PM Narendra Modi

‘বাংলায় টাকার পাহাড়’ সংসদে মোদীর বক্তৃতায়, তাঁর জমানায় ইডি কত সফল, দিলেন হিসাবও

বিজেপি জমানায় ইডি যে কতটা ‘কাজের’ তার খতিয়ান দিতে গিয়ে সংসদে বাংলার প্রসঙ্গ উত্থাপন করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কংগ্রেসের লোকসভা নেতা অধীর চৌধুরীকে উদ্দেশ্য করে কী বললেন মোদী?

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ২০:২৩

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

লোকসভা ভোটের আগে অ-বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতে ইডি, সিবিআই-সহ কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলির ‘সক্রিয়তা’ নিয়ে সরব বিরোধীরা। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, ঝাড়খণ্ডের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনরা ওই অভিযানের নেপথ্যে বিজেপির ষড়যন্ত্র দেখেন। তবে তাঁর জমানায় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) যে কতটা ‘কাজের’ তার খতিয়ান দিতে গিয়ে সংসদে বাংলার প্রসঙ্গ উত্থাপন করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি কারও নাম করেননি। তবে নিশানা বাংলার প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ‘ঘনিষ্ঠ’ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের বাড়িতে ডাঁই করা টাকার পাহাড়ের দিকে। নিশানা ইডি অভিযানে বাংলার নেতামন্ত্রী এবং শাসকদলের ঘনিষ্ঠদের বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া বিপুল টাকার ছবির দিকে। আর সেটাই তাঁর জমানায় ইডির সাফল্য বলে দাবি করেছেন প্রধানমন্ত্রী।

Advertisement

সোমবার লোকসভায় বাজেট অধিবেশনের জবাবি ভাষণে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত কংগ্রেসকে বিঁধেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। রাজনীতিতে ‘পরিবারতন্ত্র’ থেকে দুর্নীতি, সরকারি জনমুখী প্রকল্পের বাস্তবায়ন থেকে লোকসভা ভোটকে সামনে রেখে বিরোধীদের জোটের ‘প্রচেষ্টা’, সবেতেই কংগ্রেসকে আক্রমণ করেন মোদী। তাঁর জমানার সুশাসন এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে পদক্ষেপের কথা বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর মুখে উঠে এসেছে ইডির কথা। প্রধানমন্ত্রী একটি তথ্য তুলে ধরে বলেন, ‘‘পিএমএলএ-তে (আর্থিক তছরুপ বিরোধী আইন) আগের চেয়ে দ্বিগুণ মামলা করেছি আমরা। কংগ্রেসের সময় ইডি পাঁচ হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছিল। আর আমাদের কার্যকালে ইডি এক লক্ষ কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছে।’’ বলেই স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে মোদীর নির্ঘোষ, ‘‘দেশকা লুটা হুয়া মাল দেনা হি পড়েগা (দেশ থেকে লুট করা টাকা ফেরত দিতেই হবে)।’’

সংসদে ওই কথা বলার সময় বহরমপুরের সাংসদ তথা কংগ্রেসের লোকসভার নেতা অধীর চৌধুরীর দিকে তাকিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘যাঁরই মাল ধরা পড়ে দেখা যায়, নোটের স্তূপ। টাকার পাহাড় জমে গিয়েছে। আর অধীরবাবু... আপনি তো বাংলা থেকে এসেছেন। টাকার স্তূপ দেখেছেন।’’

চাকরি ক্ষেত্রে দুর্নীতির অভিযোগের তদন্তে নেমে ২০২২ সালে বাংলা থেকে ইডি যে পরিমাণ টাকা উদ্ধার করেছে, তাকে এক কথায় টাকার পাহাড়ই বলা চলে। শুরুটা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থের ‘ঘনিষ্ঠ’ অর্পিতার টালিগঞ্জ এবং বেলঘরিয়ার ফ্ল্যাট দিয়ে। দিনটা ছিল ২২ জুলাই। অর্পিতার দু’টি বাড়ি থেকে থরে থরে টাকা উদ্ধার হয়। ৫০০ আর ২০০০ টাকার নোটের বান্ডিল গুনতে আনা হয় টাকা গোনার মেশিন। তার পর হাওড়ার পাঁচলায় ঝাড়খণ্ডের তিন কংগ্রেস বিধায়কের গাড়ি থেকে ৪৯ লক্ষ টাকা উদ্ধার থেকে কলকাতার গার্ডেনরিচের আমির খানের বাড়ি থেকে ১৭ কোটি টাকার খোঁজ— তালিকা দীর্ঘ। বাংলায় ইডির অভিযানে টাকা উদ্ধারের এই খতিয়ানে আছে হাওড়ার পাণ্ডে ব্রাদার্স, উল্টোডাঙার উমেশ আগরওয়ালের নাম। সেই সব অভিযানের নাম না নিয়ে সংসদে মোদী বলেন, ‘‘কার কার বাড়িতে, কোন কোন রাজ্যে দেখা যাচ্ছে এত টাকা? আসলে গোছা গোছা টাকা দেখে চমকে গিয়েছে সারা দেশ। আর জনতাকে মুরগি বানাতে পারবেন না (আঙুল বিরোধী বেঞ্চের দিকে)। সবাই দেখছেন।’’

আরও পড়ুন
Advertisement