অমিত শাহ। ফাইল চিত্র।
দু’দিন আগেই রাজ্যের ওবিসি মুসলিমদের ৪ শতাংশ সংরক্ষণ বাতিল করেছে কর্নাটক সরকার। আজ সেই সিদ্ধান্তের প্রশংসায় সরব হলেন কর্নাটকে ভোট প্রচারে আসা অমিত শাহ। তিনি বলেন, বিরোধীদের অভ্যাস থাকলেও, বিজেপি কখনও ধর্মের ভিত্তিতে তোষণের রাজনীতি করে না। যদিও সে দিনই অন্য আর একটি সিদ্ধান্তে কর্নাটকের বিজেপি সরকার জানিয়ে দেয় মুসলিমদের বাতিল হওয়া ৪ শতাংশ সংরক্ষণের ফায়দা সমান ভাবে পাবে রাজ্যের দুই হিন্দু গোষ্ঠী লিঙ্গায়েত ও ভোক্কালিগা সম্প্রদায়। আবার, কংগ্রেস দাবি করেছে— ক্ষমতায় ফিরেই ওই সিদ্ধান্ত খারিজ করবে তাঁরা। যা দেখে অনেকেই বলছেন, দু’পক্ষই যে যার মতো নিজেদের ভোটারদের বার্তা দিতে মরিয়া।
আগামী মাসেই বিধানসভা নির্বাচন ঘোষণা হতে চলেছে ওই রাজ্যে। তাই সরকারের ওই সিদ্ধান্তের পক্ষে সওয়াল করে ওই রাজ্যের বিদর এলাকায় আজ অমিত শাহ বলেন, ধর্মের ভিত্তিতে সংরক্ষণের বিষয়টি সংবিধান-বিরোধী। এর পরেই ওই সিদ্ধান্তের জন্য কংগ্রেসকে দায়ী করে শাহ বলেন, মুসলিমদের এই তোষণের রাজনীতির জন্য কংগ্রেসই দায়ী। শাহের দাবি, বিজেপি এ ধরনের তোষণের রাজনীতি করে না। তাই রাজ্যের বিজেপি সরকার ওই সংরক্ষণ নীতি পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সরকারের ওই সিদ্ধান্ত বৃহত্তর হিন্দু সমাজকে খুশি করবে এবং মেরুকরণের ইতিবাচক প্রভাব ভোটের বাক্সে পড়বে বলে আশা করছেন বিজেপি নেতারা।
অমিত শাহ ওবিসি শ্রেণির মুসলিমদের সংরক্ষণের জন্য কংগ্রেসকে দায়ী করলেও, বাস্তবে ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল ১৯৯৪ সালে জনতা দলের মুখ্যমন্ত্রী এইচ ডি দেবগৌড়ার আমলে। কংগ্রেসের অভিযোগ, ভোটের ঠিক আগে এ নিয়ে হিন্দু-মুসলমানের মধ্যে বিভাজনের রাজনীতি করে ফায়দা নেওয়ার কৌশল নিয়েছে বিজেপি। কংগ্রেসের প্রশ্ন, সিদ্ধান্ত বাতিল আগে কেন করা হল না? পরিকল্পিত ভাবে ভোটের আগে সমাজকে বিভাজিত করার লক্ষ্যে ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আজ কংগ্রেসের নেতা ডি শিবকুমার বলেন, “সরকারের সিদ্ধান্ত ভিত্তিহীন। সংরক্ষণের সুবিধে পিছিয়ে পড়া সমাজের পক্ষে যাওয়া উচিত। তুলনায় যাদের দেওয়া হয়েছে সেই ভোক্কালিগা বা লিঙ্গায়েতদের আরও দেওয়া অর্থহীন। কারণ সামাজিক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠার দিক থেকে ওই দুই শ্রেণিই যথেষ্ট সমৃদ্ধ।” শিবকুমারের দাবি, আগামী দেড় মাসের মধ্যে ভোট হবে রাজ্যে। ক্ষমতা হারাবে বিজেপি। কংগ্রেস ক্ষমতায় ফিরে ফের মুসলিম ওবিসি-দের ৪ শতাংশ সংরক্ষণ ফিরিয়ে আনবে। সরকারের ওই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে আদালতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সুন্নি উলেমা বোর্ডও।