—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
নির্বাচন কমিশন বিজেপির হয়ে কাজ করে এই অভিযোগ বারবার প্রকাশ্যেই করে এসেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল। তৃণমূলের বক্তব্য, প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ ভাবে মোদী সরকারের হাত শক্ত করাই যে কমিশনের দায়বদ্ধতার মধ্যে পড়ে তা ক্রমশই স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এই সূত্রেই বলা হচ্ছে মহারাষ্ট্রের মতো বড় রাজ্যে যদি এক দফায় বিধানসভা ভোট সেরে ফেলা যায়, তাহলে ঝাড়খণ্ডে কেন দুই পর্বে করতে হল। বিরোধীদের দাবি, ১৫ নভেম্বর বিরসা মুন্ডার জন্মদিবসকে যাতে ব্যবহার করে জনজাতি আবেগে ঢেউ তুলতে পারেন নরেন্দ্র মোদী তথা বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব, সে জন্যই ২০ নভেম্বর দ্বিতীয় পর্বে সাঁওতাল পরগনা অঞ্চলে ভোট রাখা হয়েছে।
ঝাড়খণ্ডে নির্বাচনী আচরণবিধি জারি হওয়ায় সেখানে শিলান্যাসের ঘোষণা করা যাবে না। বিরোধীদের অভিযোগ, আজ জনজাতিদের জন্য প্রকল্প ঘোষণার সরকারি অনুষ্ঠানও কৌশলগত ভাবে পড়শি বিহারের জামুয়াতে রাখা হয়েছে। সেইসঙ্গে তথ্য ও পরিসংখ্যান দিয়ে কংগ্রেস ও তৃণমূলের নেতারা দেখাতে চাইছেন, জনজাতিদের জন্য প্রধানমন্ত্রীর এই আবেগ প্রদর্শন পুরোটাই মেকি। মোদীর গত দশ বছরের জমানায় ও সাম্প্রতিক অতীতে জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে আসলে ক্রমশই পিছনে ঠেলে দেওয়া হয়েছে জনজাতি সম্প্রদায়কে।
তৃণমূলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন বলেন, "চব্বিশের বাজেটের প্রসঙ্গই যদি তোলা হয় তাহলে দেখা যাচ্ছে জনজাতি শব্দটি বাজেট বক্তৃতায় মাত্র এক বার উঠেছে। সাংবিধানিক সংস্থা, ন্যাশনাল কমিশন ফর শিডিউলড ট্রাইবস-এর বরাদ্দ ২২ কোটি টাকা থেকে কমিয়ে কুড়ি কোটি টাকা করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী জনজাতি বিকাশ মিশনে বরাদ্দ ৬ শতাংশ কমানো হয়েছে। জাতীয় জনজাতি কল্যাণ প্রকল্পের বরাদ্দ কমানো হয়েছে ১০ শতাংশ।”
কংগ্রেসের প্রধান মুখপাত্র জয়রাম রমেশের কথায়, “আজ দেশের অন্যতম সেরা সন্তান বিরসা মুন্ডার ১৫০তম জন্মদিন। আমাদের অজৈবিক প্রধানমন্ত্রী আজ বিহারের জামুইয়ে গিয়ে জনজাতিদের জন্য বড় বড় কথা বলছেন। অথচ তাঁরই সরকার জনজাতিদের ন্যায়বিচারের পথ আটকে দাঁড়িয়ে রয়েছে। অরণ্যের অধিকার নিয়ে মস্করা করা হচ্ছে। এর থেকেই সরকারের ভন্ডামি স্পষ্ট বোঝা যায়।” তাঁর কথায়, ২০০৬ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ অরণ্যের অধিকার আইন পাশ করান যার ফলে সরকারি দফতর থেকে সংশ্লিষ্ট ক্ষমতার হস্তান্তর হয় গ্রামসভায়। জয়রামের কথায়, “জনজাতি বিষয়ক মন্ত্রককেও তখন আইন প্রণয়নের জন্য শক্তিশালী করা হয়। মোদী এসে এই ঐতিহাসিক আইনকে বদলে তাকে দুর্বল করে দেন। জনজাতি মন্ত্রকের কর্তৃত্ব খর্ব করে অরণ্যের অধিকার সংক্রান্ত আইন প্রণয়নের ভার তুলে দেওয়া হয় পরিবেশ মন্ত্রকের কাঁধে।”