করছেন তিনি।

Advertisement

‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ ব্যবস্থা চালু করার বিষয়ে বিজেপি অনেক দিন ধরেই আগ্রহী। লোকসভা ভোটের আগে বিজেপির নির্বাচনী ইস্তাহারেও এ বিষয়ে জোর দেওয়া হয়। এই নিয়ম কার্যকর হলে সারা দেশে একসঙ্গে লোকসভা, বিধানসভা নির্বাচনের আয়োজন করবে জাতীয় নির্বাচন কমিশন।

‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ ব্যবস্থা চালুর ব্যাপারে মোদী সরকারের যুক্তি, এই ব্যবস্থা চালু হলে ভোট প্রক্রিয়ার জন্য যে বড় অঙ্কের খরচ হয়, তা কমে যাবে। ভোটের আদর্শ আচরণবিধির জন্য বার বার সরকারের উন্নয়নমূলক কাজ থমকে থাকবে না এবং তার সঙ্গে সরকারি কর্মীদের উপর থেকেও ভোটার তালিকা তৈরি ও ভোট সংক্রান্ত নানা কাজকর্মের চাপ কমবে।

এই নিয়ম কার্যকর করতে অনেক দিন ধরেই একটু একটু করে পদক্ষেপ করতে শুরু করে কেন্দ্র। ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ ব্যবস্থা এ দেশে চালু হলে, তা কতটা বাস্তবসম্মত হবে— সে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে একটি কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির নেতৃত্বে ছিলেন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। গত মার্চ মাসে কোবিন্দের নেতৃত্বাধীন কমিটি রাষ্ট্রপতি ভবনে গিয়ে দ্রৌপদী মুর্মুর কাছে একটি রিপোর্ট জমা দেয়। সূত্রের খবর, ওই রিপোর্টে একই সঙ্গে একাধিক দফায় লোকসভা এবং বিধানসভা ভোট করানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি পঞ্চায়েত এবং পুরসভা ভোটের মতো আঞ্চলিক নির্বাচনগুলিও ওই একই সময়ে করানোর কথা বলা হয়েছে।

যদিও একসঙ্গে সব নির্বাচন করার ব্যবস্থা নিয়ে শুরু থেকেই আপত্তি জানিয়ে আসছে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি। বিরোধীদের পাল্টা যুক্তি, এই নীতি আসলে দেশের যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামো এবং সংসদীয় গণতন্ত্রের পরিপন্থী। ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ নীতির মাধ্যমে কেন্দ্রীয় সরকার ঘুরপথে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের মতো একটি ব্যবস্থা চালু করতে চাইছে বলে মনে করছেন বিরোধী নেতৃত্বরা। সেই আবহেই এ বার সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে পেশ হতে পারে ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ বিল।

কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ বিলে অনুমোদনের পর আবারও এটির বিরোধিতায় সরব হয়েছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই বিলকে অসাংবিধানিক এবং যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোর পরিপন্থী বলে ব্যাখ্যা করে সমাজমাধ্যমে পোস্ট করেছেন তিনি। বিরোধী নেতৃত্বের এবং বিশেষজ্ঞরা এই নির্বাচন ব্যবস্থা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলেও, সেটিও কেন্দ্র গুরুত্ব দিচ্ছে না বলে অভিযোগ মমতার। তৃণমূলের সাংসদেরা সংসদে এই বিলের বিরোধিতা করবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্তের বিরোধিতায় সমাজমাধ্যমে পোস্ট মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের।

কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্তের বিরোধিতায় সমাজমাধ্যমে পোস্ট মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের। ছবি: এক্স।

সূত্রের খবর, এই বিলটি নিয়ে বিভিন্ন ধরনের চর্চা হতে পারে— তা আঁচ করে আগাম পরিকল্পনাও সেরে নিয়েছে কেন্দ্র। তাই এটি নিয়ে আলোচনার পথ খোলা রাখতে চাইছে কেন্দ্রীয় সরকার। সে ক্ষেত্রে ‘এক দেশ, এক নির্বাচন’ বিলটি খতিয়ে দেখতে যৌথ সংসদীয় কমিটিতে (জেপিসি) পাঠানোর কথাও ভাবছে তারা। সেখানে আলোচনার মাধ্যমে একটি ঐকমত্য তৈরির চেষ্টা করতে পারে কেন্দ্র।

Advertisement
আরও পড়ুন