আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে নরেন্দ্র মোদী। — ফাইল চিত্র।
ভারতীয় সময় অনুযায়ী বুধবার মধ্যরাতে নানা দেশের পণ্যে ‘পাল্টা’ শুল্ক চাপানোর কথা ঘোষণা করেছে আমেরিকা। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, ‘বন্ধু’ ভারতের উপরেও এ বার বসতে চলেছে ২৬ শতাংশ শুল্ক। এর ফলে অদূর ভবিষ্যতে ভারত-আমেরিকা বাণিজ্য সম্পর্কে কী প্রভাব পড়তে চলেছে, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই জল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছে নানা মহলে। সেই আবহেই এ বার মুখ খুলল ভারত।
বৃহস্পতিবার একজন ঊর্ধ্বতন সরকারি আধিকারিক জানিয়েছেন, ভারতের উপর আমেরিকা ২৬ শতাংশ পারস্পরিক শুল্ক চাপানোর ফলে কী প্রভাব পড়তে চলেছে, তা এখনও বিশ্লেষণ করে দেখছে বাণিজ্য মন্ত্রক। সরকারি ওই সূত্রকে উদ্ধৃত করে সংবাদ সংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, আগামী ৫ এপ্রিল থেকে আমেরিকায় রফতানি করা সমস্ত পণ্যের উপর সর্বজনীন ১০ শতাংশ শুল্ক কার্যকর হবে। বাকি ১৬ শতাংশ শুল্ক কার্যকর হবে ১০ এপ্রিল থেকে।
আপাতত একটি দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যচুক্তি নিয়ে আলোচনা চলছে ভারত ও আমেরিকার। চলতি বছরের সেপ্টেম্বর-অক্টোবরের মধ্যেই চুক্তির প্রথম পর্যায়ের কাজ চূড়ান্ত করার লক্ষ্যে রয়েছে দুই দেশ। সেই আবহে এ-হেন শুল্ক-আঘাত কি বিপত্তি ডেকে আনবে? নানা মহলে এ রকম প্রশ্ন উঠলেও আদতে এমনটা ভাবছে না কেন্দ্র। সরকারি ওই কর্তা সংবাদ সংস্থাকে বলেন, ‘‘ঘোষিত শুল্কের প্রভাব এখনও বিশ্লেষণ করে দেখছে কেন্দ্র। তবে এখনই ভারতের জন্য কোনও উদ্বেগের কারণ নেই। ধাক্কা নয়, বরং এটি একটি মিশ্র পরিস্থিতি।’’ পাশাপাশি, তিনি এ-ও জানিয়েছেন যে, যদি কোনও দেশ আমেরিকার প্রতি সুর নরম করে, তা হলে সেই দেশের উপর চাপানো পারস্পরিক শুল্কও কমানোর কথা বিবেচনা করতে পারে ট্রাম্প প্রশাসন।
প্রসঙ্গত, যে দেশ আমেরিকার পণ্যে যতটা শুল্ক চাপিয়ে থাকে, ২ এপ্রিল থেকে সেই দেশের পণ্যে পাল্টা তার উপযুক্ত শুল্ক চাপানোর কথা জানিয়েছিলেন ট্রাম্প। দিনটিকে আগেই আমেরিকার ‘মুক্তি দিবস’ হিসাবে ঘোষণা করেছিলেন তিনি। বুধবার আমেরিকার স্থানীয় সময় অনুযায়ী বিকেল ৪টেয় (ভারতে রাত দেড়টা) এই ‘পাল্টা’ বা ‘পারস্পরিক শুল্ক’ নিয়ে সবিস্তার জানান মার্কিন প্রেসিডেন্ট। সেখানেই ঘোষণা করা হয়, ভারতের পণ্যের উপর ২৬ শতাংশ শুল্ক আরোপ করতে চলেছে আমেরিকা। ভারতীয় পণ্যের উপর শুল্ক বসানোর আগে ট্রাম্পের মুখে উঠে আসে ‘বন্ধু’ তথা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নামও। তিনি বলেন, “ভারতের প্রধানমন্ত্রী আমার খুব ভাল বন্ধু। সম্প্রতি তিনি আমেরিকা থেকে ঘুরেও গিয়েছেন। কিন্তু আমেরিকার সঙ্গে ঠিক করছে না ভারত।’’ অনুযোগের সুরে ট্রাম্প জানান, ভারত আমেরিকার পণ্যে ৫২ শতাংশ শুল্ক বসায়। সেই তুলনায় বরং ‘বন্ধু’ ভারতকে ছাড়ই দিয়েছে আমেরিকা! এই আবহে আপাতত পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে ভারত। তার পরেই বিকল্প উপায় নিয়ে চিন্তাভাবনা করবে নয়াদিল্লি।