বসুন্ধরা রাজে। —ফাইল চিত্র।
পাঁচ রাজ্যে ভোটের ফল ঘোষণা হয়ে গিয়েছে এক সপ্তাহ হতে চলল। তেলঙ্গানায় সরকার গঠন করে ফেলেছে কংগ্রেস, মিজোরামে জ়েডপিএম। রবিবার বিকেলে ছত্তীসগঢ়ের নতুন মুখ্যমন্ত্রীর নাম চূড়ান্ত করেছে বিজেপিও। কিন্তু এখনও রাজস্থান এবং মধ্যপ্রদেশে মুখ্যমন্ত্রীদের নাম ঘোষণা করেনি বিজেপি। বিরোধীদের টিপ্পনী, ঘরোয়া কোন্দলের ভয়ে করতে পারেনি। এই আবহেই বিজেপির বর্তমান এবং প্রাক্তন বিধায়কদের একাংশকে নিয়ে বৈঠকে বসলেন রাজস্থানের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বসুন্ধরা রাজে সিন্ধিয়া।
সংবাদ সংস্থা এএনআই সূত্রে খবর, রবিবার দুপুরে নিজের বাসভবনেই বিধায়কদের একাংশকে নিয়ে বৈঠক করেন বসুন্ধরা। অনেকেই মনে করছেন, মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সি পাওয়ার জন্য দলের উপর চাপ বৃদ্ধি করতেই অনুগত বিধায়কদের নিয়ে ঘুঁটি সাজাচ্ছেন ‘ঢোলপুরের রানি’।
জয়পুরের কুর্সিতে আগামী পাঁচ বছরের জন্য কে বসতে চলেছেন, তা নিয়ে নানা জল্পনা কল্পনা রয়েছে। বিজেপির অন্দর থেকেই গুঞ্জন যে বাবা বালকনাথ মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন। লড়াইয়ে রয়েছেন বেশ কয়েক জন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীও। রাজ্যবর্ধন সিংহ রাঠৌর এবং দিয়া কুমারীর নাম নিয়েও জল্পনা চলছে। এই পরিস্থিতিতে বসুন্ধরা সহজে নিজের দাবি ছাড়বেন বলে মনে করছেন না কেউই। কারণ ঝালারাপাটনের এই বিধায়কের মতো প্রভাব এবং প্রতিপত্তি যে বিজেপির রাজ্য স্তরের অধিকাংশ নেতাই নেই, তা মানছেন দলেরই অনেকে। তবে বসুন্ধরা নাকি বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বের সুনজরে নেই।
রাজ্যের সদ্য প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অশোক গহলৌত কিছু দিন আগেই মুখ্যমন্ত্রীর নাম ঘোষণায় এই বিলম্ব নিয়ে বিজেপিকে কটাক্ষ করেছিলেন। বলেছিলেন, “আসলে বিজেপির মধ্যে কোনও শৃঙ্খলা নেই।” বিজেপি অবশ্য মনে করিয়ে দিচ্ছে যে, ২০১৮ সালে কংগ্রেসও রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রীর নাম ঘোষণা করতে অনেকগুলি দিন খরচ করে ফেলেছিল। গত সোমবারই নিজের বাসভবন ১৩ নম্বর সিভিল লাইন্সে নিজের অনুগত ২০ জন বিধায়ককে নিয়ে বৈঠক করেছিলেন বসুন্ধরা। প্রসঙ্গত, ২০০ আসনের রাজস্থান বিধানসভা এ বার বিজেপি ১১৫টিতে জিতে নিরঙ্কুশ গরিষ্ঠতা পেয়েছে। প্রতিদ্বন্দ্বী কংগ্রেসের ঝুলিতে গিয়েছে ৬৯টি। নির্দল এবং অন্য দলগুলির প্রার্থীরা জিতেছেন ১৫টি আসনে। সে ক্ষেত্রে বসুন্ধরা ২০ জন বিধায়ককে নিয়ে বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে দর কষাকষির পথে হাঁটলে সরকার বাঁচাতে ‘ঢোলপুরের রানি’র কথা মেনে নিতে পারে দল।
অবশ্য বসুন্ধরা এই বিষয়ে প্রকাশ্যে কিছু জানাননি। রাজস্থানে প্রথম দিকে বসুন্ধরা-ঘনিষ্ঠদের টিকিট দেয়নি বিজেপি। পরে অবশ্য তাঁদের অনেককেই টিকিট দেওয়া হয়। বিজেপির একাংশেরই অভিযোগ, কেবল নিজের ঘনিষ্ঠ বিধায়কদের কেন্দ্রে গিয়েই প্রচার করেছিলেন বসুন্ধরা। অন্যত্র প্রচারে তেমন গা ঘামাননি।