Maharashtra Politics

‘দু’জনকে একসঙ্গে দেখতে চাই’, মন্দিরে প্রার্থনা অজিতের মায়ের! আবার কি কাকা-ভাইপো পুনর্মিলন?

২০২৩ সালের জুলাইয়ে আচমকাই কাকা শরদ পওয়ারের সঙ্গ ছেড়ে এনসিপির অধিকাংশ বিধায়ককে নিয়ে বিদ্রোহ করেছিলেন অজিত। যোগ দিয়েছিলেন মহারাষ্ট্রে শিন্ডেসেনা-বিজেপি জোটের সরকারে।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০২ জানুয়ারি ২০২৫ ১৫:৫১
(বাঁ দিকে) অজিত পওয়ার। শরদ পওয়ার (ডান দিকে)।

(বাঁ দিকে) অজিত পওয়ার। শরদ পওয়ার (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।

বিদ্রোহ এবং বিজয়ের পরে এ বার কি ভাইপো অজিত পওয়ার কাকা শরদের সঙ্গে সমঝোতার পথে! এই জল্পনা উস্কে দিল মহারাষ্ট্রের উপমুখ্যমন্ত্রী অজিতের মা আশার মন্তব্য। বুধবার পন্দরপুরের বিঠ্‌ঠল মন্দিরে পুজো দিতে গিয়েছিলেন। পুজো দিয়ে বেরিয়ে তিনি বলেন, ‘‘ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা জানাতে এসেছিলাম যাতে পওয়ার পরিবারের অন্দরে সমস্ত বিবাদ মিটে যায়। অজিত এবং শরদ আবার একজোট হয়।’’

Advertisement

অজিতের মায়ের ওই মন্তব্য সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তাঁর শিবিরের নেতা তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রফুল পটেল বলেন, ‘‘শরদ পওয়ার আমাদের কাছে ঈশ্বরের মতো। দুই এনসিপি যদি মিশে যায়, তবে ভালই হবে।’’ গত ১২ ডিসেম্বর শরদের জন্মদিনে তাঁর দিল্লির বাড়িতে গিয়েছিলেন অজিত। সে সময় কাকা-ভাইপোর একান্তে আলোচনা হয়েছিল। তার পরেই দুই এনসিপির ‘এক হওয়া’ নিয়ে জল্পনা তৈরি হয়েছে।

২০২৩ সালের ২ জুলাই শরদের সঙ্গ ছেড়ে অধিকাংশ এনসিপি বিধায়ককে নিয়ে বিদ্রোহী হয়েছিলেন অজিত। শিন্ডসেনা-বিজেপির ‘মহাজুটি’তে যোগ দিয়ে একনাথ শিন্ডের সরকারে উপমুখ্যমন্ত্রীও হন। নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে ‘এনসিপি’ নাম এবং নির্বাচনী প্রতীক ‘ঘড়ি’ও পায় অজিত গোষ্ঠী! শরদের নতুন দলের নাম হয় এনসিপি (শরদচন্দ্র পওয়ার)। নির্বাচনী প্রতীক ‘তুতারি’ (পশ্চিমি বাদ্যযন্ত্র ট্রাম্পেটের মরাঠি সংস্করণ)।

নাম ও প্রতীক হারিয়েও ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটে বাজিমাত করেছিলেন শরদ। জিতেছিলেন আটটি আসনে। অন্য দিকে, চারটিতে লড়ে অজিতের দল জিতেছিল মাত্র একটি আসনে। বারামতী কেন্দ্রে অজিতের স্ত্রী সুনেত্রা পওয়ার হেরে যান শরদ-কন্যা সুপ্রিয়ার কাছে। এর পর সঙ্ঘ পরিবার এবং বিজেপির অন্দরে অজিতকে নিয়ে প্রশ্ন ওঠে কিন্তু লোকসভা ভোটের ছ’মাসের মাথাতেই মরাঠা রাজনীতিতে চমকপদ প্রত্যাবর্তন ঘটেছে অজিতের। তাঁর নেতৃত্বাধীন এনসিপি ৫৯টিতে লড়ে জিতেছে ৪১টিতে। অন্য দিকে, ৮৬টি বিধানসভা আসনে প্রার্থী দিয়ে এনসিপি (শরদ)-র ঝুলিতে মাত্র ১০! এই পরিস্থিতিতে নতুন করে শরদ-অজিত ঐক্য ঘিরে আলোচনা শুরু হয়েছে।

ইতিহাস বলছে অতীতেও কাকার সঙ্গ ছেড়ে আবার ‘পারিবারিক ঐক্যে’র কথা বলে ‘ঘরে ফিরেছেন’ অজিত। ২০১৯-এর বিধানসভা ভোটের পরে অজিত ‘বিদ্রোহী’ হয়েছিলেন। তাঁর সমর্থন পেয়ে মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিয়েছিলেন বিজেপির দেবেন্দ্র ফডণবীস। অজিত হন উপমুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু এনসিপি পরিষদীয় দলে ভাঙন ধরাতে ব্যর্থ হয়ে ইস্তফা দিতে হয় তাঁদের দু’জনকে। এর পর অজিত আবার শরদের শিবিরে আশ্রয় নেন। তাঁকে শিবসেনা প্রধান উদ্ধব ঠাকরের নেতৃত্বাধীন মহাবিকাশ আঘাড়ী জোট সরকারের উপমুখ্যমন্ত্রী করেছিলেন শরদ। কিন্তু ২০২২-এর জুন মাসে একনাথ শিন্ডের নেতৃত্বে শিবসেনায় ভাঙন ধরলে মহাবিকাশ আঘাড়ী সরকারের পতন ঘটে। বিজেপির সমর্থনে মুখ্যমন্ত্রী হন শিন্ডে। তার ১৩ মাসের মাথায় আবার কাকার সঙ্গ ছাড়েন ভাইপো।

Advertisement
আরও পড়ুন