— প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
চরণামৃতে ‘বিষ’ মিশিয়ে খাইয়ে পর পর ১২টি খুন করেছিলেন! এ বার পুলিশ হেফাজতে মৃত্যু হল অভিযুক্ত সেই তান্ত্রিকের। রবিবার গুজরাতের সরখেজ এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে। রবিবার সকালে পুলিশ হেফাজতে থাকাকালীন শারীরিক অবস্থার অবনতি হয় তাঁর। তড়িঘড়ি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও শেষ রক্ষা হয়নি।
গুজরাত পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, চলতি মাসের শুরুতে এক ব্যক্তিকে খুনের ঘটনায় ওই তান্ত্রিককে গ্রেফতার করা হয়েছিল। পরে জেরার মুখে আরও ১২টি খুনের কথা স্বীকার করে নেন ধৃত। আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁকে আগামী ১০ তারিখ পর্যন্ত হেফাজতে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল পুলিশ। কিন্তু রবিবার সকালে অভিযু্ক্ত আচমকাই অসুস্থ হয়ে পড়েন। দ্রুত অ্যাম্বুল্যান্স ডেকে তাঁকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু তত ক্ষণে দেরি হয়ে গিয়েছে। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃতের নাম নাভাল সিংহ চাভদা। গত ৩ ডিসেম্বর তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তাঁর বিরুদ্ধে তন্ত্রসাধনার নামে লোক ঠকানো এবং নরবলির মতো নানা গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগ, তন্ত্রসাধনার স্বার্থে একাধিক খুনও করেছেন ওই তান্ত্রিক! সম্প্রতি চরণামৃতে বিষাক্ত রাসায়নিক মিশিয়ে খাইয়ে আরও এক ব্যক্তিকে খুনের চেষ্টা করেছিলেন নাভাল। সে সময়েই পুলিশের হাতে ধরা পড়ে যান। পরে জেরায় জানা যায়, একই পদ্ধতিতে আরও ১২টি খুন করেছেন তিনি।
পুলিশের ডেপুটি কমিশনার শিবম বর্মা সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ‘শিকার’-দের জলের সঙ্গে সোডিয়াম নাইট্রাইট নামের বিষাক্ত রাসায়নিক মিশিয়ে খাওয়াতেন ওই তান্ত্রিক। এর কিছু ক্ষণের মধ্যেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়তেন তাঁরা। তার পর মৃতদেহগুলি তন্ত্রসাধনার প্রয়োজনে ‘উৎসর্গ’ করতেন। এই ভাবে আমদাবাদে এক জন, সুরেন্দ্রনগরে ছ’জন, রাজকোটে তিন জন, ওয়াঙ্কানের এক জন এবং আনজারের এক জনকে খুন করেছেন ওই তান্ত্রিক। সুরেন্দ্রনগরের একটি পরীক্ষাগার থেকে সোডিয়াম নাইট্রাইট কিনতেন নাভাল। সোডিয়াম নাইট্রাইট সাধারণত ড্রাই ক্লিনিংয়ের কাজে ব্যবহার হয়। কিন্তু বিষাক্ত এই রাসায়নিক খাবারের সঙ্গে শরীরে চলে গেলে ২০ মিনিটের মধ্যে মৃত্যু হতে পারে। ঘটনায় এখনও তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। পর পর ১২টি খুনের ঘটনায় ওই তান্ত্রিক ছাড়া আরও কেউ জড়িত রয়েছেন কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।