লালুপ্রসাদ। —ফাইল ছবি।
পুত্র তেজস্বী কয়েক দিন আগে লোকসভা নির্বাচন পরবর্তী পরিস্থিতিতে ‘ইন্ডিয়া’র পরিবর্তে নতুন সমীকরণের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। পিতা লালু এ বার সম্ভাব্য নতুন সমীকরণের আঁচ দিলেন। লোক জনশক্তি পার্টি (এলজেপি)-র প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত রামবিলাস পাসোয়ানের ভাই তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পশুপতি পারস বিহারের বিধানসভা ভোটে আরজেডি নেতৃত্বাধীন বিরোধী জোট ‘মহাগঠবন্ধনে’ শামিল হতে পারেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
মকর সংক্রান্তি উৎসব উপলক্ষে বৃহস্পতিবার লালুর বাড়িতে গিয়েছিলেন পারস। সেখানে আরজেডি প্রতিষ্ঠাতার কাছে জানতে চাওয়া হয়, বিহারে আরজেডি-কংগ্রেস-বামেদের নিয়ে গড়া বিরোধী জোটে পারসের দলকে স্বাগত জানানো হবে কি না। লালুর সংক্ষিপ্ত জবাব ছিল, ‘হ্যাঁ’। অন্য দিকে, পারস বলেন, ‘‘আমি নিজেকে সব সময় এনডিএ সহযোগী হিসাবেই মনে করেছি। কিন্তু এখন দেখছি বিজেপি আমাকে ত্যাগ করেছে।’’
প্রসঙ্গত, রামবিলাসের মৃত্যুর পরে ২০২১-এর মধ্যপর্বে এলজেপির ভাঙনের সময় বিজেপি দাঁড়িয়েছিল পশুপতির পাশে। সে সময় পারস-সহ লোকসভায় দলের পাঁচ সাংসদ এক দিকে ছিলেন। অন্য দিকে, একা রামবিলাস-পুত্র চিরাগ। সেই পরিস্থিতিতে লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা ‘এলজেপি সংসদীয় দলের’ স্বীকৃতি দিয়েছিলেন পারস গোষ্ঠীকে। এনডিএ জোটে তাঁকে স্থান দিয়েছিল বিজেপি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও চিরাগকে ব্রাত্য করে পারসকে কেন্দ্র প্রতিমন্ত্রী করেছিলেন।
কিন্তু তার তিন বছরের মাথায়, ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটের আগে হঠাৎই অবস্থান বদলে চিরাগের সঙ্গে জোট করে ফেলে বিজেপি। এলজেপির জন্য বরাদ্দ পাঁচটি আসনই চিরাগ গোষ্ঠীকে ছেড়ে দেওয়া হয়। প্রসঙ্গত, এলজেপি-র অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের জেরে দু’শিবিরই দলের নাম নির্বাচনী প্রতীক ‘কুঁড়েঘর’ চেয়ে কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছিল। কিন্তু কমিশন কোনও পক্ষকেই তা দেয়নি। চিরাগের দল লোক জনশক্তি পার্টি (রামবিলাস)-এর জন্য বরাদ্দ হয় হেলিকলপ্টার। পারসের রাষ্ট্রীয় লোক জনশক্তি পার্টি পেয়েছিল সেলাই মেশিন।
বিজেপি আসন না ছাড়ায় গত মার্চে ক্ষুব্ধ পারস কেন্দ্রীয় মন্ত্রিত্ব ছেড়েছিলেন। জল্পনা ছিল তিনি বিরোধী জোট ‘ইন্ডিয়া’য় যোগ দেবেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা হয়নি। অসুস্থ পারস সম্প্রতি রাজনীতিতে সক্রিয়তাও কমিয়ে দিয়েছেন। চলতি বছরের অক্টোবর-নভেম্বরে বিহারের বিধানসভা ভোট হওয়ার কথা। শেষ পর্যন্ত লালুর সঙ্গে হাত মেলালেও তিনি প্রয়াত দাদা রামবিলাসের দলিত সমর্থন পাবেন কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। ঘটনাচক্রে, বুধবার বিজেপির উপর চাপ বাড়িয়ে বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জিতনরাম মাঝিঁ জানিয়েছেন, বিধানসভা ভোটে তাঁর দল হিন্দুস্তানি আওয়াম মোর্চা (হাম) অন্তত ২০টি আসনে লড়বে।