দিল্লি আদালতে খুনের দায় স্বীকার করলেন শ্রদ্ধা ওয়ালকার খুনের দায়ে অভিযুক্ত আফতাব আমিন পুণাওয়ালা। —ফাইল চিত্র।
দিল্লির সাকেতের নিম্ন আদালতের বিচারকের কাছে খুনের কথা বললেন আফতাব। তিনি বিচারককে বলেন, ‘‘মাথা গরম ছিল, তাই রাগের মাথায় খুন করে ফেলেছি।’’ শুনানির শেষে আদালতে আফতাবের পুলিশ হেফাজতের মেয়াদ আরও চার দিন বাড়িয়েছে। অন্য দিকে, দিল্লি পুলিশের তদন্তে অসন্তোষ প্রকাশ করে সিবিআই তদন্ত চেয়ে জনস্বার্থ মামলা হয়েছিল দিল্লি হাই কোর্টে। সেই আবেদন খারিজ করে দিয়েছে প্রধান বিচারপতি সতীশচন্দ্র শর্মার ডিভিশন বেঞ্চ। আদালতের তরফে জানানো হয়, অভিযুক্ত পুলিশকে এখনও পর্যন্ত সব সঠিক তথ্য দিয়েছে। তদন্তও অনেক দূর এগিয়েছে, তা-ই দিল্লি পুলিশের কাছেই তদন্তভার থাকবে বলে জানিয়েছে দিল্লি হাই কোর্ট। দিল্লি পুলিশের দাবি, তাদের তরফে তদন্তের প্রায় ৮০ শতাংশ সমাধান করা হয়ে গিয়েছে।
ইতিমধ্যেই শ্রদ্ধা ওয়ালকার হত্যাকাণ্ড ঘিরে জোরকদমে চলেছে পুলিশি তদন্ত। একের পর এক নয়া তথ্য প্রকাশ্যে আসছে পুলিশের সামনে। দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে শ্রদ্ধাকে খুনের দায়ে অভিযুক্ত আফতাব আমিন পুণাওয়ালাকে। সম্প্রতি দক্ষিণ দিল্লির মেহরৌলীর জঙ্গল থেকে উদ্ধার করা হয়েছে মৃতদেহের খুলির একাংশ, কাটা কব্জি, হাঁটুর অংশ। তবে, দেহের এই অংশগুলি শ্রদ্ধার কি না, তা এখনও প্রমাণিত হয়নি।
সোমবার পুলিশি তদন্তে জানা গিয়েছে, দাঁতের সমস্যা থাকার কারণে এক দন্ত্য বিশেষজ্ঞের কাছে পরামর্শ নিতে গিয়েছিলেন শ্রদ্ধা। জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে ওই চিকিৎসক জানান, পুলিশ তাঁর কাছে চোয়ালের একটি অংশের ছবি নিয়ে আসে। তা দেখে চিকিৎসক জানান, ‘রুট ক্যানেল’ পদ্ধতিতে চিকিৎসা করিয়েছিলেন শ্রদ্ধা। তদন্তকারী এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, ‘‘সাধারণত দন্ত্য চিকিৎসকরা রোগীদের ‘ডেন্টাল রেকর্ড’ নিজেদের কাছে রাখেন। সেই পুরনো রেকর্ড দেখে শ্রদ্ধার দাঁতের অবস্থার সঙ্গে মিল খুঁজে পাওয়া গেলে এই তদন্ত শেষ পর্যায়ে পৌঁছতে পারে।’’
Aaftab admits in court to murdering Shraddha in "heat of the moment"
— ANI Digital (@ani_digital) November 22, 2022
Read @ANI Story | https://t.co/y2CnGGMuHE#Shraddhamurdercase #AaftabPoonawala #Delhicourt #Delhimurder pic.twitter.com/ycvDa02U82
পুলিশের দাবি, বিভিন্ন যন্ত্রপাতির সাহায্যে শ্রদ্ধাকে খুন করেছিলেন আফতাব। যে দোকান থেকে তিনি এই যন্ত্রপাতিগুলি কিনেছিলেন, তদন্ত চলাকালীন আফতাবকে সেই দোকানেও নিয়ে যায় পুলিশ। পুলিশ জানায়, শ্রদ্ধা এবং আফতাব যে ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকতেন, তার থেকে প্রায় ৭ থেকে ১০ মিনিট দূরত্বে ওই দোকানটি রয়েছে। দোকানের মালিক জানান, আফতাব হাতুড়ি, করাত, পেরেক-সহ আরও অনেক জিনিস দোকান থেকে কিনেছিলেন। তদন্ত চলাকালীন আফতাবকে দোকানে নিয়ে গেলে আফতাব জানান, ১৮ মে তিনি ওই দোকান থেকে জিনিস কেনেন। দোকানের মালিককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তিনি বলেন, ‘‘আমার দোকানে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো রয়েছে। কিন্তু তাতে পুরনো কিছুর রেকর্ড পাওয়া যাবে না।’’
প্রসঙ্গত, শ্রদ্ধাকে খুন করে তাঁর দেহ টুকরো টুকরো করে মেহরৌলীর জঙ্গলে ছড়িয়ে দিয়ে এসেছিলেন বলে পুলিশকে জানিয়েছেন আফতাব। দিল্লি পুলিশ তাঁর সেই স্বীকারোক্তির উপর ভিত্তি করে ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট জঙ্গলে তিন বার তল্লাশি চালিয়েছে। আফতাবকে নিয়ে গিয়েও চলেছে শ্রদ্ধার দেহাংশের অনুসন্ধান।