গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
রাজ্যসভায় সংবিধান নিয়ে আলোচনায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের একটি মন্তব্যকে কেন্দ্র করে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। বিআর অম্বেডকরকে নিয়ে শাহের ‘ফ্যাশন’ মন্তব্যের বিরোধিতায় সরব কংগ্রেস। বুধবার সংসদের দুই কক্ষেই এই নিয়ে হট্টগোল শুরু করেন কংগ্রেস সাংসদেরা। তাঁদের তরফ থেকে মুলতুবি প্রস্তাবও আনা হয়। দাবি, অবিলম্বে শাহকে তাঁর মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চাইতে হবে। হইহট্টগোলের কারণে রাজ্যসভা এবং লোকসভার অধিবেশন স্থগিতও হয়ে যায়। কংগ্রস ছাড়াও অম্বেডকর বিতর্কে এ বার শাহকে নিশানা করলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, অম্বেডকরের বিরুদ্ধে কটূক্তিমূলক মন্তব্য করে গণতন্ত্রের মন্দিরকে অপমান করেছেন শাহ।
বুধবার সকালে সংসদের বাইরে কংগ্রেস সাংসদেরা অম্বেডকরের ছবি হাতে বিক্ষোভ দেখান। ‘জয় ভীম’ স্লোগান তোলেন তাঁরা, যাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়ায় সংসদ চত্বরে। রাজ্যসভার সাংসদ তথা কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গের অভিযোগ, শাহ সংবিধানের জনক অম্বেডকরকে অপমান করেছেন। অবিলম্বে তাঁকে সে জন্য ক্ষমা চাইতে হবে। একই সঙ্গে শাহের পদত্যাগের দাবিও তুললেন খড়্গে।
কিন্তু কী নিয়ে বিতর্ক? মঙ্গলবার রাজ্যসভায় সংবিধান-বিতর্কে কংগ্রেসকে আক্রমণ করতে গিয়ে শাহ বলেন, ‘‘এখন এক ফ্যাশন হয়েছে— অম্বেডকর, অম্বেডকর, অম্বেডকর, অম্বেডকর, অম্বেডকর, অম্বেডকর। এত বার যদি ভগবানের নাম নিত তবে সাত জন্ম স্বর্গবাস হত।’’ তার পর শাহ বলেন, ‘‘১০০ বার অম্বেডকরের নাম নেওয়া হয়, কিন্তু আমি বলতে চাই তাঁর প্রতি আপনাদের অনুভূতি কী?’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘জওহরলাল নেহরুর সঙ্গে অম্বেডকরের অনেক মতপার্থক্য ছিল। সেই কারণে নেহরুর মন্ত্রিসভা থেকে পদত্যাগ করেন তিনি।’’
তার পরই শাহের ‘ফ্যাশন’ মন্তব্য নিয়ে শোরগোল পড়ে যায়। তবে আসরে নেমেছে বিজেপিও। কংগ্রেসের বিরুদ্ধে ‘সস্তা রাজনীতি’র অভিযোগ তুলেছে তারা। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা কিরেন রিজেজুর দাবি, ‘‘শাহ স্পষ্টই তাঁর বক্তৃতায় অম্বেডকরের প্রতি শ্রদ্ধা দেখিয়েছেন। কংগ্রেস শুধু তাঁর বক্তব্যের কিছু অংশ কেটে ছড়াচ্ছে।’’ তার পরই কংগ্রেসকে আক্রমণ করে রিজেজু বলেন, ‘‘এত বছর ধরে কংগ্রেস তাঁকে (অম্বেডকর) ভারতরত্ন প্রদান করেনি এবং সেই সঙ্গে তারা বাবাসাহেবকে অপমানও করেছে।’’