বঢরার ‘দুর্নীতির’ প্রমাণ নেই, কবুল হরিয়ানার। ছবি: সংগৃহীত।
ন’বছর আগে অভিযোগ তুলেছিলেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। শুক্রবার তাঁর দল বিজেপি পরিচালিত হরিয়ানা সরকার সেই অভিযোগ কার্যত ‘মিথ্যা’ বলে মেনে নিল আদালতে! পঞ্জাব এবং হরিয়ানা হাই কোর্টে হলফনামা দিয়ে জানানো হল, কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়ঙ্কা গান্ধীর স্বামী রবার্ট বঢরার বিরুদ্ধে জমি কেলেঙ্কারির কোনও প্রমাণ এখনও মেলেনি।
রবার্টের সংস্থা স্কাইলাইট হসপিটালিটির সঙ্গে রিয়েল এস্টেট সংস্থা ডিএলএফের গুরুগ্রামে জমি-চুক্তিতে এখনও বেআইনি কিছুর সন্ধান পাওয়া যায়নি বলেও আদালতে জানিয়েছে হরিয়ানার বিজেপি মুখ্যমন্ত্রী মনোহরলাল খট্টরের সরকার। হলফনামায় লেখা হয়েছে, ‘‘স্কাইলাইট হসপিটালিটি ২০১২ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর ডিএলএফ ইউনিভার্সাল লিমিটেডকে সাড়ে ৩ একর জমি বিক্রি করেছিল। সেই লেনদেনে অনিয়ম হয়েছিল বলে মানেসরের তহশিলদার (মহকুমা শাসক) রিপোর্ট দিয়েছিলেন।’’
রবার্টের সংস্থার জমি-চুক্তিতে আর্থিক লেনদেনের বিষয়ে হরিয়ানা পুলিশ এখনও তদন্ত করছে জানিয়ে হলফানামায় বলা হয়েছে, ‘‘২০২৩ সালের ২২ মার্চ এ বিষয়ে বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গড়া হয়েছে।’’ প্রসঙ্গত, ২০১২ সালে ডিএলএফ-এর সঙ্গে বঢরার ওই জমি-চুক্তি খারিজ করে দিয়েছিলেন হরিয়ানার জমি রাজস্ব দফতরের আমলা অশোক খেমকা। কিন্তু হরিয়ানার তৎকালীন কংগ্রেস মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র সিংহ হুডার সরকার পরে এ নিয়ে একটি তদন্ত কমিটি গড়েছিল। গত জুলাই মাসে ওই কমিটি জানিয়ে দেয়, রবার্টের জমি-চুক্তি বৈধ ছিল।
২০১৪-র অক্টোবরে হরিয়ানায় বিধানসভা ভোটের প্রচারে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নতুন করে ‘সনিয়া গান্ধীর জামাইয়ের’ বিরুদ্ধে জমি দুর্নীতির অভিযোগ তোলেন। সেই বিধানসভা ভোটে কংগ্রেসকে হারিয়ে বিজেপি ক্ষমতায় আসে। কয়েক বছর পরে রবার্ট এবং হুডার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করে তদন্তে নামে খট্টর সরকারের পুলিশ। কংগ্রেস অবশ্য গোড়া থেকেই সাফাই দিয়েছে, যাবতীয় স্ট্যাম্প ডিউটি দিয়েই ২০০৮ সালে বাণিজ্যিক এলাকায় সাড়ে তিন একরের জমি কিনেছিল রবার্ট বঢরার সংস্থা। তার পর লাইসেন্সও পায়। ২০২০ সালে জমিটির ন্যায্য কর মিটিয়ে ডিএলএফ সংস্থাকে বিক্রি করেছিল তারা। পুরো প্রক্রিয়ায় কোনও অনিয়ম হয়নি। শুক্রবার তা কার্যত স্বীকার করে নিল মোদীর দল পরিচালিত হরিয়ানা সরকার।