গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
বিধানসভায় শক্তিপরীক্ষায় উতরে গেলেও বিধান পরিষদের ধাক্কা খেল কর্নাটকের কংগ্রেস সরকার। সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া আইনসভায় ‘কর্নাটক হিন্দু ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান এবং দাতব্য সংস্থা বিল’ পাশ করিয়ে কর বসাতে সক্রিয় হয়েছিলেন। কিন্তু বিধানসভায় সেই বিল পাশ হলেও পরাস্ত হল আইনসভার উচ্চকক্ষ বিধান পরিষদে।
বিরোধী বিজেপি-জেডিএস জোটের বিধান পরিষদ সদস্যদের বাধায় পরাস্ত হয়েছে কংগ্রেস সরকারের পেশ করা বিল। অঙ্কের হিসাবেও অবশ্য আইনসভায় উচ্চকক্ষে এগিয়ে ছিল বিরোধী জোট। সেখানে বিজেপির ৩৫ এবং জেডিএসের ৮ জন সদস্য রয়েছেন। কংগ্রেসের ৩০ জন। এক জন নির্দল। একটি আসন খালি। প্রসঙ্গত, কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়ার সরকার বিধানসভায় যে বিল পাশ করিয়েছে তাতে বলা হয়েছে, বছরে ১ কোটি টাকার বেশি অনুদান পাওয়া মন্দির এবং অন্য হিন্দু ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানকে ১০ শতাংশ হারে কর দিতে হবে। ১০ লক্ষ টাকা থেকে ১ কোটি টাকা পর্যন্ত অনুদানের ক্ষেত্রে করের হার ৫ শতাংশ।
আর সেই নিয়ে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে বিতর্ক। লোকসভা ভোটের আগে বিষয়টিকে রাজনৈতিক প্রচারের হাতিয়ার করেছে সে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপি। তাদের অভিযোগ, কংগ্রেসের ওই পদক্ষেপ ‘হিন্দুবিরোধী’। কর্নাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিএস ইয়েদুরাপ্পার পুত্র তথা রাজ্য বিজেপির সভাপতি বিজয়েন্দ্র বলেছিলেন, ‘‘আমাদের রাজ্যের কংগ্রেস সরকার ধারাবাহিক ভাবে হিন্দুবিরোধী নীতি গ্রহণ করছে। এ বার হিন্দু মন্দিরের অনুদানের দিকেও কুটিল দৃষ্টি দিয়েছে।’’ যদিও অভিযোগ খারিজ করে কর্নাটকের পরিবহণ মন্ত্রী রামলিঙ্গ রেড্ডি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, করের টাকা সরকার নেবে না। হিন্দু ধর্মস্থানগুলির উন্নয়নে ব্যবহার করা হবে।
প্রসঙ্গত, বিধানসভার মতোই বিধান পরিষদেও ‘নির্বাচিত’ হতে হয়। কিন্তু সেখানে সাধারণ নাগরিকরা ভোট দেন না। সেখানে ভোটাধিকার রয়েছে বিভিন্ন ক্ষেত্রভুক্ত পেশার মানুষ, বিধায়ক এবং পঞ্চায়েত-পুরসভার মতো স্থানীয় প্রশাসনে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের। উল্লেখ্য, পশ্চিমবঙ্গেও একটা সময় বিধান পরিষদ ছিল। সত্তরের দশকে যুক্তফ্রন্ট সরকার ক্ষমতায় এসে তার অবলুপ্তি ঘটায়। সারা ভারতে এখনও ৬টি রাজ্যে বিধান পরিষদ আছে। সেগুলি হল বিহার, উত্তরপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলঙ্গানা এবং কর্নাটক। প্রসঙ্গত, কয়েক বছর আগে পাশের রাজ্য মহারাষ্ট্রের শিরডির শ্রী সাইবাবা মন্দিরের ১৭৫ কোটি টাকা আয়কর বিতর্ক গড়িয়েছিল সুপ্রিম কোর্টে!