কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। —ফাইল চিত্র।
বিআর অম্বেডকরকে নিয়ে রাজ্যসভায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের ‘ফ্যাশন’ মন্তব্যকে ঘিরে তৈরি হওয়া বিতর্ক নিয়ে মুখ খুললেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কংগ্রেসের দাবি নস্যাৎ করে অম্বেডকর প্রসঙ্গে তাদেরই নিশানা করলেন তিনি। তাঁর দাবি, অম্বেডকরকে অপমান করা কংগ্রেসের কালো অধ্যায়কে রাজ্যসভায় দাঁড়িয়ে শাহ ফাঁস করেছেন।
মঙ্গলবার রাজ্যসভায় সংবিধান-বিতর্কে কংগ্রেসকে আক্রমণ করতে গিয়ে শাহ বলেন, ‘‘এখন এক ফ্যাশন হয়েছে— অম্বেডকর, অম্বেডকর, অম্বেডকর, অম্বেডকর, অম্বেডকর, অম্বেডকর। এত বার যদি ভগবানের নাম নিত তবে সাত জন্ম স্বর্গবাস হত।’’ শাহের এই মন্তব্যকে হাতিয়ার করে আসরে নামে কংগ্রেস। বুধবার সকালে সংসদের বাইরে কংগ্রেস সাংসদেরা অম্বেডকরের ছবি হাতে বিক্ষোভ দেখান। ‘জয় ভীম’ স্লোগান তোলেন তাঁরা, যা কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়ায় সংসদ চত্বরে। শাহের পদত্যাগের দাবিও তোলা হয়।
এ বার সেই প্রসঙ্গে সমাজমাধ্যমে একের পর এক পোস্ট করে কংগ্রেসকে নিশানা করলেন মোদী। তাঁর বক্তব্য, যদি কংগ্রেস এবং তাদের পচে যাওয়া ব্যবস্থা মনে করে যে অসত্য কথা দিয়ে তাদের দীর্ঘ বছরের অক্ষমতা লুকোবে, তা হলে তারা ভুল করছে। বিশেষত, অম্বেডকরকে তারা যা অপমান করেছে, তা ভোলার নয়।’’ মোদীর কথায়, ‘‘ভারতের মানুষ বার বার দেখেছে যে, কী ভাবে একটি পরিবারতান্ত্রিক দল অম্বেডকরের উত্তরাধিকারকে মুছে ফেলার এবং তফসিলি জাতি ও উপজাতি সম্প্রদায়কে অপমান করার জন্য সম্ভাব্য সমস্ত নোংরা কৌশলে লিপ্ত হয়েছে।’’ কংগ্রেস এমন একটা দল, যারা অম্বেডকরকে ভারতরত্ন দেয়নি। তার পরই মোদী জানিয়েছেন, তাঁর সরকার অম্বেডকরের স্বপ্নপূরণে কী কী পদক্ষেপ করেছে। মোদীর অভিযোগ, অম্বেডকরকে নির্বাচনে পরাজিত করতে জওহরলাল নেহরু তাঁর বিরুদ্ধে প্ররোচনা করেছিলেন। এমনকি সংসদে সেন্ট্রাল হলে অম্বেডকরের প্রতিকৃতি বসাতে বাধা দেয় কংগ্রেস!
দিন দুয়েক আগেই লোকসভায় সংবিধান নিয়ে আলোচনায় কংগ্রেস এবং গান্ধী পরিবারকে একযোগে আক্রমণ করেছিলেন মোদী। সংবিধান নিয়ে নেহরুর অর্ডিন্যান্স (অধ্যাদেশ) থেকে ইন্দিরা গান্ধীর জরুরি অবস্থা, মোদীর বক্তৃতায় উঠে এসেছিল নানা বিষয়। মোদী বলেন, ‘‘কংগ্রেস কখনও জরুরি অবস্থার কালি মুছতে পারবে না। জনগণের নাগরিক স্বাধীনতা খর্ব করা হয়েছে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘জরুরি অবস্থা জারি করে জনগণের সমস্ত সাংবিধানিক অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। গোটা দেশকে জেলখানায় পরিণত করেছিলেন ইন্দিরা গান্ধী। কংগ্রেস সেই দাগ কখনও মুছতে পারবে না।’’
অন্য দিকে, বুধবারই মোদীর সঙ্গে দেখা করেন রাহুল এবং খড়্গে। সূত্রের খবর, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের পরবর্তী চেয়ারপার্সন কে হবেন, তা নিয়ে আলোচনা করতেই এই বৈঠক। ওই বৈঠকে ছিলেন শাহ এবং লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লাও।