Jharkhand Assembly Election 2024

জন্মবার্ষিকীর মঞ্চে কংগ্রেসকে নিশানা

'জনজাতি গৌরব দিবস’ উদ্‌যাপনে আজ সকালেই বিহারের জামুই সফরে আসেন মোদী। এই নিয়ে গত তিন দিনে এটা প্রধানমন্ত্রীর তৃতীয় বিহার সফর।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৬ নভেম্বর ২০২৪ ০৮:০৩
(বাঁ দিকে)নরেন্দ্র মোদী, রাহুল গান্ধী (ডান দিকে)

(বাঁ দিকে)নরেন্দ্র মোদী, রাহুল গান্ধী (ডান দিকে) —ফাইল চিত্র।

জনজাতির অধিকার আদায়ের লড়াইকে সামনে রেখে এ বার ঝাড়খণ্ড বিধানসভা নির্বাচনে গদি দখলের লক্ষ্যে ঝাঁপিয়েছেন বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব। রাজ্যের ২৮টি সংরক্ষিত বিধানসভা আসনের মধ্যে দ্বিতীয় দফায় ভোট বাকি ৮টিতে। সাঁওতাল পরগনা অঞ্চলে এই নির্বাচনকে পাখির চোখ করে আজ পার্শ্ববর্তী রাজ্যে বিরসা মুন্ডার ১৫০তম জন্মবার্ষিকীর মঞ্চকে পুরোদস্তুর কাজে লাগালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁর বার্তা, কংগ্রেস সরকার স্বার্থপরের মতো স্বাধীনতা যুদ্ধে জনজাতির অবদানকে মুছে দিয়েছে। পিছিয়ে পড়া অংশের উন্নতির জন্য কিছুই করেনি।

Advertisement

অন্য দিকে ঝাড়খণ্ডের জনসভা থেকে আজ মোদীকে পাল্টা আক্রমণ করেছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। তাঁর কথায়, "মোদী এবং আরএসএস এই সংবিধানকে শেষ করে দিতে চায় কারণ এই গ্রন্থে দলিতকে সম্মান করার কথা রয়েছে। আমি মোদীজিকে বলছি, যদি ধ্বংস করতে হয়, তা হলে সামনে আসুন। লুকিয়ে কিছু করবেন না। নরেন্দ্র মোদী আজ ধনপতিদের হাতের কাঠপুতুল। যা যা ধনপতিরা বলেন, তিনি তাই করেন। আপনাদের জমি জঙ্গল কেড়ে নেওয়ার কথা বললে তিনি তাই করেন। ‘মন কি বাত’ বলে ফের অম্বানির বিয়ে বাড়ি গিয়ে নাচ-গান দেখবেন।"

'জনজাতি গৌরব দিবস’ উদ্‌যাপনে আজ সকালেই বিহারের জামুই সফরে আসেন মোদী। এই নিয়ে গত তিন দিনে এটা প্রধানমন্ত্রীর তৃতীয় বিহার সফর। আজ সূচনা হল, বিরসা মুন্ডার ১৫০তম জন্মবার্ষিকী বর্ষ উদ্‌যাপন। বিরসা মুন্ডার সম্মানে মোদী এ দিন একটি স্মারক মুদ্রা এবং ডাকটিকিট উন্মোচন করলেন। শুধু বিরসা মুন্ডার জন্মদিন পালন করা নয়, এই অঞ্চলের প্রত্যন্ত গ্রামের উপজাতি সম্প্রদায়ের উন্নয়ন এবং পরিকাঠামোর উন্নতির লক্ষ্যে প্রায় ৬,৬৪০ কোটি টাকার একাধিক উন্নয়নমূলক প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন প্রধানমন্ত্রী। পাশাপাশি কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়নমন্ত্রী মনোহর লাল খট্টর আজ ঘোষণা করলেন, সরাইকালে খান চক-এর নাম হবে এ বার বিরসা মুন্ডা চক।

আজ জামুইয়ের অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকেই কংগ্রেসকে নিশানা করে মোদী বলেন, "আমাদের আগের সরকারগুলি বিপুল ভাবে পিছিয়ে পড়া জনজাতি সম্প্রদায়গুলির জন্য কিছুই করেনি। তাঁদের জীবনের সঙ্কট কমাতে আমরা শুরু করেছি ২৪ হাজার কোটি টাকার প্রধানমন্ত্রী জনমন যোজনা। দেশের সবচেয়ে পিছিয়ে থাকা জনজাতি সম্প্রদায়গুলির উন্নয়ন এবং ভিত গড়ার জন্য তৈরি এই যোজনা আজ এক বছরে পা দিল। এই সময়ের মধ্যে আমরা অতি পিছিয়ে পড়া জনজাতির জন্য হাজার হাজার পাকা ঘর করে দিয়েছি। পিছিয়ে পড়া জনজাতির বসতিগুলিকে সংযুক্ত করার জন্য শত শত কিলোমিটার রাস্তার কাজ শুরু হয়ে গেছে।"

জনজাতি গৌরব দিবসের ব্যাখ্যা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই উৎসবের মাধ্যমে শুরু হল জনজাতি গৌরবের বছর। ইতিহাসে যে বিরাট ঐতিহাসিক অন্যায় হয়েছে, তাকে শোধরানোর এ এক প্রয়াসও বটে। স্বাধীনতার পর থেকেই জনজাতি সম্প্রদায় দেশে তাদের প্রাপ্য মর্যাদা পায়নি। স্বাধীনতা সংগ্রামে তাদের বিরাট অবদান থাকা সত্ত্বেও স্বার্থপর পরিবারিক রাজনীতিকরা এই গুরুত্বপূর্ণ অবদানকে মুছে দেওয়ার চেষ্টা করেছে। আসলে এটাই রাজনীতি ছিল যে, ভারতের স্বাধীনতার জন্য শুধু মাত্র একটি দলকে কৃতিত্ব দেওয়া হবে। কিন্তু যদি একটি দল, একটি পরিবারই স্বাধীনতা এনে থাকে, তা হলে ভগবান বিরসা মুন্ডার উলগুলান আন্দোলন কেন হয়েছিল, সাঁওতাল বিদ্রোহ কী ছিল, কোল বিদ্রোহ কি ছিল?

তাঁর কথায়, "গত বছর আজকের দিনে আমি বিরসা মুন্ডার গ্রাম উলিহাতুতে ছিলাম। আজ আমি সেই ভূমিতে এসেছি, যেখানে শহিদ তিলকা মাঝি তাঁর শৌর্য দেখিয়েছেন। এ বারের এই আয়োজন আরও বিশেষ। আজ থেকে গোটা দেশে ভগবান বিরসা মুন্ডার ১৫০তম জন্মবার্ষিকীর উৎসব শুরু হচ্ছে। এই অনুষ্ঠানগুলি আগামী এক বছর ধরে চলবে। আজ দেশের শত শত জেলার প্রায় ১ কোটি মানুষ প্রযুক্তির মাধ্যমে আমাদের এই অনুষ্ঠানের সাথে যুক্ত।"

বিহার থেকে ফিরে দিল্লিতে ইন্দিরা গান্ধী স্পোর্টস কমপ্লেক্সে বরো জনজাতির প্রথম বরোল্যান্ড মহোৎসবের উদ্বোধন করেন মোদী।

আরও পড়ুন
Advertisement