নরেন্দ্র মোদী (বাঁ দিকে) এবং অরবিন্দ কেজরীওয়াল (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
লোকসভার পরে এ বার রাজ্যসভাতেও দিল্লির আমলা নিয়োগ এবং বদলি সংক্রান্ত ‘জাতীয় রাজধানী অঞ্চল দিল্লি (সংশোধনী) বিল ২০২৩’ পাশ করিয়ে নিল নরেন্দ্র মোদী সরকার। সোমবারও সংসদের উচ্চকক্ষে কেন্দ্রের তরফে বিলটি পেশ করা হয়। এর পর ভোটাভুটিতে বিলের পক্ষে ১৩১ এবং বিপক্ষে ১০২টি ভোট পড়ে। আড়াই মাস আগে কেন্দ্র সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশকে পাশ কাটিয়ে দিল্লির প্রশাসনিক ক্ষমতার রাশ হাতে রাখার জন্য যে অর্ডিন্যান্স (অধ্যাদেশ) জারি করেছিল, সংসদের দু’কক্ষে পাশ করিয়ে তা পুরোদস্তুর আইনের চেহারা দেওয়ার প্রক্রিয়া কার্যত শেষ পর্যায়ে পৌঁছল। রাষ্ট্রপতি দ্রোপদী মুর্মুর সম্মতি পেলেই আইনে রূপান্তরিত হবে মোদী সরকারের ‘দিল্লি দখলের’ প্রক্রিয়া।
শীর্ষ আদালত গত মাসে জানিয়েছিল, অর্ডিন্যান্সের সাংবিধানিক বৈধতা খতিয়ে দেখা হবে। সেই সঙ্গে যাচাই করা হবে, এ বিষয়ে সংসদের অধিকারের সীমাও। এই পরিস্থিতিতে তড়িঘড়ি বিল পাশ করিয়ে ‘দিল্লি দখলের’ জন্য কেন্দ্রের ব্যগ্রতা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠেছে। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরীওয়ালের দল আম আদমি পার্টি (আপ)-সহ বিরোধীরা বিলকে ‘অসাংবিধানিক’ বলেছেন। অন্য দিকে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেন, ‘‘দিল্লিতে সুষ্ঠু পরিষেবার স্বার্থেই এই আইন প্রয়োজন।’’ রাজ্যসভায় ভোটাভুটিতে সোমবার হাজির ছিলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী নবতিপর মনমোহন সিংহও।
রাজ্যসভায় বর্তমানে ২৩৭ জন সাংসদ আছেন। দিল্লি বিলটি পাশ করানোর জন্য সরকারের ১১৯ জন সাংসদের সাহায্য প্রয়োজন। বিজেপি এবং তার সহযোগী দলগুলির ১০৫ জন সাংসদ আছেন রাজ্যসভায়। অন্ধ্রপ্রদেশের শাসকদল ওয়াইএসআর কংগ্রেস এবং ওড়িশার শাসকদল বিজু জনতা দল (বিজেডি)-র ন’জন করে সাংসদ দলীয় নির্দেশ মেনে এই বিলে মোদী সরকারকে সমর্থন করার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় সংসদের উচ্চকক্ষেও শেষ পর্যন্ত মোদী সরকারের জয় নিশ্চিত বলেই রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের ধারণা ছিল। শেষ পর্যন্ত হলও তাই।
প্রসঙ্গত, গত ১১ মে প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চ জানিয়েছিল, আমলাদের রদবদল থেকে যাবতীয় প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার রয়েছে দিল্লির নির্বাচিত সরকারের। এর পর হঠাৎ গত ১৯ মে গভীর রাতে অর্ডিন্যান্স এনে ১০ পাতার গেজেট বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে নরেন্দ্র মোদী সরকার। তাতে বলা হয়, ‘জাতীয় রাজধানী সিভিল সার্ভিসেস কর্তৃপক্ষ’ গঠন করা হচ্ছে। আমলাদের নিয়োগ ও বদলির ব্যাপারে তাঁরাই সিদ্ধান্ত নেবেন।