গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
নরেন্দ্র মোদীর মন্ত্রিসভায় যোগ দেওয়ার কোনও প্রস্তাব তাঁকে দেওয়া হয়নি। আর তা দেওয়া হলেও তিনি গ্রহণ করতেন না। ভাইপো অজিত পওয়ারের সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ ঘিরে মহারাষ্ট্র রাজনীতিতে নানা জল্পনার আবহে মঙ্গলবার এ কথা জানালেন এনসিপি প্রধান শরদ পওয়ার। বিজেপির সহযোগী হওয়ার সম্ভাবনা খারিজ করে দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘কিছু শুভানুধ্যায়ী আমাকে অবস্থান বদলের পরামর্শ দিয়েছিলেন। কিন্তু আমি জানিয়ে দিয়েছি, তা সম্ভব নয়।’’
মোদী মন্ত্রিসভায় যোগদানের জন্য অজিত তাঁকে কোনও প্রস্তাব দেননি জানিয়ে শরদ আরও বলেন, ‘‘কে আমাকে প্রস্তাব দেবে? আমিই তো দলের সবচেয়ে সিনিয়র নেতা।’’ শনিবার রাতে পুণের কোরেগাঁও পার্ক এলাকায় শিল্পপতি অতুল চোরদিয়ার বাংলোয় প্রায় ঘণ্টাখানেক বৈঠক হয় শরদ এবং অজিতের। এই প্রসঙ্গে এনসিপি নেতা আমোল মিতকারি সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে বলেন, “খুব সম্ভবত পারিবারিক কোনও বৈঠকে বসেছিলেন দুই নেতা।” এই প্রসঙ্গে বিজেপির তরফে জানানো হয়েছে, বৈঠক কেন হয়েছে, কী বিষয়ে আলোচনা হয়েছে, তা শরদ আর অজিতই বলতে পারবেন।
গত ২ জুলাই এনসিপিতে পটপরিবর্তন মহারাষ্ট্র রাজনীতিতে বদলে দিয়েছে বেশ কয়েকটি সমীকরণ। অজিত-সহ ন’জন বিদ্রোহী এনসিপি বিধায়কের মন্ত্রিত্ব এবং ভাল দফতর লাভের পরে এনডিএর অন্দরে ক্রমশ তাঁর শিবিরের পাল্লা ভারী হচ্ছে বলে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ মনে করেছেন। এই পরিস্থিতি কাকা শরদ ফের বিদ্রোহী ভাইপোর সঙ্গে সমঝোতার পথে হাঁটতে পারেন বলে মহারাষ্ট্রের বিজেপি বিরোধী জোট ‘মহা বিকাশ আঘাড়ী’র অন্য দুই শরিক কংগ্রেস এবং শিবসেনা(উদ্ধব)-এর নেতাদের একাংশের আশঙ্কা রয়েছে।
রাজ্যের নতুন উপমুখ্যমন্ত্রী হিসাবে অজিতের শপথের পরে এনসিপির অন্দরে কার্যত ‘গৃহযুদ্ধ’ শুরু হয়েছিল। অজিত-সহ তাঁর শিবিরের এনসিপি নেতাদের দল থেকে বহিষ্কার করেছিলেন শরদ। পাল্টা পদক্ষেপ করে অজিত শিবির। এনসিপির পতাকা এবং নির্বাচনী প্রতীক ‘ঘড়ি’-র অধিকার দাবি করে নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হয় তাঁরা। কমিশনের কাছে একটি হলফনামা দিয়ে ক্যাভিয়েট দাখিল করেছিল শরদ গোষ্ঠী। মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশন দু’পক্ষকে দাবির সপক্ষে তথ্যপ্রমাণ-সহ বক্তব্য পেশের জন্য তিন সপ্তাহ সময় দিয়েছে।
ভাইপোর ‘বিদ্রোহে’ শরদ জানিয়েছিলেন, তিনি এনসিপি-র পুনর্নির্মাণ করবেন। এনসিপি পরিবারে ভাঙনের পর অবশ্য শরদকেই দলের প্রধান নেতা হিসাবে উল্লেখ করেছেন অজিত। এই পরিস্থিতিতে আগেও শরদের সঙ্গে দেখা করেছেন অজিত। যা নতুন মাত্রা পেয়েছিল শনিবার আবার কাকা-ভাইপোর সাক্ষাতের পরে। কিন্তু শরদের মঙ্গলের মন্তব্য তা স্তিমিত করে দিল বলেই মনে করা হচ্ছে।