Manmohan Singh

কপ্টারে আমসত্ত্ব পেয়ে মুচকি হাসি, মনমোহন-স্মৃতি ইশার

২০১৩ সালের মার্চ। পুরাতন মালদহের নারায়ণপুরের পোপড়ায় গনি-নামাঙ্কিত কারিগরি কলেজের শিলান্যাস অনুষ্ঠানে যোগ দিতে মালদহে এসেছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন। সঙ্গে ছিলেন কংগ্রেস নেত্রী সনিয়া গান্ধীও।

Advertisement
নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৯:৪২
২০১৩ সাল। গনিখানের মাজারে শ্রদ্ধা। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের।

২০১৩ সাল। গনিখানের মাজারে শ্রদ্ধা। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের। —ফাইল চিত্র।

রুপোর থালায় সাজানো ছিল হরেক খাবার। তিনি শুধু পান করেন ডাবের জল। মালদহের কোতোয়ালির বাসিন্দাদের সঙ্গে হেঁটে শ্রদ্ধা জানাতে যান কংগ্রেস নেতা, এ বি এ গনিখান চৌধুরীর মাজারে। তিনি, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ। তাঁর প্রয়াণের খবরে এমনই নানা স্মৃতির কথা ভাসছে কোতোয়ালিতে। ২০১৩ সালে ওই বাড়িতে তাঁর সফরের প্রতি মুহূর্তের ছবি এখনও ভাসে গনিখানের উত্তরসূরিদের চোখে।

Advertisement

২০১৩ সালের মার্চ। পুরাতন মালদহের নারায়ণপুরের পোপড়ায় গনি-নামাঙ্কিত কারিগরি কলেজের শিলান্যাস অনুষ্ঠানে যোগ দিতে মালদহে এসেছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন। সঙ্গে ছিলেন কংগ্রেস নেত্রী সনিয়া গান্ধীও। শিলান্যাস অনুষ্ঠানের আগে ১০ মিনিটের ঝটিকা সফরে কোতোয়ালি ভবনে সনিয়ার সঙ্গে পৌঁছন মনমোহন। অতিথি আপ্যায়নে প্রস্তুত ছিল কোতোয়ালি ভবন। তবে নিরাপত্তা-বিধির কারণে অতিথিদের আপ্যায়নে রাখা যায়নি রান্না করা কোনও পদ। ছিল স্যান্ডউইচ, শুকনো ফল, লিচু, আম, কমলা লেবুর রস-সহ হরেক খাবার। কোতোয়ালি পরিবারের সদস্য তথা কংগ্রেস সাংসদ ইশা খান চৌধুরীর স্ত্রী সায়েদা সালেহা নীহার নুর বলেন, ‘‘রান্না করা খাবারে নিষেধাজ্ঞা ছিল। তবে মিষ্টি, সন্দেশ, স্যান্ডউইচ, শুকনো ফলের মতো অনেক খাবারের ব্যবস্থা ছিল। উনি খেয়েছিলেন শুধু ডাবের জল। খুব কম কথা বলতেন। নিচু স্বরে আমার কাছে ডাবের জল চেয়ে নেন। আজ সে কথা মনে পড়ছে।’’

মনমোহনের হেলিকপ্টারে আমসত্ত্ব পৌঁছে দেওয়ার কথা মনে আছে ইশার। তিনি বলেন, ‘‘কোতোয়ালিতে অতিথি এলেই আমসত্ত্ব, রেশম বস্ত্র উপহার হিসেবে দেওয়া হয়। ওঁকেও দেওয়া হয়েছিল। তবে তিনি সে সব না নিয়েই বেরিয়ে গিয়েছিলেন। পরে, হেলিপ্যাডে গিয়ে তাঁর কপ্টারে আমসত্ত্ব পৌঁছে দিয়েছিলাম। মুখে মুচকি হাসি দেখেছিলাম।’’ মনমোহনের সফরের সময় কলকাতা থেকে কোতোয়ালি ভবনে গিয়েছিলেন লোকসভার তৎকালীন কংগ্রেস সাংসদ মৌসম নুর। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের সঙ্গে হেঁটে গিয়ে মামা গনি খানের মাজারে তাঁর শ্রদ্ধা জানানোর কথা কখনও ভুলব না।’’ মৌসমের বিয়েতেও নিমন্ত্রিত ছিলেন মনমোহন।

মালদহ লাগোয়া জেলা মুর্শিদাবাদে প্রাক্তন কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরীর স্মৃতিচারণ, ‘‘মনমোহন সিংহের মন্ত্রিসভায় রেল প্রতিমন্ত্রী ছিলাম। ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর জন্য গঙ্গার তলা দিয়ে সুড়ঙ্গ তৈরি হচ্ছে। এক দিন জানতে পারি, টাকার অভাবে সেখানে খোঁড়াখুঁড়ির কাজ সাময়িক বন্ধ করে দিচ্ছেন ঠিকাদারেরা। মনমোহন সিংহের শরণাপন্ন হতেই তাঁর কাছ থেকে ওই কাজের জন্য ১০০ কোটি টাকা মিলেছিল।’’

মনমোহন-স্মৃতি জড়িয়ে রায়গঞ্জেও। কংগ্রেস নেতা মোহিত সেনগুপ্ত বলেন, ‘‘২০০৮ সালে রায়গঞ্জে তৎকালীন সাংসদ প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সি অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে দিল্লির এমসে ভর্তির ব্যবস্থা করেছিলেন মনমোহন সিংহ।’’ তাঁর দাবি, রায়গঞ্জে এমসের ধাঁচে হাসপাতাল তৈরির অনুমোদনও মনমোহনের আমলেই দিয়েছিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা।

Advertisement
আরও পড়ুন