এই ধরনের খবরের ক্ষেত্রে আসল ছবি প্রকাশে আইনি নিষেধাজ্ঞা থাকে। —প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
মানসিক অবসাদ থেকেই কি আড়াই বছরের শিশুকন্যাকে খুন করে আত্মঘাতী হলেন মা? বর্ধমান শহরের ক্ষুদিরাম কলোনিতে এক শিশুকন্যার মৃত্যর কারণ নিয়ে তৈরি হয়েছে ধোঁয়াশা। আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মহিলা। পুলিশের নজরে রয়েছে মৃত শিশুর বাবাও!
ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার রাতে বর্ধমান শহরের পাঁচ নম্বর ইছলাবাদের ক্ষুদিরাম কলোনিতে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই কলোনিতেই স্ত্রী এবং কন্যাকে নিয়ে ভাড়া থাকতেন বিধান হাজরা নামে এক ব্যক্তি। বিধান এক দৈনিক পত্রিকায় কাজ করেন। তাঁর বাড়ি বাঁকুড়ার ইন্দাসে। কর্মসূত্রে থাকতেন বর্ধমানে। বৃহস্পতিবার রাতে বিধানের স্ত্রী শ্রাবন্তী এবং শিশুকন্যার চিৎকার শুনে ছুটে যান প্রতিবেশীরা। তখন বিধানও বাড়িতে ছিলেন। প্রতিবেশীরা দেখেন, ঘরের মধ্যে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন মা এবং মেয়ে। বিধান প্রতিবেশীদের জানান, শ্রাবন্তী তাঁদের কন্যাকে প্রথমে আঘাত করেন। তার পর নিজে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। তাঁকে আটকানোর চেষ্টা করেছিলেন বলে দাবি করেন বিধান।
তবে পুরো বিষয়টি শোনার পর প্রতিবেশীরাই আহত অবস্থায় দু’জনকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালে নিয়ে যান। চিকিৎসকেরা পরীক্ষা করে শিশুটিকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় চিকিৎসা চলছে শ্রাবন্তীর। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে বর্ধমান থানার পুলিশ। কী ঘটেছিল জানতে তদন্ত শুরু করেছে তারা। বিধানকে এক দফা জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন তদন্তকারীরা। বর্ধমানের পুলিশ সুপার সায়ক দাস জানান, পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। একে বারে প্রাথমিক পর্যায়ে তদন্ত রয়েছে। বিধানকেও গোটা ঘটনায় সন্দেহের বাইরে রাখছে না পুলিশ।
যদিও পুলিশের এক আধিকারিক জানান, হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শ্রাবন্তীকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। যা তথ্য উঠে এসেছে, তাতে মনে করা হচ্ছে অবসাদেই এমন ঘটনা ঘটিয়েছেন শ্রাবন্তী। জানা গিয়েছে, নিজের মেয়েকে নিয়ে অনেক আশা ছিল তাঁর। কিন্তু পড়াশোনা-সহ নানা বিষয়েই পিছিয়ে পড়ছিল আড়াই বছরের শিশু। শ্রাবন্তীর সঙ্গে বলার পর তদন্তকারীদের মনে হচ্ছে, মেয়েকে নিয়ে দেখা স্বপ্নপূরণ হচ্ছে না, এমন অবসাদ থেকেই শ্রাবন্তী প্রথমে নিজের মেয়ের হাতের শিরা কাটেন। তার পর নিজেও একই ভাবে শিরা কেটে আত্মাঘাতী হওয়ার চেষ্টা করেন। তবে এই ঘটনার নেপথ্যে অন্য কোনও কারণ রয়েছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। শুক্রবার সন্ধ্যায় বর্ধমান থানায় স্ত্রীর বিরুদ্ধে শিশু খুনের অভিযোগ দায়ের করেছেন বিধান।