Omar Abdullah

প্রতিশ্রুতি পূরণে ওমরের বাধা স্বশাসন না থাকা

এ দিকে সরকার প্রতিশ্রুতি পূরণ করছে না বলে বার বার অভিযোগ তুলছে বিধানসভায় বিরোধী দলগুলি।

Advertisement
সাবির ইবন ইউসুফ
শ্রীনগর শেষ আপডেট: ২৯ নভেম্বর ২০২৪ ০৯:১৫
জম্মু ও কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা।

জম্মু ও কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা।

বিধানসভা নির্বাচনে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে বিজয়ী হয়েও সরকার গঠনের পরে প্রতিশ্রুতি রাখতে হিমশিম খাচ্ছেন জম্মু ও কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা। এ বিষয়ে তাঁর সামনে প্রধান প্রতিবন্ধক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসাবে বিভিন্ন বিষয়ে স্বাধীনতার অভাব। জম্মু ও কাশ্মীরে নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠিত হলেও এখনও রাজ্যের মর্যাদা দেওয়া হয়নি। ফলে প্রায় সব গুরুত্বপূর্ণ কাজকর্মে আসল নিয়ন্ত্রক উপরাজ্যপাল মনোজ সিনহা।

Advertisement

এ দিকে সরকার প্রতিশ্রুতি পূরণ করছে না বলে বার বার অভিযোগ তুলছে বিধানসভায় বিরোধী দলগুলি। এই পরিস্থিতিতে যে সব বিষয়ে মোটামুটি একটা ঐকমত্য রয়েছে, সেগুলি বাস্তবায়নে অগ্রাধিকার দিচ্ছে ওমরের ন্যাশনাল কনফারেন্স সরকার। উদাহরণ হিসাবে জম্মু ও কাশ্মীরের জন্য শীঘ্র রাজ্যের মর্যাদা ফেরানোর দাবিতে বিধানসভায় বিল পেশ করা। এতে বিজেপিরও আপত্তি নেই। ধাপে ধাপে রাজ্যের মর্যাদা ফেরানোর অঙ্গ হিসাবেই নির্বাচন ও বিধানসভা গঠন হয়েছে। এর পরেই ওমর কাশ্মীরের অর্থবর্ষ নভেম্বর থেকে অক্টোবর পর্যন্ত করার প্রস্তাব এনেছেন। শীত ও ফল-ফসলের মরসুম ধরে বরাবর কাশ্মীরে নভেম্বর থেকে অক্টোবরই অর্থ বর্ষ ছিল। কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হওয়ার পরে উপরাজ্যপাল সারা দেশের সঙ্গে জম্মু ও কাশ্মীরেও এপ্রিল থেকে মার্চ পর্যন্ত অর্থবর্ষ চালু করেন। কিন্তু পুরনো অর্থবর্ষে ফেরত যাওয়াটা জনপ্রিয় দাবি হওয়ায় কোনও রাজনৈতিক দলেরই তেমন আপত্তি নেই।

কিন্তু ন্যাশনাল কনফারেন্স সরকারের সামনে প্রধান চ্যালেঞ্জ কাশ্মীরের জন্য বিশেষ অধিকারের বিষয়টি ফিরিয়ে আনা। এ নিয়ে সতর্ক ওমর সরকার। সম্প্রতি এ বিষয়ে তারা বিধানসভায় পেশের জন্য প্রস্তাবের যে খসড়া প্রকাশ করেছে, তা নিয়ে সরব হয়েছে বিরোধী পিডিপি। দলের নেতা ওয়াহিদ পারার অভিযোগ, প্রস্তাবের ভাষা খুবই নরম। ২০১৯-এর ৫ অগস্ট কাশ্মীর থেকে যে ৩৭০ অনুচ্ছেদ প্রত্যাহার করা হয়, তার উল্লেখটুকুও প্রস্তাবে রাখা হয়নি। পারার অভিযোগ, ক্ষমতায় এসে কাশ্মীরের চেয়ে দিল্লির আপন হতে চেষ্টা করছে ওমরের দল। তাই ৩৭০ অনুচ্ছেদ লোপাটের উল্লেখ নেই। যদিও সরকারের দাবি, ভাষা যাই হোক, কাশ্মীরের জন্য বিশেষ অধিকারের বিষয়টি ফিরিয়ে আনাটাই অগ্রাধিকার। প্রস্তাবে ভাষা নির্বাচনে সতর্ক হতে হয়েছে, যাতে কোনও মহল থেকে আপত্তি না আসে।

২০১৯-এর পরে নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে ধৃত কাশ্মীরি যুবকদের মুক্তির বিষয়টি বড় প্রতিশ্রুতি ছিল ওমরের। বিভিন্ন অভিযোগে যে সব সরকারি কর্মচারীকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছিল, তাদের পুনর্বহালও ওমর সরকার চায়। এটাও ছিল নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি। কিন্তু কেন্দ্রশাসিত জম্মু ও কাশ্মীরের আইন, বিচার, পুলিশ থেকে দুর্নীতি দমন— সবই উপরাজ্যপাল সিনহার নিয়ন্ত্রণে। রাজ্যের মর্যাদা ফেরার জন্য হাত গুটিয়ে অপেক্ষা ছাড়া উপায় থাকছে না নতুন সরকারের।

যদিও ন্যাশনাল কনফারেন্সের মুখপাত্র ইমরান নবি বলছেন— তাঁর দল আশাবাদী, অচিরেই সব নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি রাখতে পারবে সরকার। কেন কোথায় প্রতিবন্ধকতা, কাশ্মীরের মানুষ ঠিকই বুঝছেন।

আরও পড়ুন
Advertisement