কেরলোর কোচি বিস্ফোরণে মৃত্যু হয়েছে এক জনের। ছবি: টুইটার।
কেরলের কালামাসেরি এলাকায় পর পর বিস্ফোরণ। ঘটনাস্থলে মারা গিয়েছিলেন এক জন মহিলা। পরে হাসপাতালে মারা গেলেন ৫৫ বছরের আরও এক জন মহিলা। আহত ৪৫ জন। এই ঘটনার কয়েক ঘণ্টা পর দায় স্বীকার করে কেরল পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করলেন ৪৮ বছরের এক ব্যক্তি। নাম ডোমিনিক মার্টিন। তিনিই এই বিস্ফোরণের নেপথ্যে কি না, তা এখনও নিশ্চিত করেনি পুলিশ। বিস্ফোরণের তদন্তের জন্য ২০ জন সদস্যের দল তৈরি করলেন কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন।
কোচি থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে কালামাসেরিতে তিন দিন ধরে একটি ধর্মের সম্মেলন চলছিল। রবিবার ছিল শেষ দিন। যোগ দিয়েছিলেন প্রায় ২,০০০ জন। প্রার্থনার মাঝেই সকাল ৯টা ৪৭ মিনিট নাগাদ প্রথম বিস্ফোরণ হয়। এক মিনিটে প্রায় তিনটি বিস্ফোরণ ঘটে। তার দায় নিয়ে যিনি আত্মসমর্পণ করেছেন, তিনি ওই একই ধর্মের, জানিয়েছে পুলিশ। কেরলের কালামাসেরির এডিজিপি (আইন ও শৃঙ্খলা) অজিত কুমার বলেন, ‘‘ত্রিশূর রুরালের কাডাকারা থানায় আত্মসমর্পণ করেছেন এক ব্যক্তি। দাবি করেছেন, তিনিই বিস্ফোরণ ঘটিয়েছেন। তাঁর নাম ডোমিনিক মার্টিন। তিনি দাবি করেছেন, ওই একই ধর্মের তিনি। আমরা খতিয়ে দেখছি।’’ ওই ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
বিস্ফোরণের কারণ অনুসন্ধানে নেমে প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, আইইডি (ইম্প্রোভাইজ়ড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস) ব্যবহার করা হয়েছিল। যে কারণে বিস্ফোরণের তীব্রতা ছিল বেশি। বিস্ফোরণস্থল থেকে ব্যাটারি এবং বৈদ্যুতিক তারের টুকরো পাওয়া গিয়েছে। তদন্তকারীদের একাংশ মনে করছেন, সময় ধরে বিস্ফোরণটি ঘটানো হয়েছিল। এই বিস্ফোরণকাণ্ডের তদন্ত এনআইএ-র হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে ফরেনdসিক দল। কেরল পুলিশের ডিজি দরবেশ সাহেব জানান, তদন্তে সব রকম সম্ভাবনার কথাই মাথায় রাখা হচ্ছে। তদন্তের জন্য বিশেষ তদন্তকারী দল বা সিট গঠনের কথাও জানিয়েছেন তিনি।
কালামেসারির সাংসদ হিবি ইডেন জানিয়েছেন, প্রথম বিস্ফোরণটি প্রেক্ষাগৃহের একেবারে মাঝখানে হয়েছিল। এ ধরনের ঘটনা ঘটলে প্রেক্ষাগৃহ কী ভাবে ফাঁকা করা হবে, তার পরিকল্পনা আগে থেকেই ছিল রক্ষীদের। সে কারণে একটি বিস্ফোরণের পরেই প্রেক্ষাগৃহ থেকে উপস্থিত লোকজনকে সরানোর কাজ শুরু করা হয়। সাংসদ জানিয়েছে, বিস্ফোরণের কারণে প্রেক্ষাগৃহে ধোঁয়া ছিল। সে কারণে বার হতে গিয়ে পদপিষ্ট হয়েছেন অনেকে। আহত ৪৫ জনকে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। ১৮ জন আইসিইউতে রয়েছে। পাঁচ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এই বিস্ফোরণকে ‘দুর্ভাগ্যজনক’ বলে জানিয়েছেন কেরলের মুখ্যমন্ত্রী বিজয়ন। বিস্ফোরণে জখমদের চিকিৎসার জন্য যাবতীয় ব্যবস্থা করতে স্বাস্থ্য দফতরকে নির্দেশ দিয়েছেন কেরলের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বীণা জর্জ। সব হাসপাতালকে তৎপর থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ছুটিতে থাকা চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের অবিলম্বে কাজে যোগ দিতে নির্দেশ দিয়েছেন মন্ত্রী।