উত্তরকাশীতে চলছে উদ্ধারের কাজ। — ফাইল চিত্র।
উত্তরাখণ্ডের উত্তরকাশীর সুড়ঙ্গে আটকে পড়া শ্রমিকদের কখন উদ্ধার করা হবে তা নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হল আবার। প্রাথমিক ভাবে প্রশাসনের তরফে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছিল বুধবার রাতের মধ্যেই উদ্ধারকাজ সফল হতে পারে। কিন্তু তা হয়নি। এর পরে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর তরফে জানানো হয়েছিল, বৃহস্পতিবার সকালের মধ্যেই শেষ হবে উদ্ধারকাজ। সকাল ৮টায় সেই কাঙ্ক্ষিত উদ্ধারপর্ব শুরু হবে বলেও ‘বার্তা’ এসেছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা হল না। এমনকি, ৪১ জন আটকে পড়া শ্রমিকের সঙ্গে ২১ জনের উদ্ধারকারীর দূরত্ব এখনও ১০ মিটার রয়ে গিয়েছে বলে সূত্রের খবর!
পাথুরে মাটিতে ভেঙে পড়া সুড়ঙ্গের ইস্পাতের ‘জঞ্জাল’ সরিয়ে আরও ১০ মিটার সুড়ঙ্গ খুঁড়ে, সেখানে ইস্পাতের চওড়া পাইপ বসিয়ে আটক শ্রমিকদের নাগাল পাওয়া ‘সময়সাধ্য’ হবে বলেই মনে করছেন প্রশাসনিক আধিকারিকদের একাংশ। কারণ, শুধু পাইপ বসানো নয়, জল-কাদা ঢুকে পড়া আটকাতে পাইপের জোড়-মুখ ঝালাইয়ের কাজ করতে হচ্ছে উদ্ধারকারীদের। সূত্রের খবর, ভেঙে সুড়ঙ্গের ইস্পাতের খণ্ডও পাইপের মুখে এসে পড়ায় বার বার খোঁড়ার কাজ ব্যাহত হচ্ছে, শ্লথ হচ্ছে কাজের গতি।
অক্সিজেন মাস্ক পরে পাইপের মাধ্যমে সুড়ঙ্গে ঢুকেছেন উদ্ধারকারী দলের সদস্যেরা। তাঁদের কাছে পর্যাপ্ত যন্ত্রপাতি রয়েছে। প্রয়োজন মতো রাস্তা খুঁড়ে পাইপ বসিয়ে তাঁরা ধীরগতিতে এগোচ্ছেন বলে বিপর্যয় মোবাবিলা দফতরের এক আধিকারিক জানিয়েছেন। ঘটনাস্থলে উপস্থিত রয়েছেন উত্তরাখণ্ডের পুষ্কর সিংহ ধামী। ব্যবস্থা করা হয়েছে হাসপাতালের। ৪১টি আসনের অস্থায়ী হাসপাতালের ব্যবস্থাও করা হয়েছে সুড়ঙ্গের কাছে। তবে বুধবার রাতে ঘোষিত সেই ১০ মিটারের দূরত্ব এখনও তেমন কমেনি বলেই প্রশাসন সূত্রের খবর।
গত ১২ নভেম্বর ভোরে উত্তরকাশীর সুড়ঙ্গে ধস নেমেছিল। ভিতরে আটকে পড়েন ৪১ জন শ্রমিক। তাঁদের উদ্ধারের চেষ্টা বার বার ব্যর্থ হয়েছে। সুড়ঙ্গের যে অংশে শ্রমিকেরা আটকে আছেন, কিছুতেই সেখানে পৌঁছতে পারছিলেন না উদ্ধারকারীরা। গত ১১ দিন ধরে বদ্ধ সুড়ঙ্গেই আটকে আছেন শ্রমিকেরা। তাঁদের সঙ্গে প্রথম থেকেই যোগাযোগ রাখা হয়েছিল। পাইপের মাধ্যমে শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন পরিজনেরাও। পাইপ দিয়েই পৌঁছে দেওয়া হচ্ছিল খাবার এবং অন্যান্য দরকারি জিনিসপত্র। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে শুরু হয়েছে অন্তিম দফার উদ্ধার-অপারেশন।