নিজস্ব চিত্র।
পাঠ্যবইয়ে ডুবে থেকে পড়াশোনা নয়। প্রথম শ্রেণি থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়ারা কী শিখতে পারছে, কতটা সার্বিক উন্নতি হচ্ছে, তা দেখার জন্য ২০২৩-এ স্কুলগুলিকে হলিস্টিক রিপোর্ট কার্ড তৈরির নির্দেশ দিয়েছিল শিক্ষা দফতর। এ বার সেই রিপোর্ট কার্ড তৈরির পাশাপাশি, প্রধানশিক্ষকদের নিয়ে ওরিয়েন্টেশন-এর উপরেও জোর দেওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছে সরকার।
চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে রাজ্যের সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির প্রধানশিক্ষকদের হলিস্টিক রিপোর্ট নিয়ে ওরিয়েন্টেশন শেষ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক স্তরের ডিআইরাই প্রধানশিক্ষকদের ওরিয়েন্টেশন করাবেন। এর জন্য প্রয়োজনীয় নথি এবং অন্যান্য আনুষঙ্গিক সামগ্রী তাঁদের পাঠিয়ে দেওয়া হবে।
২১ ও ২২ নভেম্বর দু’টি ব্যাচে ভাগ করে প্রত্যেকটি জেলায় প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক স্তরের ডিআইদের নিয়ে ওরিয়েন্টেশন করা হয়েছে। অনলাইন কর্মসূচিতে প্রথম দিন ১৫টি জেলা এবং দ্বিতীয় দিন ১০টি জেলার ডিআইরা উপস্থিত ছিলেন। সেই সময়েই শিক্ষকমহলের একাংশ প্রশ্ন তুলেছিল, শুধু জেলা পরিদর্শকদের ওরিয়েন্টেশন করিয়ে কী লাভ? স্কুলের শিক্ষকদেরও প্রশিক্ষণ এবং ওরিয়েন্টেশনের ব্যবস্থা করতে হবে। কারণ প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত ছাত্র-ছাত্রীদের রিপোর্ট তৈরি করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজ। এর জন্য দক্ষ শিক্ষাকর্মীও প্রয়োজন।
বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল জানিয়েছেন, শিক্ষা দফতর ও মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সমন্বয়ের অভাবে হলিস্টিক রিপোর্ট কার্ড গত বছর চালু হয়নি। এ বছর আগে থেকে প্রস্তুতি নিলেও শেষ পর্যন্ত কী হবে, সেটাই দেখার। তিনি আরও বলেন, “হলিস্টিক রিপোর্ট কার্ড ছাপার জন্য কয়েক কোটি টাকা খরচ হবে। এই টাকা স্কুলগুলোর পরিকাঠামো উন্নয়নে ব্যয় করা বেশি প্রয়োজন।”
প্রসঙ্গত, প্রথম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত ছাত্র-ছাত্রীদের সার্বিক অগ্রগতি খতিয়ে দেখতে এই প্রকল্পের ঘোষণা করে স্কুলশিক্ষা দফতর। চলতি বছরের জুলাই মাসে বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানানো হয়, ২০২৪ শিক্ষাবর্ষ থেকে এই প্রকল্প চালু হচ্ছে না। হঠাৎ এই প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়ে যায় স্কুলগুলি।
ন্যাশনাল কাউন্সিল অফ এডুকেশনাল রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং (এনসিইআরটি) এবং জাতীয় শিক্ষানীতিকে মান্যতা দিয়ে তৈরি হওয়া এই ‘হলিস্টিক রিপোর্ট কার্ড’-এ পড়ুয়াদের জ্ঞান অর্জন সম্পর্কে সবিস্তার তথ্যের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট পড়ুয়া ব্যক্তিগত ও সামাজিক ভাবে কী ভাবে নিজেকে তুলে ধরছে, তা-ও উল্লেখ করা হবে।