RSS

মুসলিমদের মন পেতে বৈঠকে সঙ্ঘ-প্রধান ভাগবত, ইমামের সঙ্গে গেলেন দিল্লির মসজিদেও

দেশের বৃহত্তম সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর সমস্যার হদিস খুঁজতে প্রাক্তন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার এসওয়াই কুরেশি-সহ পাঁচ জন বিশিষ্ট মুসলিম ব্যক্তিত্বের সঙ্গে বৈঠক করেছেন সরসঙ্ঘচালক মোহন ভাগবত।

Advertisement
সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৩:৫০
আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত।

আরএসএস প্রধান মোহন ভাগবত। ফাইল চিত্র।

মুসলিমদের মন পেতে এ বার সক্রিয় হল রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ (আরএসএস)। দেশের বৃহত্তম সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর সমস্যার হদিস খুঁজতে প্রাক্তন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার এসওয়াই কুরেশি-সহ পাঁচ জন বিশিষ্ট মুসলিম ব্যক্তিত্বের সঙ্গে বৈঠক করলেন সরসঙ্ঘচালক মোহন ভাগবত।

বৃহস্পতিবার দিল্লিতে ‘অল ইন্ডিয়া ইমাম অর্গানাইজেশন’-এর প্রধান উমর আহমেদ ইলিয়াসিকে সঙ্গে নিয়ে কস্তুরবা গান্ধী মার্গের মসজিদেও যান ভাগবত। পাঁচ মুসলিম বিশিষ্টজনের সঙ্গে ৭৫ মিনিটের ওই বৈঠক প্রসঙ্গে কুরেশি জানিয়েছেন, তাঁদের কাছে কুভাষণের প্রবণতায় রাশ টানার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন সঙ্ঘ-প্রধান।

Advertisement

অতীতে বিজেপি-সহ সঙ্ঘ পরিবারের বেশ কিছু নেতানেত্রীর বিরুদ্ধে সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে আপত্তিকর মন্তব্যের অভিযোগ রয়েছে। বিজেপি মুখপাত্র (বর্তমানে সাসপেন্ডেড) নূপুর শর্মার আপত্তিকর মন্তব্যের জেরে মাস তিনেক আগে আন্তর্জাতিক মঞ্চেও বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছিল নরেন্দ্র মোদী সরকারকে। এই পরিস্থিতিতে ভাগবতের উদ্যোগ ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ মনে করছেন।

একটি সংবাদমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কুরেশি বলেছেন, ‘‘দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে যে সংখ্যালঘু সমাজের মনে শঙ্কা রয়েছে, সে কথা মেনেছেন আরএসএস প্রধান। তিনি জানিয়েছেন, হিন্দু- মুসলিম ঐক্যই প্রধান। একজন ভারতবাসীর পরিচয়, তিনি ভারতীয়। সম্প্রতি বারাণসীর জ্ঞানবাপী মসজিদ এবং মথুরার শাহি ইদগাহ বিতর্কের বিষয় নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়েছে।’’

প্রসঙ্গত, জুন মাসের গোড়ায় নাগপুরে একটি সভায় ভাগবত বারাণসী-মথুরা ঘিরে উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের নতুন করে উত্তেজনা তৈরির প্রচেষ্টার বিরোধিতা করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ‘‘আমাদের কিছু জায়গা (ধর্মীয় স্থান) নিয়ে বিশেষ ভক্তি থাকতে পারে। কিন্তু তা বলে রোজ নতুন নতুন বিষয় কেন জাগিয়ে তোলা হবে? আমাদের আদৌ বিতর্ক বাড়ানো উচিত নয়। জ্ঞানবাপী নিয়ে আমাদের ভক্তি-শ্রদ্ধা থাকতেই পারে। কিন্তু তা বলে প্রত্যেক মসজিদেই কেন শিবলিঙ্গ খোঁজা হবে?’’

কুরেশি বলেছেন, ‘‘মন্দির-মসজিদ বিতর্কে সঙ্ঘপ্রধানের অবস্থানকে আমরা স্বাগত জানিয়েছি। পাশাপাশি, আরও কিছু বিষয় নিয়ে আমাদের কথা হয়েছে। তিনি (ভাগবত) জানিয়েছেন, ‘কাফের’ শব্দের ব্যবহারে হিন্দুরা মানসিক ভাবে আঘাত পান। আমরা তাঁকে বলেছি, আরবি ভাষায় ইসলামে অবিশ্বাসীদের উদ্দেশ্যে ওই শব্দটি ব্যবহার করা হয়। এটি নিরপেক্ষ শব্দ, আক্রমণাত্ম নয়।’’ সংখ্যালঘু সমাজের উপর আঘাতের ঘটনা প্রতিরোধে সঙ্ঘ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করবে বলে ওই সভায় ভাগবত প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বলেও কুরেশির দাবি।

অতীতে তথাকথিত গো-রক্ষকদের তাণ্ডবের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন সরসঙ্ঘচালক। গত বছর তিনি বলেছিলেন, ‘‘যে বা যাঁরা গো-রক্ষার দোহাই দিয়ে গণরোষ তৈরি করে কাউকে কাউকে আক্রমণ করছেন, তাঁরা হিন্দুত্বের বিরোধী।’’ পাশাপাশি, যাঁরা কথায় সংখ্যালঘুদের পাকিস্তানে পাঠানোর হুমকি দেন, তাঁদেরও ‘হিন্দুত্ব-বিরোধী’ বলে চিহ্নিত করেছিলেন তিনি।

আরও পড়ুন
Advertisement