US Tariff War

আমেরিকার ‘মুক্তি দিবসে’ আমদানি শুল্ক ঘোষণা ট্রাম্পের, ভারতের উপর ২৬% এবং চিনের উপর ৩৪% শুল্ক

ভারতের পণ্যের উপর ২৬ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে আমেরিকা। এই আবহে পরিস্থিতির উপর নজর রাখতে চাইছে ভারত। তার পর বিকল্প উপায় নিয়ে চিন্তাভাবনা করবে নয়াদিল্লি। চিন থেকে আমদানি করা পণ্যের উপর ৩৪ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০২৫ ০২:৪৪
ডোনাল্ড ট্রাম্প।

ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: রয়টার্স।

যে দেশ আমেরিকার পণ্যে যতটা শুল্ক চাপিয়ে থাকে, ২ এপ্রিল থেকে সেই দেশের পণ্যে পাল্টা তার উপযুক্ত শুল্ক চাপানোর কথা জানিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। দিনটিকে আগেই আমেরিকার ‘মুক্তি দিবস’ হিসাবে ঘোষণা করেন তিনি। বুধবার আমেরিকার স্থানীয় সময় অনুযায়ী বিকেল ৪টেয় (ভারতে রাত দেড়টা) এই ‘পাল্টা’ বা ‘পারস্পরিক শুল্ক’ নিয়ে সবিস্তার জানান মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ভারতের পণ্যের উপর ২৬ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে আমেরিকা। এই আবহে পরিস্থিতির উপর নজর রাখতে চাইছে ভারত। তার পর বিকল্প উপায় নিয়ে চিন্তাভাবনা করবে নয়াদিল্লি। চিন থেকে আমদানি করা পণ্যের উপর ৩৪ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে।

Advertisement

আমেরিকার অর্থনীতিবিদ ব্রায়ান কুলটন বলেন, “মার্কিন বাণিজ্য নীতিতে শুল্ক সংক্রান্ত এই পরিবর্তন দ্রুত কার্যকর হবে। যেখানে বিশ্বব্যাপী আর্থিক বৃদ্ধির হার ২.৬ শতাংশ থেকে কমে ২.৩ শতাংশ হয়েছে, সেখানে আমেরিকার মূল্যবৃদ্ধির হার কমেছে ১.৫ শতাংশ।” শুল্ক প্রয়োগের পদ্ধতি নিয়ে কোনও তথ্য প্রকাশিত হয়নি। তবে, কোন দেশের পণ্যে কত শুল্ক বসছে তা জানা গিয়েছে। কানাডা ও মেক্সিকো থেকে আমদানি করা দ্রব্যের ওপরে ২৫ শতাংশ শুল্ক চাপানো হবে। ভারত, চিন, ব্রাজিল, জাপান এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের জন্য নয়া শুল্কনীতি চাপানো হয়েছে। আমেরিকা ছাড়া অন্য যে কোন দেশের গাড়ির উপর ২৫ শতাংশ শুল্ক বসিয়েছেন ট্রাম্প।

ভারতের উপর ২৬ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে আমেরিকা। এ ছাড়া, চিনের উপর ৩৪%, ইউরোপীয় ইউনিয়নের উপর ২০%, ভিয়েতনাম ৪৬%, জাপান ২৪%, দক্ষিণ কোরিয়া ২৫%, যুক্তরাজ্য ১০%, তাইল্যান্ড ৩৬% এবং সুইৎজ়ারল্যান্ডের উপর ৩১% শুল্ক চাপানো হয়েছে।

ভারতীয় পণ্যের উপর বসানো শুল্ক প্রসঙ্গে ট্রাম্পের মুখে উঠে আসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদীর নামও। তিনি বলেন, “ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আমার খুব ভাল বন্ধু। সম্প্রতি তিনি আমেরিকা থেকে ঘুরেও গিয়েছেন।” এর পরেই তিনি আমেরিকার পণ্যের উপর বসানো ভারতীয় শুল্ক নিয়ে অনুযোগ করেন। প্রসঙ্গত, আমেরিকার পণ্যের উপর ভারতীয় শুল্কের হার ৫২ শতাংশ।

মঙ্গলবার হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, ট্রাম্পের ঘোষণার পরেই ‘পাল্টা শুল্ক’ কার্যকর হয়ে যাবে। ট্রাম্পের প্রেস সচিব ক্যারোলিন লেভিট জানান, আমেরিকার জনগণের জন্য যাতে দুর্দান্ত একটি শুল্ক চুক্তি হয়, তার জন্য সারা দিন অর্থনৈতিক উপদেষ্টাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন ট্রাম্প। পাল্টা শুল্ক আরোপ করা হলে মার্কিন অর্থনীতিতে কী রকম এবং কী প্রভাব পড়তে পারে, তা নিয়েও ওই বৈঠকে আলোচনা হয়েছে বলে খবর। হোয়াইট হাউসের তরফে এ-ও জানানো হয়েছে, কোনও দেশের রাষ্ট্রপ্রধান সংশ্লিষ্ট দেশে উৎপাদিত পণ্যে শুল্কের হার কমানোর আর্জি জানিয়ে ট্রাম্পের সঙ্গে যোগাযোগ করলে অবশ্যই তাতে সাড়া দেবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

সোমবার আমেরিকা পরিসংখ্যান তুলে ধরে জানিয়েছিল, ইউরোপীয় ইউনিয়ন আমেরিকার দুগ্ধজাত দ্রব্যে ৫০ শতাংশ, জাপান আমেরিকায় উৎপাদিত চালে ৭০০ শতাংশ, ভারত আমেরিকার কৃষিজাত পণ্যে ১০০ শতাংশ, কানাডা আমেরিকার দুগ্ধজাত দ্রব্যে প্রায় ৩০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে। অনেকেরই অনুমান, সংশ্লিষ্ট দেশগুলি থেকে আমেরিকায় রফতানি হওয়া পণ্যে সম পরিমাণ শুল্ক চাপাতে পারে আমেরিকা। সোমবার অবশ্য ট্রাম্প জানান, তিনি শুনেছেন ভারত আমেরিকার পণ্যে শুল্কের হার কমাতে চলেছে। তবে এই বিষয়ে নয়াদিল্লির তরফে আনুষ্ঠানিক ভাবে কিছু জানানো হয়নি।

Advertisement
আরও পড়ুন