নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।
বাংলাদেশের বিজয় দিবসে আজ সংসদে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর কৃতিত্ব ও বীরত্বকে স্মরণ করিয়ে বর্তমান সরকারকে নিয়ে প্রশ্নচিহ্ন তৈরি করল কংগ্রেস। বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা রক্ষার জন্য কেন্দ্রের ভূমিকা নিয়ে সরব হয়েছেন কংগ্রেস সাংসদ প্রিয়ঙ্কা গান্ধী, তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং লোকসভার নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। মোদী সরকারের এই প্রসঙ্গে কোনও সদর্থক ভূমিকা না নেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন রাজ্যসভায় প্রধান বিরোধী দলনেতা তথা কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গেও। আজ লোকসভার জ়িরো আওয়ারে সুদীপ বলেন, বিষয়টি নিয়ে তিনি এবং সৌগত রায় কথা বলেছেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে। তাঁরা চাইছেন অবিলম্বে প্রধানমন্ত্রী অথবা বিদেশমন্ত্রী সংসদে এসে বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে বিবৃতি দিন। সে দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপরে যে পীড়ন হচ্ছে তা বন্ধ করতে কী ভূমিকা নিচ্ছে ভারত সরকার তা জানানোর দাবি তুলেছেন সুদীপ।
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের অবসান ঘটেছিল। বাংলাদেশ-পাকিস্তানের যুদ্ধে ভারতীয় সেনার কাছে পর্যুদস্ত হওয়ার পর এই দিনটিতেই আনুষ্ঠানিক ভাবে ভারতের কাছে নতি স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছিল পাক সেনা। এ দিন লোকসভায় দাঁড়িয়ে সেই ঐতিহাসিক মুহূর্ত স্মরণ করেন ওয়েনাড়ের সাংসদ প্রিয়ঙ্কা গান্ধী।
প্রিয়ঙ্কার দাবি, তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের উপরে যখন পশ্চিম পাকিস্তানের সেনা নিদারুণ অত্যাচার চালাচ্ছে, তখন বাকি বিশ্ব শুধু দর্শকের ভূমিকা পালন করলেও (প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর নেতৃত্বাধীন) তৎকালীন ভারত সরকার ঝাঁপিয়ে পড়েছিল বাংলাদেশকে রক্ষা করতে। প্রিয়ঙ্কার কথায়, ‘‘আজ সেই বাংলাদেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপরে নিপীড়ন চলছে। লাগাতার আক্রান্ত হচ্ছেন হিন্দু, খ্রিস্টান-সহ বিভিন্ন ধর্ম ও সম্প্রদায়ের মানুষ। এ বার সময় এসেছে ভারতের ফের এক বার বাংলাদেশ নিয়ে পদক্ষেপ করার।’’ প্রিয়ঙ্কার বক্তব্য, প্রথমত, ভারতকে অবিলম্বে এই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে হবে। দ্বিতীয়ত, দিল্লিকে বাংলাদেশের বর্তমান প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে অত্যাচার বন্ধ করতে পদক্ষেপ করতে হবে। লোকসভার বাইরে সংসদ চত্বরে দাঁড়িয়ে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, তিনি লোকসভায় বিজয় দিবস নিয়ে বলতে চেয়েছিলেন কিন্তু তাঁকে বিবৃতি শেষ করতে দেওয়া হয়নি।
তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বিদেশসচিব মিস্রীর ঢাকা সফরের প্রসঙ্গ তুলে বলেন, “আগেও বলেছি বাংলাদেশে ধারাবাহিক ভাবে সংখ্যালঘু নিপীড়নের চরম নিন্দা করছে পশ্চিমবঙ্গের সরকার। কেন্দ্রের উচিত এই বিষয়ে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া। বিদেশসচিব বাংলাদেশে গিয়েছিলেন কিন্তু সেখানে কী আলোচনা হল সে বিষয়ে সংসদে কিছু জানানো হয়নি। বিদেশমন্ত্রীর উচিত বিবৃতি দেওয়া। এটা সংসদের নিয়মের মধ্যে পড়ে।” রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খড়্গের কথায়, “পাকিস্তানকে দু’টুকরো করে বাংলাদেশকে স্বাধীন করতে ভারতের বাহাদুর নেত্রী ইন্দিরা গান্ধীর অবদান স্মরণীয় আজকের দিনে। এক লক্ষ পাক সেনাকে তিনি বন্দি করেছিলেন। এখন ভারত সরকার চোখ খুলে সে দেশের সংখ্যালঘুদের বাঁচানোর চেষ্টা তো করুক।”