অমিত শাহ। —ফাইল চিত্র।
দেশের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের টুইটার অ্যাকাউন্ট গত নভেম্বরে সাময়িক ব্লক করে দেওয়ায় এ বার প্রশ্নবাণের মুখে পড়তে হল টুইটার কর্তৃপক্ষকে। ২০২০ সালে আচমকাই কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর অ্যাকাউন্ট ব্লক করে দেয় টুইটার। সরিয়ে দেওয়া হয় তাঁর মূল ছবিটিও। পরে যদিও অ্যাকাউন্ট ফের চালু করে দেওয়া হয়। কিন্তু তা নিয়ে বিতর্ক পিছু ছাড়ছে না টুইটার কর্তৃপক্ষের। বৃহস্পতিবার এ নিয়ে সংসদীয় কমিটির সামনে জেরবার হতে হল সংস্থার আধিকারিকদের। তাঁদের কাছে জানতে চাওয়া হয়, দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর অ্যাকাউন্ট ব্লক করার অধিকার কে দিয়েছে তাঁদের। যদিও শাহের অ্যাকাউন্ট ব্লক করে দেওয়া ‘অনিচ্ছাকৃত ভুল’ ছিল বলে টুইটারের তরফে সাফাই দেওয়া হয়।
ঘৃণা ভাষণ এবং প্ররোচনামূলক পোস্ট রুখতে সম্প্রতি একাধিক পদক্ষেপ করেছে টুইটার। যে কারণে ক্যাপিটল হামলায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে সম্প্রতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের অ্যাকাউন্টও সাময়িক ব্লক করে দেয় তারা। তাদের এই ‘সাহসী’ পদক্ষেপ একদিকে যেমন প্রশংসা কুড়িয়েছিল, তেমনই ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্টের অ্যাকাউন্ট ব্লক করা নিয়ে তীব্র সমালোচনার মুখেও পড়তে হয়েছিল তাদের। নাগরিকদের নিরাপত্তা, সোশ্যাল মিডিয়ার অপব্যবহার এবং ভার্চুয়াল দুনিয়ায় মহিলাদের নিরাপত্তা সংক্রান্ত একাধিক ব্যবস্থা নেওয়ার কথা সেই সময় জানায় টুইটার। তখন বিজেপি-র পক্ষ থেকে অবশ্য এই ঘটনার সমালোচনা করা হয়েছিল।
গত নভেম্বরে অমিতের টুইট অ্যাকাউন্ট ব্লক করা নিয়ে বৃহস্পতিবার সংসদীয় কমিটির সামনে ডেকে পাঠানো হয় দুই সোশ্যাল মিডিয়া জায়ান্ট, টুইটার এবং ফেসবুকের আধিকারিকদের। যাবতীয় নীতি-নিয়ম স্পষ্ট ভাবে জানাতে বলা হয়। সেখানেই শাহের অ্যাকাউন্টের প্রসঙ্গ উঠে আসে বলে জানা গিয়েছে। দিল্লি সূত্রে খবর, বিজেপি থেকে যাঁরা সংসদীয় কমিটিতে রয়েছেন, মূলত তাঁদেরই আক্রমণের মুখে পড়েন টুইটার আধিকারিকরা। জবাবে টুইটার আধিকারকার জানান, শাহের অ্যাকাউন্ট ব্লক করে দেওয়ার বিষয়টি একেবারেই ‘অনিচ্ছাকৃত ভুল’ ছিল। তবে সেই সময় ‘ডিসপ্লে পিকচার’ অর্থাৎ প্রোফাইলের মূল ছবিটি নিয়ে কপিরাইট সংক্রান্ত অভিযোগ জমা পড়ে। তাই ছবিটিও সরিয়ে দেওয়া হয়।
টুইটারের সত্যাসত্য যাচাইয়ের প্রক্রিয়া নিয়েও প্রশ্ন তোলেন সংসদীয় কমিটির সদস্যরা। জবাবে সংস্থার আধিকারিকরা জানান, ভার্চুয়াল দুনিয়াতেও সকলের জন্য স্বাস্থ্যকর পরিবেশ গড়ে তুলতে চাইছেন তাঁরা। কিন্তু তাঁদের এই জবাবে সন্তুষ্ট হতে পারেননি সংসদীয় কমিটির সদস্যরা। এ নিয়ে পক্ষপাতিত্ব করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তাঁরা। ৩৭০ ধারা প্রত্যাহারের পরেও মানচিত্রে লেহ-কে কেন জম্মু-কাশ্মীরের অংশ বলে দেখানো হয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়েন টুইটারের আধিকারিকরা। তথ্য ও প্রযুক্তি সংক্রান্ত সংসদীয় স্ট্যান্ডিং কমিটিও আলাদা করে ফেসবুক এবং টুইটার আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলে।